ডেভিড কপারফিল্ড- চার্লস ডিকেন্স

ডেভিড কপারফিল্ড
ডেভিড কপারফিল্ড 

ডেভিড কপারফিল্ড
চার্লস ডিকেন্স
রূপান্তর: আখতারুজ্জামান ইলিয়াস

আমার বাবাকে আমি কখনো দেখিনি। আমার জন্মের ছয় মাস আগে আমার বাবার চোখ থেকে এই পৃথিবীর আলো চিরকালের জন্য মুছে গিয়েছিল, তিনিও আমাকে দেখেননি।

আমি থাকতাম আমার মায়ের সঙ্গে। মা হালকা গড়নের মহিলা, আমার এক দাদি তাঁকে বলতেন মোমের পুতুল। মার স্বভাবটিও কোমল প্রকৃতির, তিনি কখনো রাগ করতে পারতেন না। আমাদের বাড়িতে কাজ করত পেগোটি বলে একটি মেয়ে, ওর সঙ্গেও মাকে কোনোদিন উঁচু গলায় কথা বলতে শুনিনি। পেগোটি থাকত আমাদের পরিবারের একজন হয়ে, আমাদের খেলাধুলা সব একসঙ্গে, খাওয়াদাওয়াও একসঙ্গে, একই টেবিলে। পড়াশোনা আমি করতাম মায়ের কাছেই, মায়ের কাছে লেখাপড়ার ব্যাপারটা খেলাধুলার মতোই ভালো লাগত। মা আর পেগোটির সঙ্গে আমার বেশ ভালোই কাটছিল।

আমার এই ছিমছাম সুখের জীবনে প্রথম ধাক্কা আসে আমার আট বছর বয়সে। মা একদিন ফের বিয়ে করলেন। আমার সৎ বাবা মার্ডস্টোন সাহেব দশাসই পুরুষ, তাঁর মস্ত জুলফি, পুরু গোঁফ এবং জোড়া ভুরু। তাঁকে দেখে প্রথম থেকেই আমার ঠিক নিজের লোক বলে মনে হয়নি। এর ওপর আমাদের সঙ্গে স্থায়ীভাবে বাস করতে এলেন তাঁর বোন। ভাইবোনের চেহারায় খুব মিল, গলার স্বরও প্রায় একই রকম। ভাইবোনের স্বভাবও একইরকম- যেমন মার্ডস্টোন সাহেব তেমনি তাঁর বোন-দুজনেই কড়া মেজাজের মানুষ, ছোটো ছোটো ছেলেমেয়েদের দুষ্টুমি তাঁরা বরদাশত করতে পারতেন না, আসার পর থেকেই আমার কথাবার্তায়, আদব-কায়দায় খুঁত বার করার জন্য একেবারে হন্যে হয়ে উঠলেন।

এমনকি আমার লেখাপড়া শেখাবার কাজটিও মার্ডস্টোন সায়েব নিজের হাতে নেওয়ার জন্য উৎসাহী হয়ে উঠলেন। আমি কিন্তু কোনো ব্যাপারেই তাঁর কাছে ঘেঁষতে চাইতাম না, পড়াশোনা করে পড়া দিতে যেতাম মাকেই। কোথাও আটকে গেলে মা আদর করে বলতেন, ‘বাবা ডেভি, মনে করতে পারছ না? একটুখানি চেষ্টা করে দেখো তো।’

মার্ডস্টোন সাহেব কর্কশ গলায় বলতেন, ‘আহ্। ক্লারা, ওভাবে বললে হবে না।’

মার্ডস্টোন সাহেবের বোনও একই রকম কন্ঠে ভাইয়ের সমর্থনে এগিয়ে আসতেন, ‘সোজা বলে দাও, পড়া মুখস্থ করে আসুক।’

এখন তাদের মুখের ওপর কিছু বলা আমার মায়ের সাধ্যে কুলায় না। আমি আবার বই নিয়ে বসি। কিন্তু মুশকিল হলো এই যে, মায়ের কোল ঘেঁষে বসে যে কাজটি আমি পানির মতো সহজ করে বুঝতে পারি, যে পড়া অবলীলায় বলে যাই, মার্ডস্টোন সাহেব কি তাঁর বোন সামনে থাকলে সেটি আর হয়ে ওঠে না। মার্ডস্টোন সাহেব জিজ্ঞেস করলে আমার জানা অঙ্ক ভুল হয়, মুখস্থ পড়া ভুলে যাই।

ঠিকমতো পড়া দিতে পারলেও তাঁদের মন পাওয়া যায় না, মার্ডস্টোন সাহেব এমন সব কঠিন অঙ্ক কষতে দিতেন যে আমার একেবারে ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা হতো। তাঁদের এড়িয়ে চলার জন্য আমি গিয়ে ঢুকতাম আমার ঘরের লাগোয়া ছোটো ঘরে, এখানে আমার বাবার কয়েকটি বই স্তূপ করে রাখা ছিল, তাঁর মৃত্যুর পর থেকে এসব কেউ ছুঁয়েও দেখত না। এখানে একা একা বসে আমি ‘রডারিক র‍্যানডম’, ‘টম জোনস’, ‘দি ভিকার অফ ওয়েকফিল্ড’, ‘ডন কুইকসোট’, ‘রবিনসন ক্রুসো’, ‘আরব্য রজনী’-এসব বইপত্র পড়তাম। কিন্তু মার্ডস্টোন সাহেবের হাত থেকে তবু আমার রেহাই নেই। আর আমার এমন অবস্থা যে তাঁর হাতে পড়লেই পড়া আর বলতে পারি না।

একদিন এমনি কী ভুল হয়ে গেল, মার্ডস্টোন সাহেব আমার ঘরে ঢুকলেন হাতে বেত নাচাতে নাচাতে। পেছনে তাঁর বোন। প্রায় ফৌজি কায়দায় দুজনকে ঢুকতে দেখে মা ভয়ে কাঁপছিলেন। আমার ওপর হঠাৎ করে বেতের বাড়ি পড়তে শুরু করলে আমি চিৎকার করে বললাম, 'পায়ে পড়ি, মারবেন না, মারবেন না। আমি তো আজ সারাদিন ধরে পড়লাম, আপনাদের দুজনকে দেখেই সব ভুলে গিয়েছি, আপনাদের দেখলেই আমার জানা পড়া গুলিয়ে ফেলি।'

‘তাই?’ বাজখাঁই গলায় মার্ডস্টোন সাহেব বললেন, ‘সব গুলিয়ে ফেলো, না? দেখি কি করে মনে রাখতে পারো, সেই ব্যবস্থা করি।’

আমার মাথাটা তিনি আঁকড়ে ধরতে চাইছিলেন, কিন্তু আমি মাথা গলিয়ে তাঁর হাত থেকে মুক্ত হলে তিনি আমার মুখ চেপে ধরে পিঠে সপাং সপাং করে বেতের কয়েকটা ঘা মারলেন, আমি আর সহ্য করতে না পেরে আমার মুখে চেপে ধরা তাঁর হাতের বুড়ো আঙুলে এ্যায়সা জোরে এক কামড় বসিয়ে দিলাম যে যন্ত্রণায় তিনি একেবারে চিৎকার করে উঠলেন। তারপর নিজেকে একটু সামলে নিয়ে তিনি শুরু করলেন তাঁর আসল মার, বেতের মুহুর্মুহু আঘাতে আমার শরীর একেবারে ছিঁড়ে ছিঁড়ে যাচ্ছিল। ভাবলাম আজ আমি একেবারে মরেই যাব। মারতে মারতে মার্ডস্টোন সাহেবও ক্লান্ত হয়ে পড়েন। আমার ঘরে আমাকে ঠেলে বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে দেওয়া হলো। অন্ধকার গাঢ় হয়ে এল, কিন্তু ঘরে আমার একটি বাতিও জ্বলল না। এর মধ্যে মিস মার্ডস্টোন রুটি আর কয়েক টুকরো গোশত দিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু অন্ধকার হওয়ার পর আর কেউ এল না। আমি একা একাই ঘুমিয়ে পড়লাম। এইভাবে পাঁচদিন কাটল, আমার মনে হলো, মার্ডস্টোন সাহেবের হাত কামড়ে দিয়ে আমি বোধহয় ভয়ানক একটি অপরাধ করে ফেলেছি। আমার মা একদিনও এলেন না, তাঁকে পেলেও না হয় আমি মাফ চাইতে পারতাম।

পেগোটি আমাকে চুপচুপ করে খবর দিয়ে যায় যে, লন্ডনের একটি আবাসিক স্কুলে আমাকে ভর্তি করার আয়োজন চলছে। দেখতে দেখতে আমার বিদায় নেওয়ার সময় ঘনিয়ে এল। আমি বিদায় নেওয়ার সময় মার গলা বেশ ভারী হয়ে আসছিল। এতে মার্ডস্টোন সাহেব এবং তাঁর বোন দুজনেই খুব বিরক্ত। আমার জন্যে মা যে একটু প্রাণ খুলে কাঁদবেন এঁরা সে অধিকারটুকুও তাঁকে দিতে রাজি নন।

