পরিচ্ছেদ ২০: বিশেষণ
![]() |
পরিচ্ছেদ ২০: বিশেষণ |
বিশেষণ
যে শব্দ দিয়ে সাধারণত বিশেষ্য ও সর্বনামের গুণ, দোষ, সংখ্যা, পরিমাণ, অবস্থা ইত্যাদি বোