বাবুরের মহত্ত্ব- কালিদাস রায়

বাবুরের মহত্ত্ব
বাবুরের মহত্ত্ব

বাবুরের মহত্ত্ব
কালিদাস রায়

পাঠান-বাদশা লোদি
পানিপথে হত। দখল করিয়া দিল্লির শাহিগণি,
দেখিল বাবুর এ-জয় তাঁহার ফাঁকি,
ভারত যাদের তাদেরি জিনিতে এখনো রয়েছে বাকি।
গর্জিয়া উঠিল সংগ্রাম সিং, ‘জিনেছ মুসলমান,
জয়ী বলিব না এ দেহে রহিতে প্রাণ।
লয়ে লুণ্ঠিত ধন
দেশে ফিরে যাও, নতুবা মুঘল, রাজপুতে দাও রণ।’
খানুয়ার প্রান্তরে
সেই সিংহেরো পতন হইল বীর বাবুরের করে।
এ বিজয় তার স্বপ্ন-অতীত, যেন বা দৈব বলে
সারা উত্তর ভারত আসিল বিজয়ীর করতলে।
কবরে শায়িত কৃতঘ্ন দৌলত,
বাবুরের আর নাই কোনো প্রতিরোধ।
দস্যুর মতো তুষ্ট না হয়ে লুণ্ঠিত সম্পদে,
জাঁকিয়া বসেছে মুঘল সিংহ দিল্লির মসনদে।
মাটির দখলই খাঁটি জয় নয় বুঝেছে বিজয়ী বীর,
বিজিতের হৃদি দখল করিবে এখন করেছে স্থির।
প্রজারঞ্জনে বাবুর দিয়াছে মন,
হিন্দুর-হৃদি জিনিবার লাগি করিতেছে সুশাসন,
ধরিয়া ছদ্মবেশ
ঘুরি পথে পথে খুঁজিয়ে প্রজার কোথায় দুঃখ ক্লেশ।
চিতোরের এক তরুণ যোদ্ধা রণবীর চৌহান
করিতেছে আজি বাবুরের সদ্ধান,
কুর্তার তলে কৃপাণ লুকায়ে ঘুরিছে সে পথে পথে
দেখা যদি তার পায় আজি কোনো মতে
লইবে তাহার প্রাণ,
শোণিতে তাহার ক্ষালিত করিবে চিতোরের অপমান।
দাঁড়ায়ে যুবক দিল্লির পথ-পাশে
লক্ষ করিছে জনতার মাঝে কেবা যায় কেবা আসে।
হেন কালে এক মত হস্তী ছুটিল পথের পরে
পথ ছাড়ি সবে পলাইয়া গেল ডরে।
সকলেই গেল সরি
কেবল একটি শিশু রাজপথে রহিল ধুলায় পড়ি।
হাতির পায়ের চাপে
‘গেল গেল’ বলি হায় হায় করি পথিকেরা ভয়ে কাঁপে।
‘কুড়াইয়া আন ওরে’
সকলেই বলে অখচ কেহ না আগায় সাহস করে।
সহসা একটি বিদেশি পুরুষ ভিড় ঠেলে যায় ছুটে,
‘কর কী কর কী’ বলিয়া জনতা চিৎকার করি উঠে।
করী-শুণ্ডের ঘর্ষণ দেহে সহি
পথের শিশুরে কুড়ায়ে বক্ষে বহি
ফিরিয়া আসিল বীর।
চারি পাশে তার জমিল লোকের ভিড়।
বলিয়া উঠিল এক জন, ‘আরে এ যে মেথরের ছেলে,
ইহার জন্য বে-আকুফ তুমি তাজা প্রাণ দিতে গেলে?
খুদার দয়ায় পেয়েছ নিজের জান,
ফেলে দিয়ে ওরে এখন করগে স্নান।’
শিশুর জননী ছেলে ফিরে পেয়ে বুকে
বক্ষে চাপিয়া চুমু দেয় তার মুখে।
বিদেশি পুরুষে রাজপুত বীর চিনিল নিকটে এসে,
এ যে বাদশাহ স্বয়ং বাবুর পর্যটকের বেশে।
ভাবিতে লাগিল, ‘হরিতে ইহারই প্রাণ
পথে পথে আমি করিতেছি সন্ধান?’
বাবুরের পায়ে পড়ি সে তখন লুটে
কহিল সঁপিয়া গুণ্ড কৃপাণ বাবুরের করপুটে,-
‘জাঁহাপনা, এই ছুরিখানা দিয়ে আপনার প্রাণবধ
করিতে আসিয়া একি দেখিলাম! ভারতের রাজপদ
সাজে আপনারে, অন্য কারেও নয়।’
বীরভোগ্যা এ বসুধা এ কথা সবাই কয়,
ভারতভূমির যোগ্য পালক যেবা,
তাহারে ছাড়িয়া, এ ভূমি অন্য কাহারে করিবে সেবা?
কেটেছে আমার প্রতিহিংসার অন্ধ মোহের ঘোর,
সঁপিনু জীবন, করুন এখন দণ্ডবিধান মোর।’
রাজপথ হতে উঠায়ে যুবকটিরে
কহিল বাবুর ধীরে,
‘বড়ই কঠিন জীবন দেওয়া যে জীবন নেওয়ার চেয়ে;
জান না কি ভাই? ধন্য হলাম আজিকে তোমারে পেয়ে
আজি হতে মোর শরীর রক্ষী হও;
প্রাণরক্ষকই হইলে আমার, প্রাণের ঘাতক নও।’
‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতার উৎস নির্দেশ :
‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতাটি কালিদাস রায়ের ‘পর্ণপুট’ কাব্যগ্রহ থেকে সংকলিত।

‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতার শব্দার্থ ও টীকা :
➠ বাবুর- ভারতের মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা সম্রাট। তাঁর আসল নাম জহিরউদ্দিন মুহাম্মদ। তবে তিনি ‘বাবুর’ বা ‘সিংহ’ নামেই সমধিক পরিচিত। তিনি মাত্র ১১ বছর বয়সে মধ্য-এশিয়ার সমরখন্দের সিংহাসনে আরোহণ করেন এবং অল্প বয়সেই দু’বার সিংহাসন হারান। তারপর তিনি নিজ দেশ ছেড়ে আফগানিস্থানের সিংহাসন অধিকার করেন এবং পরে ভারতের ইব্রাহিম লোদিকে পরাজিত করে দিল্লি অধিকার করেন। মেবারের রাজা সংগ্রাম সিংহকে তিনি পরাজিত করেন। এভাবে এক বিশাল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। তুজুক-ই-বাবরি হলো তাঁর আত্মজীবনী। তিনি ১৪ই ফেব্রুয়ারি, ১৪৮৩ সালে জন্মগ্রহণ আর ২৬শে ডিসেম্বর, ১৫৩০ সালে মৃত্যুবরণ করেন। তখন তাঁর বয়স ছিলো ৪৭ বছর।
➠ মহত্ত্ব- মহানুভবতা।
পাঠান বাদশা লোদি- ভারতের লোদি বংশীয় শেষ পাঠান-সম্রাট সুলতান ইব্রাহিম লোদি।
➠ পানিপথ- দিল্লির উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত ইতিহাস প্রসিদ্ধ যুদ্ধক্ষেত্র। হরিয়ানা রাজ্যের একটি প্রাচীন জেলা শহর। ১৫২৬ খ্রিষ্টাব্দের ২১শে এপ্রিল ইব্রাহিম লোদি ও মুঘল সম্রাট বাবরের মধ্যে যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল যা পানিপথের প্রথমযুদ্ধ নামে অধিক পরিচিত। এখানে আরো দুইটি প্রসিদ্ধ যুদ্ধ অনুষ্ঠিত হয়।

➠ হত- নিহত।
➠ শাহিগদি- বাদশার গদি, সিংহাসন।
➠ জিনিতে- জয় করতে।
➠ রহিতে- থাকতে।
➠ লয়ে- নিয়ে।
➠ রণ- যুদ্ধ।
➠ প্রাম্ভর- বিস্তৃত মাঠ, ময়দান।
➠ পতন- পরাজিত।
➠ করে- হাতে।
স্বপ্ন-অতীত- স্বপ্নের অতীত, যা স্বপ্নেও দেখা যায় না, অবিশ্বাস্য, অক্ষমনীয়।
দৈব বলে- অলৌকিক শক্তিতে।
➠ করতল- হাতের তালু।
➠ প্রতিরোধ- বাধা।
➠ তুষ্ট- তৃপ্ত, আনন্দিত, খুশি।
➠ লুণ্ঠিত- অন্যায়ভাবে আত্মসাৎ করা।
➠ মসনদ- সিংহাসন, রাজাসন।
করী-শুড়- হাতির শুড়।
বে-আকুফ- নির্বোধ।
➠ পর্যটক- ভ্রমণকারী।
➠ কৃপাণ- ছোট তরবারি, খড়া
➠ বসুধা- পৃষ্ঠিবী।
➠ ঘাতক- হত্যাকারী।
দণ্ডবিধান- শাস্তি প্রদান।
সংগ্রাম সিংহ- রাজপুতানার অন্তর্গত মেবার রাজ্যের অধিপতি রাজা সংগ্রাম সিংহ। তিনি খানুয়ার প্রান্তরে বাবুরের কাছে পরাজিত হন।
খানুয়ার প্রান্তর- অগ্রার পশ্চিমে অবস্থিত যুদ্ধক্ষেত্র।
কৃতঘ্ন দৌলত- বাবুরের ভারত আক্রমণকালে দৌলত খাঁ লোদি পাঞ্জাবের শাসক ছিলেন। তিনি নিজের দুশমন ইব্রাহিম লোদির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে বাবুরকে ভারত আক্রমণের জন্য আহ্বান করেন। পরে তিনি বাবুরের সঙ্গেও বিশ্বাসঘাতকতা করেন।
চিতোর- রাজপুতানার মেবার রাজ্যের রাজধানী।
রণবীর চৌহান- রাজপুত জাতির একটি প্রাচীন শাখার নাম চৌহান। যে স্বদেশপ্রেমিক রাজপুত যুবক বাবুরকে হত্যা করতে চেয়েছিল তাকে বলা হয়েছে ‘রণবীর চৌহান’।

‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতার পাঠের উদ্দেশ্য :
‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতাটি পাঠ করার মাধ্যমে সম্রাট বাবুরের মহানুভবতা সম্পর্কে শিক্ষার্থীরা অবহিত হবে। তারা মহৎ আদর্শে অনুপ্রাণিত হবে এবং মানবিক মূল্যবোধ সম্পর্কে সচেতন হবে।

‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতার পাঠ-পরিচিতি ও মূলভাব :
‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতায় মুঘলসম্রাট বাবুরের মহানুভবতা বর্ণিত হয়েছে। এতে তাঁর মহৎ আদর্শ ও মানবিক মূল্যবোধ তুলে ধরা হয়েছে। ভারতবর্ষে মুঘল সম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা সম্রাট বাবুর। রাজ্য বিজয়ের পর তিনি প্রজা সাধারণের স্বদয় জয়ে মনোযোগী হলেন। রাজপুতগণ তাঁকে কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলেন না। রাজপুত-বীর তরুণ রণবীর চৌহান বাবুরকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে দিন্ত্রির রাজপথে ঘুরছিল। এমন সময় বাবুর নিজের জীবনের মায়া ত্যাগ করে মন্ত হাতির কবল থেকে রাজপথে পড়ে-থাকা একটি মেথর শিশুকে উদ্ধার করেন। রাজপুত যুবক বাবুরের মহত্ত্বে বিস্মিত হয়।
সে বাবুরের পায়ে পড়ে নিজের অপরাধ স্বীকার করে। মহৎপ্রাণ বাবুর তাকে ক্ষমা করেন এবং তাকে নিজের দেহরক্ষী নিয়োগ করেন।

‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতার কবি পরিচিতি :
কালিদাস রায় পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার কড়ুই গ্রামে ১৮৮৯ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। বিদ্যালয়ের শিক্ষকতাকে তিনি আদর্শ পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। শিক্ষকতার সঙ্গে সঙ্গে তিনি সাহিত্য সাধনায় ব্যাপৃত ছিলেন। তিনি বিচিত্র বিষয়ের ওপর কবিতা লিখেছেন। তিনি বেশ কিছুসংখ্যক কাহিনি-কবিতা রচনা করেন। তিনি তাঁর কবিতায় আরবি-ফারসি শব্দের সার্থক প্রয়োগ করেছেন। কবি হিসেবে স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ‘কবিশেখর’ উপাধিতে ভূষিত হন। কলকাতার রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সম্মানসূচক ডি. লিট. উপাধি প্রদান করে। কালিদাস রায়ের উল্লেখযোগ্য কাব্য: ‘কিশলয়’, ‘পর্ণপুট’, ‘বল্লুরী’, ‘ঋতুমঙ্গল’, ‘রসকদম্ব’ ইত্যাদি।
তিনি ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন।

‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতার বহুনির্বাচনি প্রশ্ন :