ঘোড়ার গাড়ি যাত্রা শুরু করল। পকেট থেকে রুমাল বের করে আমি চোখে চেপে ধরলাম, কিছুক্ষণের মধ্যে দেখি তা ভিজে একেবারে চপচপে হয়ে গেছে। আধমাইল পথ পেরিয়ে গাড়িটা একটু থামে, থামতে না থামতে পথের ধারে ঝোপ থেকে ছুটে বেরিয়ে আসে পেগোটি। এক লাফে গাড়িতে উঠে সে আমাকে জড়িয়ে ধরল। বাড়িতে আমাকে আদর করা দূরে থাক, বেচারি কথা বলার সুযোগটা পর্যন্ত পায় না। আমাকে ছেড়ে দিয়ে একটি কাগজের টুকরো আমার হাতে তুলে দিয়ে আর একবার সে আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরল। তারপর গাড়ি থেকে নামবার আগে গাড়িতে একটি ব্যাগ রেখে দিল।

গাড়ি ফের গড়িয়ে চলতে শুরু করলে আমি ব্যাগটা খুলে দেখি এক টুকরো কাগজে আমার মার লেখা, 'ডেভিকে অনেক আদর ও ভালোবাসা।' কাগজটির সঙ্গে কয়েকটি টাকা।

কিছুক্ষণ পর একই এক্কাগাড়ি থেকে নেমে উঠতে হলো লন্ডনগামী কোচে। বিকাল তিনটেয় ঘোড়ায় টানা সেই কোচ ছাড়ল, লন্ডন পৌঁছবার কথা সকাল আটটায়। কোচে রাত্রিটা কিন্তু তেমন আরামে কাটেনি। দুইপাশে দুজন ভদ্রলোক ঘুমোতে শুরু করলেন, আমার দুই ঘাড় হলো তাঁদের দুজনের বালিশ। আমার অবস্থা একেবারে শোচনীয়।

শেষ পর্যন্ত সূর্য উঠল। আমার দুই দিকের দুই সহযাত্রীর ঘুম ভাঙল। কিছুক্ষণ পর দূর থেকে লন্ডন শহর দেখে আমার যে শিহরন হলো তা আমি বুঝিয়ে বলতে পারব না। এই আমাদের স্বপ্নের লন্ডন শহর। সঙ্গে সঙ্গে মনে হলো, এখানে আমি একেবারে একা। রবিনসন ক্রুসোর চাইতেও একা। রবিনসন ক্রুসো যে একা তা তো আর কেউ দেখেনি, আর এই জনাকীর্ণ শহরে আমার একাকিত্ব যেন সকলের চোখে পড়ছে।

নানারকম ঝামেলার পর এক ভদ্রলোকের সঙ্গে আমার দেখা হলো। তিনি আমার দিকে এগিয়ে আসছিলেন। ‘তুমিই তো নতুন এলে?’ আমার দিকে তিনি হাত বাড়িয়ে দিলেন। বললেন, ‘এসো, আমি সালেম হাউসের শিক্ষক।’ আমি জানি যে সালেম হাউসে আমাকে ভর্তি করা হয়েছে। কিন্তু ওই স্কুলের এই শিক্ষকের চেহারা একটুও আকর্ষণীয় নয়। দেখতে তিনি বড়ো রোগা, গায়ের রং ফ্যাকাশে, তাঁর পোশাকও বিবর্ণ, প্যান্টের ঝুল ও শার্টের হাতা বেশ খাটো। আমার হাত ধরে তিনি চলতে শুরু করলেন। এদিকে আমার তখন খুব খিদে পেয়েছে, শরীর বেজায় ক্লান্ত। খিদের কথা বলতে আমার বাধো-বাধো ঠেকছিল, তবে আমার নতুন শিক্ষকের চেহারা দেখে ভয় পাবার কিছু নেই। আমি বললাম, ‘কাল দুপুরের পর থেকে কিছু খাইনি।’ আরো সাহস করে বললাম, ‘কিছু কিনে খেলে ভালো হতো।’ তিনি রাজি হলে একটা দোকান থেকে ডিম আর মাংস কিনে নিলাম। এখন এগুলো খাব কী করে? আমার নতুন শিক্ষক একটি ঘোড়ার গাড়িতে করে কোথায় যে নিয়ে চললেন আমি ঠিক বুঝতেও পারছিলাম না। রাস্তায় সাংঘাতিক কোলাহল, হইচই, এইসব আওয়াজে আমার মাথায় জট পাকিয়ে যাচ্ছিল, লন্ডন ব্রিজ পেরোবার সময় ঘুমে আমার চোখ জড়িয়ে আসছিল। কিছুক্ষণ চলবার পর শিক্ষক আমাকে নিয়ে নামলেন। তাঁর সঙ্গে আমি যে ছোটো ঘরটিতে ঢুকলাম সেটি বেশ গরিব কোনো মানুষের বাসস্থান, দেখেই বোঝা যায় এটা কোনো অনাথ আশ্রমের অংশ। আবার একটি পাথরে খোদাই করা রয়েছে, ‘পঁচিশ জন দরিদ্র রমণীর জন্য প্রতিষ্ঠিত।’