প্রশ্ন থেকে

অভিনন্দন!
আপনি পেয়েছেন -এর মধ্যে!
যা


‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতার জ্ঞানমূলক প্রশ্ন :
প্রশ্ন- ১: বাবুরের জয় কেমন মনে হয়?
উত্তর : ভারত জয় বাবুরের কাছে ফাঁকি মনে হয়।
প্রশ্ন- ২: সংগ্রাম সিংহ কী মেনে নিতে নারাজ?
উত্তর : মুসলমান জিতেছে এটা মেনে নিতে সংগ্রাম সিংহ নারাজ।
প্রশ্ন- ৩: রাজপুত কী?
উত্তর : রাজপুত উত্তর ভারতের একটি জাতি।
প্রশ্ন- ৪: খানুয়া কী?
উত্তর : একটি ইতিহাসখ্যাত যুদ্ধক্ষেত্র।
প্রশ্ন- ৫: দস্যুর মতো কী পেয়ে সন্তুষ্ট না হওয়ার কথা বলা হয়েছে?
উত্তর : দস্যুর মতো লুণ্ঠিত সম্পদ পেয়ে সন্তুষ্ট না হওয়ার কথা বলা হয়েছে ।
প্রশ্ন- ৬: কে দিল্লির সিংহাসনে জেঁকে বসেছে?
উত্তর : মুঘল সিংহ বাবুর দিল্লির সিংহাসনে জেঁকে বসেছে।
প্রশ্ন- ৭: কী খাঁটি জয় নয়?
উত্তর : মাটির দখল খাঁটি জয় নয়।
প্রশ্ন- ৮: বাবুর ভারত জয় করে কীসে মন দেয়?
উত্তর : বাবুর ভারত জয় করে প্রজাদের হিতসাধনে মন দেয়।
প্রশ্ন- ৯: রণবীর কী নিতে ঘুরছিল?
উত্তর : রণবীর বাবুরের প্রাণ নিতে ঘুরছিল।
প্রশ্ন- ১০: কী পথে ছুটল?
উত্তর : মত্ত হাতি পথে ছুটল।
প্রশ্ন- ১১: সবাই সরে গেলে কে পথে পড়ে রইল?
উত্তর : সবাই সরে গেলে একটি শিশু পথে পড়ে রইল।
প্রশ্ন- ১২: কে ভয়ে কাঁপে?
উত্তর : পথিকরা ভয়ে কাঁপে।
প্রশ্ন- ১৩: কে পথের শিশুকে বাঁচাল?
উত্তর : বাবুর পথের শিশুকে বাঁচাল।
প্রশ্ন- ১৪: পথের শিশুটি কার ছেলে?
উত্তর : পথের শিশুটি মেথরের ছেলে।
প্রশ্ন- ১৫: কাকে ভারতের রাজপদ সাজে?
উত্তর : সম্রাট বাবুরের ভারতের রাজপদ সাজে।
প্রশ্ন- ১৬: বাবুরের মহত্ত্ব দেখে রণবীরের কী কেটেছে?
উত্তর : বাবুরের মহত্ত্ব দেখে রণবীরের অন্ধ মোহের ঘোর কেটেছে।

‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতার অনুধাবনমূলক প্রশ্ন :

প্রশ্ন- ১: বাবুরের জয় ফাঁকি কেন?
উত্তর : বাবুরের জয় ফাঁকি এ জন্য যে শুধু রাজ্য বা দেশ জয় করে বাবুর শ্রেষ্ঠ হতে পারেননি। বাবুর আফগান মুসলমান। ভারত হিন্দু বসতিপূর্ণ একটি দেশ। ভিনদেশি মানুষকে শাসক হিসেবে মেনে নিতে পারে না। বাবুর তাই ভাবল; তার ভারত জয় বৃথা। যদি না সে ভারতের মানুষের মন জয় করতে পারে।

প্রশ্ন- ২: সংগ্রাম সিংহ কেন গর্জন করেছিলেন?
উত্তর : সংগ্রাম সিংহ রাজপুতনার মেবার রাজ্যের রাজা ছিলেন। তিনি ভিন দেশি শাসক বাবুরকে নিজ মাতৃভূমিতে শাসক হিসেবে মেনে নিতে পারেননি। তিনি বলেছেন, লুণ্ঠিত ধন নিয়ে দেশে ফিরে যাও। এ মাটি তোমার নয় বাবুর। এ মাটি ভারতের মানুষের। এ কারণেই সংগ্রাম সিংহ গর্জে উঠেছিলেন।

প্রশ্ন- ৩: বাবুরকে প্রতিরোধ করার কেউ ছিল না কেন?
উত্তর : বাবুর ছিলেন অপ্রতিরোধ্য যোদ্ধা। সংগ্রাম সিংহ, দৌলত খাঁ এরা সবাই বাবুরের আক্রমণে পরাজিত হয়। বাবুর দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন, তিনি ভারতের মাটি যেমন জয় করবেন; তেমনি ভারতের মানুষের হৃদয়ও জয় করবেন। তার এই প্রতিজ্ঞার ফলেই বাবুরকে প্রতিরোধ করার কেউ ছিল না।

প্রশ্ন- ৪: বিজিতের হৃদয় দখল করা বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : বিজিতের হৃদয় দখল করা বলতে বোঝায়, ভারতের পরাজিত মানুষদের হৃদয়কে বুঝে তাদের কাছে যোগ্য শাসক হওয়া। যাতে তারা ভিনদেশি বাবুরকে দস্যু বা লুণ্ঠনকারী না ভাবে। প্রজাদের কল্যাণে কাজ করে বাবু তাই শ্রেষ্ঠ শাসক হতে চেয়েছেন।

প্রশ্ন- ৫: রণবীর চৌহান কেন বাবুরের সন্ধান করছিলেন?
উত্তর : রণবীর চৌহান একজন দেশপ্রেমিক যুবক। সে ছিল রাজপুত জাতির এক তরুণ। বাবুর ভারত দখল করলে রাজপুতদের পরাজয় ঘটে। এই পরাজয় সে মেনে নিতে পারেনি। তাই স্বজাতির সম্মান রক্ষার জন্য রণবীর প্রতিজ্ঞা করে, সে বাবুরকে হত্যা করবে। এজন্যই সে বাবুরের সন্ধান করছিল।

প্রশ্ন- ৬: পথের শিশুকে ফেলে দিয়ে স্নান করতে বলা হয়েছে কেন?
উত্তর : পথের শিশুটি চিল এক মেথর শিশু। মেথর ভারতে খুব ছোট একটি জাত। ভারতীয় সমাজ জাতপাতে বিভক্ত। সেখানে উঁচু জাতের মানুষ নিচু জাতের মানুষকে সম্মান করে না। তাদের মানুষ ভাবে না। ছোট জাতের মানুষের স্পর্শ লাগলে নিজের জাত চলে যায়। কুসংস্কার থাকার কারণে পথের শিশুকে ফেলে দিয়ে স্নান করার কথা বলা হয়েছে।