ছোটো স্যাঁতসেতে ঘরটিতে ঢুকতেই বৃদ্ধা এক মহিলা খুশিতে ডেকে উঠলেন, ‘বাবা চার্লি।’ কিন্তু আমার দিকে তাঁর চোখ পড়তেই একটু থতমত খেয়ে চুপ করলেন। নতুন শিক্ষক তাঁর হাতে ডিম দিলে সসপ্যানে সেটা ভেজে দিলেন, মাংসের টুকরো সেদ্ধ করে দিলেন। আমি তো তখন ক্ষুধার্ত, গোগ্রাসে ওইসব খাচ্ছি তো শুনি যে বৃদ্ধা মহিলা শিক্ষককে বলছেন, ‘বাঁশিটা সঙ্গে থাকলে একটু বাজাও না।’

কোটের ভেতর হাত দিয়ে শিক্ষক বাঁশির তিনটে টুকরা বের করলেন, টুকরাগুলো জোড়া দিয়ে সম্পূর্ণ বাঁশি ঠিক করে নিয়ে তিনি বাজাতে শুরু করলেন।

তিনি কী সুর বাজালেন আমি জানি না, কেমন বাজিয়েছেন তাও বুঝিনি, কিন্তু তাঁর বাঁশির তীব্র ধ্বনি আমার বুকে দারুণ প্রতিধ্বনি তুলল, আমার সমস্ত বেদনার কথা যেন খুঁড়ে ওপরে উঠে এল, আমার সব কষ্টের কথা মনে পড়ল, শেষপর্যন্ত চোখের পানি আর চেপে রাখতে পারলাম না। এর মধ্যে ওই মহিলা এবং আমার নতুন শিক্ষকের চেহারার মিল দেখে আমি বুঝতে পাচ্ছিলাম যে এঁরা মা এবং ছেলে। আমার শিক্ষকের মা এত গরিব কেন, দাতব্যভবনে বাস করেন কেন-এসব প্রশ্ন মনে একটু উঁকি দিলেও আমার সমস্ত মাথা জুড়ে তখন কেবল বাঁশির সুর। আমার আন্তে আস্তে ঘুম পেতে লাগল। যখন ঘুম ভাঙল, দেখি আমি ঘোড়ার গাড়িতে বসে রয়েছি, পাশে পায়ের ওপর আড়াআড়িভাবে আরেকটি পা রেখে বাঁশি বাজিয়ে চলেছেন আমার নতুন শিক্ষক। আমি ফের ঘুমিয়ে পড়ি।

গাড়ি থামলে স্যার আমাকে নিয়ে নিচে নামলেন। সামনে উঁচু দেওয়ালে মস্ত একটি বাড়ি, সাইনবোর্ডে বড়ো বড়ো করে লেখা ‘সালেম হাউস।’ এটাই তাহলে আমার নতুন স্কুল।

দরজায় কড়া নাড়লে শক্তসমর্থ একটি লোক বেরিয়ে আসে। ঘাড়টা ষাঁড়ের ঘাড়ের মতো মোটা, একটা পা কাঠের, ছোটো করে কাটা মাথার চুল। স্যার আমার সঙ্গে তার পরিচয় করিয়ে দিলে সে আমাকে ভালো করে দেখল। লোকটি ভেতর থেকে এক জোড়া জুতো এনে সামনে ফেলে দিতে দিতে বলল, ‘মেল সাহেব, মুচি আপনার জুতো ঠিক করতে চায় না। এটার মেরামত করার কিছু নেই, তালি দিতে দিতে একেবারে শেষ হয়ে গেছে।’

জুতোজোড়া হাতে আমার নতুন শিক্ষক মেল সাহেব ওপরে উঠতে লাগলেন, পিছে পিছে আমি। দোতলায় উঠে শেষ প্রান্তের ঘরে হাঁটছি, হঠাৎ চোখ পড়ল একটি বোর্ডের দিকে, বোর্ডে সুন্দর করে লেখা ‘সাবধান এটা কামড়ায়।’ আশেপাশে নিশ্চয় কোনো কুকুর আছে এবং সেটা অবশ্যই কামড়ায় এই ভেবে আমি থমকে দাঁড়ালাম।

মেল সাহেব পেছনে তাকিয়ে বললেন, ‘কী হলো?’

‘এখানে বোধ হয় কুকুর আছে স্যার।’ বোর্ডের দিকে তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি গম্ভীর গলায় বললেন, ‘কুকুর নয়, কপারফিল্ড। আমাকে বলা হয়েছে, ওই বোর্ডটা যেন তোমার পিঠের সঙ্গে আটকে দিই। এখানে এসে প্রথমেই তোমার মনটা খারাপ করে দিতে ইচ্ছে করছে না, কিন্তু এটা আমাকে করতেই হবে।’

আমার সৎ বাবার হাতের আঙুলে কামড় দিয়েছিলাম, সেই খবর তাহলে এখানেও পৌঁছে দেওয়া হয়েছে, তার শান্তি কি আমাকে পেতে হবে এভাবে? সত্যি, আমি একেবারে দমে গেলাম। ক্লাসের সহপাঠীরা আমার পিঠ দেখবে আর আমাকে নিয়ে যে কি ঠাট্টা বিদ্রূপ করবে ভাবতেই লজ্জায়, ভয়ে আমি একবোরে কুঁকড়ে যেতে লাগলাম।

স্কুলের মালিক এবং প্রধান ক্রিকল সাহেব আমাকে ডেকে পাঠালেন। তাঁর সুন্দর বৈঠকখানায় বসেছিলেন মিসেস ক্রিকল আর তাঁদের মেয়ে। এক কোণে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলাম কাঠের পা-ওয়ালা ওই লোকটিকে।

ক্রিকল সাহেবের মুখ টকটকে লাল, মনে হয় সবসময় সেখানে আগুন জ্বলছে, চোখজোড়া তাঁর ছোটো, কপালের রগগুলো সব স্পষ্ট দেখা যায়। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, ‘এর নামে কোনো রিপোর্ট আছে?’

‘না স্যার’, কাঠের পা-ওয়ালা জবাব দিল, ‘নতুন এসেছে, এখন পর্যন্ত তেমন কিছুই করার সুযোগ পায়নি।’ ‘এদিকে এসো।’ ক্রিকল সাহেব আমাকে এই আদেশ দিলে কাঠের পা-ওয়ালা বলে ওঠে, 'এদিকে এসো।' আমি তাঁর দিকে এগিয়ে এলে আমার কান ধরে ক্রিকল সাহেব বললেন, ‘তোমার সৎবাবাকে আমি চিনি, শক্ত স্বভাবের মানুষ। তা তিনিও আমাকে ভালো করেই চেনেন। তুমি আমাকে চেনো?’

‘না স্যার।’

‘চেনো না, না?’ আমার কানে একটা মোচড় দিয়ে তিনি বললেন, ‘চিনবে হে চিনবে।’

ক্রিকল সাহেবের এই ব্যবহারে আমার যতই খারাপ লাগুক, অনেক বেশি ভয় করতে লাগল স্কুল খুললে ছেলেদের আচরণটা কী হবে সেই ভাবনা করে। তো একদিন স্কুল খুলল, ছেলেরা হোস্টেলে এসে পড়ল। ছেলেরা যথারীতি আমার পেছনে লাগল, কারো পিঠে অমনি একটা বোর্ড সাঁটা থাকলে কিছু ঝক্কি তো তাকে পোয়াতে হবেই। তবে যা ভেবেছিলাম সে রকম ভয়াবহ গোছের কিছু ঘটল না। ‘সাবধান, এটা কামড়ায়’ বলতে বলতে ছেলেরা আমাকে খ্যাপাত, কেউ কেউ আঁতকে ওঠার ভান করত, আবার বুনো মানুষের মতো নাচতে নাচতে ‘কুকুর কুকুর’ বলে চিৎকারও করেছে। কিন্তু বেশির ভাগ ছেলেই তেমন উৎপাত করেনি। এর ওপর ক্রিকল সাহেব ক্লাসে একদিন আমাকে বেদম মারতে গিয়ে দেখলেন যে পিঠে সাঁটা ওই বোর্ডের জন্য বেতের বাড়ি ঠিক জুতমতো লাগানো যাচ্ছে না, তাই তিনি নিজেই ওটা খুলে ফেললেন।

তবে ছেলেদের উৎপাতের হাত থেকে বাঁচতে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছে আমাদের ক্লাসের একটি ছেলে। ওর নাম জে. স্টিরফোর্ড। আমার চেয়ে অনেক বছর বড়ো এই ছেলেটি দেখতে বেশ সুন্দর, ছাত্র হিসেবেও মেধাবী বলে তার বেশ নামডাক রয়েছে। তার প্রতি ক্রিকল সাহেবের একটু পক্ষপাতিত্বও লক্ষ করা যায়। তো এই ছেলেটি প্রথম থেকেই আমার সঙ্গে বেশ ভাব করে ফেলে। ‘রবিনসন ক্রুসো,’ ‘আরব্য রজনী,’ ‘ডন কুইকসোর্ট’-এসব বইয়ের গল্প আমি বেশ জমিয়ে বলতে পারতাম বলে ছেলেরা অনেকেই আমার পাশে ভিড় করত। স্টিরফোর্ড আর আমি রাত্রে পাশাপাশি বিছানায় ঘুমাতাম, ঘুমাবার আগে তাকে রোজ ওইসব গল্প বলে শোনাতে হতো। এমনিতে স্টিরফোর্ড আমাকে ভালোবাসত আর স্বয়ং ক্রিকল সাহেব তাকে সমীহ করতেন বলে কোনো ছেলে আমাকে ঘাঁটাতে সাহস পেত না। কিন্তু স্টিরফোর্ড কখনো কখনো বড্ডো নিষ্ঠুর হয়ে উঠত।