প্রশ্ন- ৭: রণবীর কেন বাবুরের পায়ে লুটিয়ে পড়ল?
উত্তর : রণবীর বাবুরকে হত্যার জন্য বেড়াচ্ছিল। কিন্তু সে একদিন হঠাৎ দেখল বাবুর সব লোকের বাধা উপেক্ষা করে রাজপথে একটি শিশুকে বাঁচায়। শিশুটি একটি মত্ত হাতির পায়ের তলায় পিষ্ট হতে যাচ্ছিল। নিজের জীবনের তোয়াক্কা না করে সামান্য মেথর শিশুকে বাঁচাতে দেখে বাবুর সম্পর্কে রণবীরের ধারণা পরিবর্তন হয়। সে জন্যই রণবীর বাবুরের পায়ে লুটিয়ে পড়ে।


‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন- ১:

নিচের উদ্দীপকটি পড়ো এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:
প্রচণ্ড বন্যায় ডুবে যায় টাঙ্গাইলের ব্যাপক অঞ্চল। অনেকেরই বাড়ি-ঘর ডুবে যায়। নিরাশ্রয় হয়ে পড়ে অগণিত মানুষ। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এমনি একটা পরিবার নৌকায় চড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটে। তীব্র স্রোতের টানে নৌকাটি উল্টে গেলে সবাই সাঁতার কেটে উঠে এলেও জলে ডুবে যায় একটি শিশু। বড়ো মিয়া নামের এক যুবক এ দৃশ্য দেখে ঝাঁপিয়ে পড়ে উদ্ধার করেন শিশুটিকে। কূলে উঠে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। ডাক্তার এসে পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে জানালেন বড়ো মিয়া আর বেঁচে নেই।

(ক) রণবীর চৌহান কে ছিলেন?
(খ) ‘বড়ই কঠিন জীবন দেওয়া যে জীবন নেওয়ার চেয়ে’- কেন?
(গ) উদ্দীপকে বর্ণিত বড়ো মিয়া আবরণে ‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতায় ফুটে ওঠা দিকটি ব্যাখ্যা কর।
(ঘ) উদ্দীপকটিতে ‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতার একটা বিশেষ দিকের প্রতিফলন ঘটলেও সমভাব ধারণ করে না- যুক্তিসহ বুঝিয়ে লেখ।

(ক) রণবীর চৌহান ছিলেন চিতোরের এক তরুণ যোদ্ধা।
(খ) ‘জীবন দেওয়া জীবন নেওয়ার চেয়ে কঠিন’- কারণ জীবন অমূল্য। জীবন একবারই পাওয়া যায়।
➠ অমূল্য সম্পদ জীবন নেওয়া যায় সহজে। রাগে দুঃখে বা ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে যেকোনো মানুষকে হত্যা করে ফেললে জীবন নেওয়া যায়। কিন্তু ক্ষমা, উদারতা, মহত্ত্ব দিয়ে মানুষের অপরাধ ক্ষমা করে দেওয়া কঠিন কাজ। তাছাড়া জীবন সৃষ্টি করা অসম্ভব। তাই জীবন দেওয়া জীবন নেওয়ার চেয়ে কঠিন বলা হয়েছে।

(গ) উদ্দীপকে বর্ণিত বড়ো মিয়া একটি মহৎ চরিত্র হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে। তার ঘটনার সাথে ‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতার দিল্লির রাজপথে হাতির আক্রমণ থেকে শিশুর জীবন বাঁচানোর ঘটনার সাথে সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়।
➠ কবিতায় আমরা দেখি, সম্রাট বাবুর ছদ্মবেশ ধারণ করে দিল্লির রাজপথে হাঁটতেন। একদিন রাজপথে একটা পাগলা হাতি মানুষের ওপর ক্ষিপ্ত হয়। সবাই হাতির ভয়ে ছুটে পালায়। এমন সময় একটি ছোট্ট শিশু পড়ে থাকে রাজপথে। বাবুর সবার নিষেধ অবজ্ঞা করে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শিশুটিকে হাতির পায়ের তলায় পিষ্ট হওয়া থেকে রক্ষা করে।
➠ উদ্দীপকে আমরা দেখি বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়া নৌকার যাত্রীরা সাঁতরে তীরে উঠে গেলেও একটি শিশু পানিতে ডুবে যায়। ডুবে যাওয়া শিশুটিকে উদ্ধারের জন্য বড় মিয়া নামের এক যুবক, তীব্র স্রােতের মধ্যে জলে ঝাঁপিয়ে পড়ে। নিজের জীবনের মায়া না করে যুবক শিশুটিকে উদ্ধার করে। কিন্তু নিজে অসুস্থ হয়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত যুবক বড়ো মিয়া মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। অর্থাৎ উদ্দীপক ও বাবুরের মহত্ত্ব কবিতায় আমরা দুজন মানুষের মানবিকতার পরিচয় পাই। মানবিক দৃষ্টিকোণের দিকটিই বড়ো মিয়ার আবরণে ‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতায় ফুটে উঠেছে।

(ঘ) উদ্দীপকটিতে ‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতার একটি বিশেষ দিকের প্রতিফলন ঘটেছে তবে পুরো কবিতার ভাব প্রকাশিত হয়নি।
➠ কালিদাস রায় রচিত ‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতায় আমরা দেখি পুুরো কবিতা জুড়ে মুঘল সম্রাট বাবুরের কৃতিত্ব, সাফল্য, মহানুভবতা, এসব প্রকাশিত হয়েছে। মুঘলদের বীরত্বের ইতিহাসের সাথে শাসন ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য তাদের গৃহীত পদক্ষেপগুলোর কথাও প্রকাশিত হয়েছে এই কবিতায়। এমনকি ভারতের মাটিতে টিকে থাকতে হলে শুধু ভূমি দখল করলেই চলবে না। এদেশের মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিতে হবে। এমন চিন্তা বাবুরের চেতনায় এসেছে। ফলে মানুষের জন্য ভালোবাসা ও জাতিভেদ প্রথার ঊর্ধ্বে উঠে প্রকৃত মানবিকতার নিদর্শন রেখেছেন বাবুর।
➠ অন্যদিকে উদ্দীপকে আমরা বড় মিয়া নামের এক যুবকের মানবীয় চেতনা ও আত্মত্যাগের ঘটনা পাই। সে নিজের জীবন দিয়ে একটি শিশুকে উদ্ধার করে।
➠ এভাবে দেখা যায় উদ্দীপকটিতে সমগ্র কবিতার ভাব প্রকাশিত না হয়ে কবিতায় একটি বিশেষ দিক প্রকাশিত হয়েছে। এখানে উদ্দীপকের বড়ো মিয়া চরিত্রটির মহানুভবতা ও কর্তব্যপরায়ণতার কথা বাবুরের মহত্ত্ব কবিতার এই বিষয়বস্তুর সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। তাই বলা যায়, উদ্দীপকটি ‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতার সমভাব ধারণ করে না।


‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন- ২:

নিচের উদ্দীপকটি পড়ো এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:
রতন চৌধুরী বদমেজাজি মানুষ। এক সময় ডাকাত দলের সর্দার ছিলেন। ডাকাতি করে অনেক সম্পদের মালিক হয়েছেন। এলাকার মানুষ তাকে ভয় পায়। একবার তিনি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হলেন। লোকজন ভাবল, তারা আর ন্যায় বিচার পাবেন না। কিন্তু ঘটল উল্টো ঘটনা। রতন চৌধুরী মানুষের সাথে ভালো ব্যবহার করতে লাগলেন। দুঃখি মানুষের খোঁজখবর নিয়ে তাদের সাহায্য করা শুরু করলেন। তিনি স্থির করলেন ভালো কাজ করে নিজের বদনাম ঘোঁচাবেন।

ক. খানুয়ার প্রান্তর কী?
খ. ‘মাটির দখলই খাঁটি জয় নয় বুঝেছে বিজয়ী বীর’- কথাটির তাৎপর্য কী?
গ. উদ্দীপকের রতন চৌধুরীর সাথে ‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতার সাদৃশ্য আছে কি? থাকলে তা উপস্থাপন কর।
ঘ. ভালো কাজ করে নিজের বদনাম ঘোঁচানো আর হিন্দুর-হৃদি জিনিবার লাগি করিতেছে সুশাসন- সমঅর্থবোধক কথা- বিশ্লেষণ কর।

ক. খানুয়ার প্রান্তর হচ্ছে আগ্রার পশ্চিমে অবস্থিত যুদ্ধক্ষেত্র।
খ. ‘মাটির দখল খাঁটি জয় নয় বুঝেছে বিজয়ী বীর’- কথাটির দ্বারা কালিদাস রায় রচিত ‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতার মুঘল সম্রাট বাবুরের উপলব্ধির কথা প্রকাশিত হয়েছে।
➠ সম্রাট বাবুর মধ্য এশিয়া থেকে আফগানিস্তানে আসেন। তারপর অনেক চেষ্টার পর ভারত দখল করেন। দিল্লির সিংহাসন দখল করেও বাবুর বুঝতে পারে ভারতের মানুষের হৃদয় জয় করতে পারেননি তিনি। তার কাছে মনে হয় শুধু মাটির দখল নেওয়াই বড় কথা না। অথবা শুধু মাটির দখল নিয়েই সব পাওয়া যায় না, মানুষের হৃদয়ের দখলও নিতে হয়।

গ. আলোচ্য উদ্দীপকের সাথে আমরা ‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতার সম্রাট বাবুরের চিন্তার সাদৃশ্য খুঁজে পাই।
➠ উদ্দীপকে আমরা দেখি রতন চৌধুরী নামের একজন ডাকাত। একবার তিনি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হন। অত্যাচারী মানুষ চেয়ারম্যান হওয়ায় সবাই ভাবে তার কাছে কেউ ন্যায়বিচার পাবে না। অথচ তিনি স্থির করেন ভালো কাজ করে বদনাম ঘোচাবেন। এটা তার বোধদয় ঘটার বিষয়।
➠ ‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতায় আমরা দেখি সম্রাট বাবুর যুদ্ধ করে ভারত দখল করে। তিনি দিল্লির সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হয়ে লুণ্ঠন অত্যাচার চালিয়ে শুধু ধনবান হতে চাননি। সাধারণ মানুষের অন্তর জয় করতে চেয়েছেন। অর্থাৎ ‘বাবুরের মহত্ত্ব কবিতায় সম্রাট বাবুরের ও উদ্দীপকের রতন চৌধুরীর বোধ ও চিন্তার পরিবর্তনের মধ্যে সাদৃশ্য পাওয়া যায়।

ঘ. উদ্দীপকের রতন চৌধুরীর ভালো কাজ করে নিজের বদনাম ঘোচানোর চিন্তা আর ‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতার হিন্দু-হৃদি জিনিবার লাগি করিতেছে সুশাসন এই দুটি কথা সমার্থক।
➠ উদ্দীপকে আমরা রতন চৌধুরী নামের একজন ডাকাতের অত্যাচারের কাহিনি যেমন পাই, তেমনি ডাকাতির পরে চেয়ারম্যান হয়ে নিজের অপবাদ ঘোচানোর জন্য মানুষের প্রতি তার প্রতিভার কথাও জানতে পারি।
➠ আবার ‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতায় আমরা সম্রাট বাবুরের ভারত জয়ের কাহিনির সাথে ভারতবাসীর জন্য তার হৃদয়ের টানের কথাও জানতে পারি। ভারত মাটির যারা প্রকৃত সন্তান তারা কখনো বাবুরের শাসন মেনে নেবে না; যদি না বাবুর তাদের হৃদয়ের খোঁজ রাখেন। এই সত্য কথাটি উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন বাবুর। তাই মুসলিম হয়েও ভারতের হিন্দুর জন্য তিনি উদার হয়েছেন। জাতি বর্ণের বিভেদ ভুলে সাম্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছেন। নিজে পথে পথে ঘুরেছেন সাধারণের বেশ নিয়ে। হিন্দুদের আচার আচরণ, তাদের জীবনাচার জেনে তিনি সুশাসন প্রতিষ্ঠা করেছেন।
➠ বাবুরের সুনাম প্রতিষ্ঠার চেষ্টা ও তাঁর নিজের সামগ্রিক কর্মকাণ্ড ভারতের মানুষের কাছে তাকে মহান সম্রাটে পরিণত করেছে। এখানেই উদ্দীপকের উক্তিটি ও ‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতার লাইনটি সমার্থবোধক।


‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন- ৩:

নিচের উদ্দীপকটি পড়ো এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:
রানা স্কুলে যাচ্ছিল। হঠাৎ দেখল একটা ছেলে রাস্তার পাশে ডোবায় পড়ে গেছে। ছেলেটি সাঁতার জানে না। পানিতে ডুবে মারা যাওয়ার অবস্থা। রানা দ্রুত স্কুল ব্যাগ রেখে পানিতে লাফিয়ে পড়ল। ডোবার নোংরা পানি থেকে ছেলেটিকে উদ্ধার করল সে। এ সময়ের মধ্যে লোকজন জড়ো হলো। কেউ কেউ বলল, বস্তির ছেলের জন্য ডোবায় লাফ দিয়ে নিজের জীবন বিপন্ন করার কি দরকার ছিল?