একদিন বিকালবেলার কথা আমার খুব মনে পড়ে। মেল সাহেবের ক্লাসে গোলমাল হচ্ছিল। মেল সাহেব এমনিতে নিরীহ গোছের মানুষ, সহজে বড়োগলা করে কথা বলতে পারতেন না। সেদিন আমি তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে পড়া দিচ্ছিলাম। ছেলেরা প্রায় সবাই নিজেদের মধ্যে কথা বলেই চলেছে, ক্লাসে যে একজন শিক্ষক আছেন তা বোঝাই যাচ্ছিল না। মেল সাহেবের সহ্যের বাঁধ ভেঙে গেল। তিনি হঠাৎ করে চিৎকার করে ধমক দিলেন, ‘চুপ। চুপ কর।’ তাঁর মুখে এরকম ধমক শুনতে অনভ্যস্ত ছেলেরা অবাক হয়ে চুপ করে গেল। শেষ সারিতে দেওয়ালে হেলান দিয়ে শিস দিচ্ছিল স্টিরফোর্ড, সে কিন্তু থামল না, শিস দিয়েই চলল। মেল সাহেব বললেন, ‘স্টিরফোর্ড, চুপ কর।’

‘আপনিই চুপ করুন।’ স্টিরফোর্ড পালটা ধমকের সুরে বলল, ‘জানেন আপনি চোখ রাঙিয়ে কথা বলছেন কার সঙ্গে?’

‘স্টিরফোর্ড, তুমি কি ভেবেছ তোমার বেয়াদবি আমি লক্ষ করিনি? ছোটো ছোটো ছেলেদের তুমি বারবার উসকে দিচ্ছ, আমি কি দেখছি না ভেবেছ?’ বলতে বলতে মেল সাহেবের ঠোঁটজোড়া কাঁপছিল, ‘সবাই জানে যে এখানে তোমার দিকে পক্ষপাতিত্ব করা হয়, সেই সুযোগ নিয়ে তুমি একজন ভদ্রলোককে এভাবে অপমান করতে সাহস পাও?’

‘দ্রলোক?’ স্টিরফোর্ড মহা বিস্মিত হবার ভান করে বলল, ‘ভদ্রলোকটি কোথায় বলুন তো?’

‘স্টিরফোর্ড, একজন হতভাগ্য মানুষকে এভাবে অপমান করে তুমি খুব ইতর ব্যবহার করলে। তুমি খুব অভদ্র আচরণ করলে, স্টিরফোর্ড।' বলতে বলতে মেল সাহেব আমার পিঠে আলতো করে চাপ দিয়ে বললেন, ‘কপার-ফিল্ড, পড়া বলে যাও।’

স্টিরফোর্ড বিদ্রূপের হাসি হেসে বলল, ‘শুনুন, একজন ভিখেরির মুখে এরকম কথা মোটেই মানায় না।’

হঠাৎ ঘরের ভেতর ক্রিকল সাহেবের ফ্যাসফেসে গলায় আওয়াজ গর্জে উঠল, ‘মেল সাহেব, কী হচ্ছে?’ মেল সাহেব চমকে উঠলেন। স্টিরফোর্ড বলল, ‘স্যার, আমার প্রতি নাকি এখানে পক্ষপাতিত্ব করা হয়-মেল সাহেবের এই কথায় আমি প্রতিবাদ করছিলাম।’

‘পক্ষপাতিত্ব?’ ফ্যাসফেসে গলায় যতটা সম্ভব হুংকার ছেড়ে ক্রিকল সাহেব বললেন, ‘আমার স্কুলে পক্ষপাতিত্বের বদনাম? আপনি কী বলতে চান মেল সাহেব?’

মেল সাহেব মাথা নিচু করে বললেন, ‘আমি খুব উত্তেজিত হয়ে বলেছি, স্যার, ঠান্ডা মাথায় থাকলে ও-রকম কথা বলতাম না।’

মেল সাহেব বিনীত হলেও স্টিরফোর্ডের উত্তেজনা কিন্তু বেড়েই চলে, সে বলে, ‘স্যার, আমাকে ইতর বলা হয়েছে, অভদ্র বলা হয়েছে, তাই আমি রেগে গিয়ে তাঁকে ভিখেরি বলেছি।’

মেল সাহেব আমার পিঠে আস্তে আস্তে হাতের চাপ দিয়েই চলেছেন, তিনি যেন আমার কাছে আশ্রয় চাইছিলেন।

ক্রিকল সাহেব বললেন, ‘ভিখারি? মেল সাহেব ভিক্ষে করেন কোথায়?’

‘তিনি ভিক্ষে না-করলেও তাঁর নিকট আত্মীয় তো করেন, একই হলো।’ বলতে বলতে স্টিরফোর্ড আমার দিকে তাকায়। মেল সাহেব তখনো আমার ঘাড়ে হাত রেখে আস্তে আস্তে চাপ দিচ্ছেন। লজ্জায়, অনুতাপে, আফসোসে আমি মাথা নিচু করে থাকি, আমিই একদিন কথায় কথায় মেল সাহেবের মায়ের গল্প করেছিলাম, তিনি যে দাতব্য আলয়ে বাস করেন সে কথাটিও বলা হয়ে গিয়েছিল। আমার চোখ নিচের দিকে, মেল সাহেব কিন্তু আমার ঘাড়ে আদর করে আন্তে আন্তে চাপ দিয়েই চলেছেন। এর মধ্যে স্টিরফোর্ড বলেই ফেলল, ‘মেল সাহেবের মা দাতব্য আলয়ে অন্যের খয়রাতের ওপর বেঁচে থাকেন।’ মেল সাহেব তখন ওই সুন্দর বালকটির মুখের দিকে তাকিয়ে রইলেন। অনেক কষ্টে ক্রিকল সাহেব উত্তেজনা চেপে রেখে বললেন, 'আমার এই প্রতিষ্ঠানে তো এরকম লোককে থাকতে দেওয়া যায় না।' ক্রিকল সাহেবের কপালের রগ দপ করে ফুলে উঠল, তিনি বললেন, ‘আপনি কি এটা একটা দাতব্য স্কুল ভেবেছেন? আপনি যত তাড়াতাড়ি পারেন এখান থেকে অব্যাহতি নিয়ে চলে গিয়ে আমাদের অপমান থেকে অব্যাহতি দিন।’

মেল সাহেব সঙ্গে সঙ্গে বললেন, ‘আমি এক্ষুনি চলে যাচ্ছি। আর সময় নেই।’

তাঁর সমস্ত সম্বল যা ছিল, কয়েকটি বই এবং তাঁর বাঁশিটি নিয়ে মেল সাহেব আমাদের স্কুল থেকে চলে গেলেন।

ওই রাত্রেও স্টিরফোর্ডকে গল্প শোনাতে শোনাতে আমি মেল সাহেবের বাঁশির বিষণ্ণ সুর শুনতে পাচ্ছিলাম। রাত অনেক হলে স্টিরফোর্ড ঘুমিয়ে পড়ল। বিছানায় শুয়ে শুয়ে আমি যেন শুনতে পাচ্ছিলাম যে এখান থেকে অনেক দূরে, অন্য কোথাও বসে মেল সাহেব যেন বিষাদাচ্ছন্ন সুরে এক নাগাড়ে বাঁশি বাজিয়েই চলেছেন। আমি খুব অসহায় বোধ করছিলাম।

(সংক্ষেপিত)

উৎস নির্দেশ :
‘ডেভিড কপারফিল্ড’ গল্পটি চার্লস ডিকেন্সের ‘ডেভিড কপারফিল্ড’ উপন্যাসের প্রথম অংশের ভাবানুবাদমূলক সংক্ষিপ্ত রূপ।

শব্দার্থ ও টীকা :
➠ জুলফি- কানের পাশ দিয়ে গালের ওপর এলিয়ে পড়া চুল।
➠ বরদাশত- সহ্য।
➠ ‘রডারিক র‍্যানডম’- টবিয়াস স্মলেট রচিত রোমাঞ্চ-উপন্যাস।
➠ ‘টম জোনস’- হেনরি ফিল্ডিংসের লেখা উপন্যাস।
➠ ‘দি ভিকার অফ ওয়েকফিল্ড’- অলিভার গোল্ডস্মিথের বিখ্যাত উপন্যাস।
➠ ‘ডন কুইকসোর্ট’- স্পেনীয় লেখক সার্বেন্তেজের লেখা উপন্যাস।
➠ ‘রবিনসন ক্রুসো’- ড্যানিয়েল ডিফোর লেখা উপন্যাস।
➠ ‘আরব্য রজনী’- আরবীয় লোকগাঁথার বই।
➠ বাজখাঁই- কর্কশ।
➠ এ্যায়সা- এমন।
➠ মুহুর্মুহু- একনাগাড়ে।
➠ এক্কাগাড়ি- দুই চাকা বিশিষ্ট ঘোড়ার গাড়ি।
➠ জনাকীর্ণ- জনবহুল, বহুলোক আছে এমন।
➠ সসপ্যান- কড়াই। ইংরেজি Saucepan.
➠ গোগ্রাসে- তাড়াহুড়া করে। গরুর মতো একত্রে অধিকপরিমাণ খাদ্য গলাধঃকরণ।
➠ ঠাট্টা-বিদ্রূপ- হাসি-তামাশা।
➠ রিপোর্ট- প্রতিবেদন, বিবরণ। এখানে অভিযোগ অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।
➠ ঝক্কি- ঝামেলা, বিপদ।
➠ হুঙ্কার- গর্জন।
➠ খয়রাত- দান।
➠ সম্বল- অবলম্বন।
➠ বিষাদাচ্ছন্ন- বিষণ্ণতায় ছেয়ে গেছে এমন।