ক. পানিপথ কী?
খ. ‘ফেলে দিয়ে ওরে এখন করগে স্নান’- এই কথাটি দিয়ে কী বোঝানো হয়েছে? ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত ঘটনা ও রানা চরিত্রের সাথে তোমার পঠিত ‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ দিকটি আলোচনা কর।
ঘ. ‘সবার উপর মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই।’ কথাটি উদ্দীপক ও ‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতার আলোকে বিশ্লেষণ কর।

ক. দিল্লির উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত ইতিহাস প্রসিদ্ধ একটি যুদ্ধক্ষেত্রের নাম পানিপথ।
খ. ‘ফেলে দিয়ে ওরে এখন করগে স্নান’- এই কথাটির মধ্য দিয়ে জাতিভেদে বিভক্ত ভারতীয় সমাজ ব্যবস্থার পরিচয় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
➠ ‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতায় আমরা দেখি সম্রাট বাবুর একজন মেথরের ছেলেকে পাগল হাতির আক্রমণ থেকে বাঁচায়। এই দেখে উপস্থিত জনতা তাকে একথা বলেছিল। মেথর সমাজের নিম্নশ্রেণির মানুষ। তার সামাজিক মর্যাদা নেই। তাকে স্পর্শ করলে নিজের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হবে। এমন চিন্তা থেকে বলা হয়েছে যে, মেথরের ছেলেকে ফেলে দিয়ে স্নান করতে হবে। এখানে স্নানের মাধ্যমে পরিশুদ্ধ হওয়ার কথা বলা হয়েছে।

গ. উদ্দীপকের ঘটনা ও রানা চরিত্রটির সাথে ‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতায় বাবুর চরিত্র ও শিশুকে বাঁচানোর ঘটনার প্রত্যক্ষ সাদৃশ্য পাওয়া যায়।
➠ উদ্দীপকে আমরা দেখি রানা স্কুলে যাওয়ার পথে পানিতে ডুবে থাকা একটি ছেলেকে উদ্ধার করে। লোকজন বলে বস্তির ছেলেকে বাঁচাতে নোংরা ডোবায় নামার কি প্রয়োজন ছিল। এটা একদিকে শ্রেণিবিভক্ত সমাজ চেতনাকে যেমন প্রকাশ করে তেমনি মানবিকতা বোধের পরিচয় দেয়।
➠ ‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতাতেও আমরা এমন ঘটনা দেখি। বাবুর মেথরের ছেলেকে রাজপথে একটি হাতির আক্রমণ থেকে বাঁচায়। লোকজনের অবজ্ঞা, অবহেলা ও তিরস্কার উপেক্ষা করে বাবুরের এমন কাজ মানবিকতার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। এখানেও শ্রেণি বিভক্ত সমাজ চিন্তা ও মানবিকতা উভয় বোধ প্রকাশিত।অতএব আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, উদ্দীপক ও বাবুরের মহত্ত্ব কবিতার চরিত্র ও ঘটনা সাদৃশ্যপূর্ণ।

ঘ. “সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই”- চণ্ডিদাসের এ কথাটির মধ্য দিয়ে মানবিক মূল্যবোধের অসামান্য প্রকাশ ঘটেছে।
➠ মানুষ সবাই সমান। মানুষই সৃষ্টির সেরা। কিন্তু শ্রেণি বিভক্ত সমাজ মাঝে মাঝে এই সত্য ভুলে যায়। তাই আমরা দেখি মানুষ বস্তির ছেলে বা মেথরের ছেলেকে সাধারণ ভাবে স্বীকৃতি দেয় না।
➠ উদ্দীপকে আমরা দেখি, রানা স্কুলে যাওয়ার পথে পানিতে ডুবতে থাকা বস্তির একটি ছেলেকে বাঁচায়। কিন্তু স্থানীয় মানুষ এই কাজে প্রশংসা না করে ধিক্কার দেয়। আবার ‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতায় আমরা দেখি সম্রাট বাবুর একটি মেথরের ছেলেকে হাতির আক্রমণ থেকে বাঁচালে মানুষ তাকে ধিক্কার দেয়। কিন্তু উভয়ক্ষেত্রে শ্রেণিভেদ প্রথার ফলে সৃষ্ট সংকীর্ণতার জয় হয়নি। জয় হয়েছে মানবিকতার। উদ্দীপকের রানা ও কবিতার সম্রাট বাবুর প্রকৃত মানবীয় মানুষ হিসেবে ধর্ম বর্ণের বিভেদ ভুলে মানুষের উপকারে নেমেছে। তাদের কারণে মানুষের জীবন বেঁচে গেছে।
➠ অর্থাৎ মানুষের সংকীর্ণ মানসিকতা ও সমাজ ব্যবস্থার বিভেদের ঊর্ধ্বে উঠে প্রকৃত মানুষের জয় হয়েছে। মানুষ পরিচয় যে সবার থেকে বড় পরিচয় সামাজিক অন্য পরিচয় সেখানে বৃথা- সে কথা এখানে পরিষ্কার প্রমাণিত হয়েছে। অর্থাৎ মানবীয় মূল্যবোধের জয় হয়েছে।


‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন- ৪:

নিচের উদ্দীপকটি পড়ো এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:
করিম সাহেব একজন সৎ মানুষ। তিনি গ্রামের সব মানুষকে ভালোবাসেন। সবার বিপদে সাহায্য করেন। কিন্তু রহমান নামে একজন করিম সাহেবকে সহ্য করতে পারে না। তার ধারণা করিম সাহেব বদ মতলব নিয়ে মানুষের উপকার করেন। এ ধারণা থেকে রহমান করিম সাহেবের ক্ষতি করার জন্য উঠে পড়ে লাগে। অথচ একদিন রহমান বিপদে পড়লে করিম সাহেব সবার আগে ছুটে আসেন। এতে রহমানের ভুল ভাঙে।

ক. ‘মসনদ’ শব্দের অর্থ কী?
খ. ‘বীরভোগ্যা এ বসুধা এ কথা সবাই কয়’- কথাটি ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের রহমানের সাথে ‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতার বিশেষ চরিত্রের সাদৃশ্যপূর্ণ দিকগুলো চিহ্নিত কর।
ঘ. ‘মানুষের কল্যাণে যিনি নিয়োজিত থাকেন। যোগ্য সম্মান তারই প্রাপ্য কথাটি উদ্দীপক ও ‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতার আলোকে বিশ্লেষণ কর।