পাঠ-পরিচিতি ও মূলভাব :
‘ডেভিড কপারফিল্ড’ গল্পটি এক বালকের জীবনের করুণ গল্প। মাত্র ছয় মাস বয়সে ডেভিড তার বাবাকে হারায়। ছোটোবেলা থেকেই ডেভিড ছিল অনুভূতি ও কল্পনাপ্রবণ। তার মায়ের নাম ছিল ক্লারা। বাবার মৃত্যুর পর মায়ের সঙ্গে ভালোই যাচ্ছিল ডেভিডের দিনগুলো, কিন্তু আটবছর বয়সে জীবনে নেমে এল নিপীড়ন। মা ক্লারা বিয়ে করলেন নিষ্ঠুর স্বভাবের ব্যক্তি মার্ডস্টোনকে। তার বোন মিস মার্ডস্টোনও বদমেজাজি। বিনা কারণে ডেভিডের ওপর রুষ্ট ছিলেন তার সৎবাবা ও মিস মার্ডস্টোন। মা ও কাজের মেয়ে পেগোটিই ছিল ডেভিডের ভালোবাসার মানুষ। ডেভিডকে লন্ডনের এক আবাসিক স্কুলে ভর্তির জন্য পাঠানো হলে সেখানেও সে নিপীড়নের সম্মুখীন হয়। তবে সেই জীবনে হৃদয়বান মানুষেরও দেখা পেল সে। তার ভালো লাগল নিরীহ ধরনের শিক্ষক মেল সাহেবকে। কিন্তু সে মেল সাহেবও টিকতে পারলেন না মানুষের মন্দ স্বভাবের জন্য।
ডেভিডের জীবন থেকে বোঝা যায়, ধৈর্য ও সংগ্রামশীলতার মধ্য দিয়েই মানুষকে টিকে থাকতে হয়।

লেখক পরিচিতি :
চার্লস ডিকেন্সের পুরো নাম চার্লস জন হাফ্যাম ডিকেন্স। তিনি উনিশ শতকের শক্তিমান ইংরেজ ঔপন্যাসিক। তাঁর জন্ম ১৮১২ খ্রিষ্টাব্দে ইংল্যান্ডের পোর্টসমাউথে। ডিকেন্স তার জীবদ্দশায়ই পূর্বসূরি লেখকদের তুলনায় অনেক জনপ্রিয়তা ও খ্যাতি অর্জন করেন। মৃত্যুর পরও সারা পৃথিবীতে তাঁর জনপ্রিয়তা অক্ষুন্ন আছে। চার্লস ডিকেন্সের উল্লেখযোগ্য উপন্যাস হচ্ছে ‘অলিভার টুইস্ট’, ‘অ্যা টেল অফ টু সিটিজ’, ‘ডেভিড কপারফিল্ড’, ‘গ্রেট এক্সপেক্টেশন্স’, ‘হার্ড টাইমস’ প্রভৃতি। গভীর জীবনানুভূতি, বাস্তবতাবোধ ও মানবিকতা তাঁর রচনার প্রধান বৈশিষ্ট্য। তিনি ১৮৭০ খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন।

রূপান্তরকারী-পরিচিতি :
আখতারুজ্জামান ইলিয়াস সমকালীন বাংলা কথাসাহিত্যে গুরুত্বপূর্ণ নাম। তাঁর জন্ম ১৯৪৩ খ্রিষ্টাব্দে গাইবান্ধা জেলায়। ‘চিলেকোঠার সেপাই’ ও ‘খোয়াবনামা’ উপন্যাস এবং ‘অন্যঘরে অন্যস্বর’, ‘দুধভাতে উৎপাত’, ‘দোজখের ওম’ প্রভৃতি তাঁর ছোটোগল্প-গ্রন্থ। সাহিত্যে অবদানের জন্য তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কারসহ দেশে-বিদেশে নানা গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কার ও একুশে পদক লাভ করেন। ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

তথ্যসূত্র :
১. আনন্দপাঠ: অষ্টশ শ্রেণি, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, ঢাকা, ২০২৫।
২.
৩. আধুনিক বাংলা অভিধান: বাংলা একাডেমি, এপ্রিল, ২০১৮।
৪. ব্যবহারিক বাংলা অভিধান: বাংলা একাডেমি, ১৮তম, ২০১৫।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url