ক. ‘মসনদ’ শব্দের অর্থ রাজাসন বা সিংহাসন।
খ. ‘বীরভোগ্যা এ বসুধা এ কথা সবাই কয়’- কথাটি রাজন্যদের কাছে অতি প্রসিদ্ধ একটি বাক্য। পৃথিবী যে বীর তথা ক্ষমতাবানদের হাতের মুঠোয়, সেই সত্যটি এখানে প্রকাশিত।
➠ ‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতায় আমরা দেখি রণবীর চৌহান সম্রাট বাবুরের মহত্ত্ব দেখে এবং তার বীরত্ব ও মহানুভবতায় মুগ্ধ হয়ে যায়। তাই সম্রাটকে হত্যার উদ্দেশ্যে এসেও তার কাছে সে আত্মসমর্পণ করে। তার মনে হয়, ভারতের যোগ্য সম্রাট বাবুর। পৃথিবী সবসময় যোগ্য পালকের অধীনে থাকবে। সত্যিকারের বীরের কাছে আত্মসমর্পণে দীনতা নেই বা এতে মর্যদা হানি হয় না। এতে সম্মান বৃদ্ধি পায়। সত্যিকারের বীরের কাছে পৃথিবী নিরাপদ। এ সত্যটি কথাটিতে প্রকাশিত হয়েছে।

গ. উদ্দীপকে রহমানের সাথে ‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতার রণবীর চৌহানের সাদৃশ্য পাওয়া যায়।
➠ উদ্দীপকে আমরা দেখি, করিম সাহেবের সমস্ত কল্যাণকর কাজে বাধা দেয় রহমান। তার সন্দেহ করিম সাহেব নিজের স্বার্থে মানুষের কল্যাণ করে। কিন্তু নিজের বিপদের দিনে তার ভুল ভাঙে। এখানে সন্দেহের পরে প্রকৃত মানবিক সত্য প্রকাশিত হয়। ফলে সন্দেহের কালো মেঘ কেটে যায়।
➠ ‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতায় আমরা প্রায় একই ঘটনা দেখি। রণবীর চৌহান বাবুরকে ভারতের শত্রু ভাবে। সে মনে করে বাবুর অন্যায় ভাবে ভারত শোষণ করতে এসেছে। কিন্তু রাজপথে মত্ত হাতির কবল থেকে একটি শিশুকে বাঁচাতে দেখে রণবীর চৌহানের ভুল ভাঙে। বাবুরকে তার প্রকৃত বীর মনে হয়। সে তার কাছে আত্মসমর্পণ করে। সুতরাং আমরা উভয় ক্ষেত্রেই মানবিকতার সাদৃশ্য খুঁজে পাই। রহমান ও রণবীর চৌহান সমান দৃষ্টিভঙ্গির দুটি চরিত্র হিসাবে উদ্ভাসিত হয়েছে।

ঘ. মানুষের কল্যাণে যিনি নিয়োজিত থাকেন যোগ্য সম্মান তারই প্রাপ্য। কথাটি মানবিক মানদণ্ডে সবসময় সবকালেই সত্য হিসাবে প্রমাণিত হয়েছে। যুগে যুগে এই সত্যের প্রকাশ আমরা বিভিন্নভাবে দেখতে পাই।
➠ উদ্দীপকের করিম সাহেবের কর্মকাণ্ড সত্য ও কল্যাণের জন্য নিবেদিত ছিল। ফলে রহমানের শত চেষ্টা ও সন্দেহের পরও সেই সত্য আপন মহিমায় উদ্ভাসিত হয়েছে। ফলে রহমানের সমস্ত সন্দেহ দূরীভূত হয়।
➠ ‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতায় আমরা এই সত্যের প্রকাশ দেখতে পাই। বাবুর মানব কল্যাণে ও ভারতের প্রকৃত সেবক হতে চেষ্টা করেন। তাঁর এই কাজ সবাই সমান চোখে দেখে না। রণবীর চৌহান তাদের অন্যতম। রণবীর বাবুরকে হত্যার জন্য আসে। কিন্তু বাবুরের প্রকৃত মহত্ত্ব তার সন্দেহের অবসান ঘটায়। ফলে রণবীর বাবুরেরর কাছে আত্মসমর্পণ করে। মহানুভব বাবুর আত্মোপলব্ধির জন্য চৌহানকে নিজের দেহ রক্ষী হিসেবে গ্রহণ করে।
➠ এভাবে দেখা যায় পৃথিবীতে যুগে যুগে মানবতার জয় হয়েছে। মানুষের জন্য কল্যাণকামী মানুষ যুগে যুগে সম্মানিত হয়েছে। তারাই প্রকৃত বীর হিসাবে সমাজে ও রাষ্ট্রে সম্মানিত হয়েছেন।


‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন- ৫:

নিচের উদ্দীপকটি পড়ো এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:
রায়হান ও হাবিব দুজন একই পাড়ায় বাস করে। হাবিব রায়হানকে সহ্য করতে পারে না। সে ঠিক করল, রায়হানকে রাস্তায় ধরে মারবে। রায়হান কিন্তু হাবিবের মতো নয়। সে হাবিবকে ভালোবাসে। হাবিবের জন্মদিনে রায়হান তার বাসায় গেল। রায়হানকে দেখে হাবিব বিস্মিত হলো। তাকে বুকে জড়িয়ে ধরে নিজের অপরাধের কথা বলে ক্ষমা চাইল।

ক. কবিশেখর কার উপাধি?
খ. ‘কেটেছে আমার প্রতিহিংসার অন্ধ মোহের ঘোর’- কথাটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের সাথে ‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতার সাদৃশ্য উপস্থাপন কর।
ঘ. ‘বড়ই কঠিন জীবন দেওয়া যে জীবন নেওয়ার চেয়ে- কথাটি উদ্দীপক ও ‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতার আলোকে বিশ্লেষণ কর।

ক. কবিশেখর কবি কালিদাস রায়ের উপাধি।
খ. ‘কেটেছে আমার প্রতিহিংসার অন্ধ মোহের ঘোর’- কথাটি একটি চেতনাপূর্ণ কথা। মানুষের সন্দেহ তাকে ঘোরের মধ্যে ফেলে দেয়। সেই সন্দেহ প্রতিহিংসা তৈরি করে। এতে মানুষ হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়ে।
➠ ‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতায় আমরা এই সত্য প্রকাশিত হতে দেখি। চিতরের তরুণ যোদ্ধা রণবীর চৌহান বাবুরকে সন্দেহ করে। ভাবে, বাবুর অন্যায় ভাবে ভারতের সম্রাট হয়েছে। কিন্তু বাবুরের মহত্ত্বের ঘটনা দেখে তার সন্দেহের অবসান ঘটে। কারণ বাবুর একটি শিশুকে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁচায়। তাতেই রণবীর চৌহানের মধ্যে এই চেতনার সৃষ্টি হয়।

গ. উদ্দীপকে আমরা হাবিব ও রায়হানের মধ্যে বোধোদয়ের ঘটনা দেখি। আবার ‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতায় সম্রাট বাবুর ও রণবীর চৌহানের মধ্যে বোধোদয়ের ঘটনা ঘটে। এই দুটি ঘটনাই সাদৃশ্যপূর্ণ।
➠ উদ্দীপকের রায়হান সৎ ও প্রকৃত মানবীয় মানুষ। অথচ হাবিব তাকে সহ্য করতে পারে না কিন্তু হাবিবের জন্মদিনে রায়হান উপস্থিত হলে হাবিবের সন্দেহের অবসান হয়। হাবিবের ভুল ভেঙে যায়। তারা বন্ধু হয়ে যায়।
➠ ‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতায় আমরা এমনই ঘটনা দেখি। রণবীর চৌহান সম্রাট বাবুরকে সন্দেহ করে। তাকে দেশপ্রেমিক ভাবতে পারে না। বিদেশি শত্রু ভাবতে থাকে। কিন্তু মেথর শিশুকে হাতির আক্রমণ থেকে বাঁচানোর ঘটনা রণবীরের সন্দেহের অবসান ঘটায়। রণবীর এক পরম সত্যের মুখোমুখি হয়। শেষে তাদের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বাবুর তাকে হত্যা করতে আসা তরুণকে দেহ রক্ষক বানায়। এটা পরম মমত্ববোধের প্রকাশ। উভয় কবিতায় এভাবে আমরা দ্বিধাদ্বন্দ্বের পরে প্রকৃত মানবিকতার জয়গান দেখতে পাই। প্রকৃত মানুষ এখানে বিজয়ী হয়েছে। এখানেই উদ্দীপক ও কবিতার মধ্যে সাদৃশ্য সৃষ্টি হয়েছে। ‘বড়ই কঠিন জীবন দেওয়া যে জীবন নেওয়ার চেয়ে।’- কথাটি যথার্থ।

ঘ. ‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতায় ও আলোচ্য উদ্দীপকে আমরা দেখতে পাই, যে কোনো জীবন ধ্বংস করার চেয়ে সেই জীবনটা নিরাপদ করা অনেক বেশি কঠিন।
➠ কবিতায় সম্রাট বাবুর নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে একটি মেথর শিশুকে বাঁচায়। পাগলা হাতির আক্রমণে লোকজন নিজের জীবন নিয়ে পালিয়ে গেলেও শিশুটিকে বাঁচানোর জন্য সাধারণ মানুষ বাবুরকে বাহবা দেয় না। বরং তারা তাঁকে গোসল করে শুদ্ধ হতে বলে। কারণ মেথর শিশু নিম্ন জাতের। বাবুর নিম্ন জাতকে স্পর্শ করছে। মানবতা এখানে জাতপাতের বাধায় আটকে আছে। কিন্তু প্রকৃত মানুষ বাবুর তা ভেঙে দিয়েছেন।
➠ আবার রণবীর চৌহান নিজে যখন এমন ঘটনা দেখে মুগ্ধ হয়। তখন সে বাবুরের কাছে আত্মসমর্পণ করে নিজের শাস্তির আবেদন করে। বাবুর তার কথা শুনে আলোচ্য উক্তিটি করেছেন।
➠ ‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতায় রণবীর চৌহান নিজের ভুল বুঝতে পেরে বাবুরের কাছে আত্মসমর্পণ করে নিজের শাস্তি কামনা করেন। এ দিকটি উদ্দীপকের হাবিবের মধ্যেও পরিলক্ষিত হয়। হাবিব ও বাবুর দুজনেই মানবিকতার পরিচয় দিয়েছে। আসলে যেকোনো জীবন মূল্যবান। সৃষ্টিতেই আনন্দ। মাানুষের কল্যাণেই প্রকৃত সুখ। এই সত্য বাবুরের উক্তিটিতে প্রকাশিত হয়েছে।


‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন- ৬:

নিচের উদ্দীপকটি পড়ো এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:
আফগান যোদ্ধা বখতিয়ার খলজি বাংলা দখল করেন। তিনি লক্ষণ সেনের রাজধানী দখল করে তাকে বিতাড়িত করেন। এরপর বখতিয়ার বাংলা শাসনের দিকে মনোযোগ দেন। তাঁর শাসনামল বাংলার ইতিহাসে বিভিন্ন কারণে বিশেষ উল্লেখযোগ্য। অনেক ইতিহাসবিদ মনে করেন, সেটা ছিল অন্ধকার যুগ।

ক. রাজপথে কে বাবুরের সন্ধান করছিল?
খ. বাবুর রণবীরকে নিজের দেহরক্ষী বানালেন কেন?
গ. উদ্দীপকের সাথে ‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতার ঐতিহাসিক সাদৃশ্য দেখাও।
ঘ. ‘বখতিয়ার খলজি ও বাবুর দুজনই আফগান থেকে এলেও তাদের দু’জনের শাসন একই রকম ছিল না।’- কথাটি উদ্দীপক ও ‘বাবুরের মহত্ত্ব’ কবিতার আলোকে ব্যাখ্যা কর।

ক. রাজপথে রণবীর চৌহান বাবুরের সন্ধান করছিল।
খ. বাবুর দেখলেন রণবীর নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে। সে যে জন্য উন্মত্তের মতো হত্যার উদ্দেশ্যে দিল্লির পথে পথে ঘুরে বেড়িয়েছে, সেই ধারণা তার পরিবর্তন হয়েছে।
➠ যে মানুষের বোধোদয় হয়, তাকে আর কিছু বুঝতে হয় না। বোধোদয় হওয়া ব্যক্তি স্বশিক্ষিত ও প্রকৃত মানুষে পরিণত হয়। বাবুর নিজের দেহরক্ষী হিসেবে সে জন্যই রণবীর চৌহানকে নিয়োগ করেন।


তথ্যসূত্র :
১. সাহিত্য পাঠ: একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, ঢাকা, ২০২৫।
২. আধুনিক বাংলা অভিধান: বাংলা একাডেমি, এপ্রিল, ২০১৮।
৩. ব্যবহারিক বাংলা অভিধান: বাংলা একাডেমি, ১৮তম, ২০১৫।
Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url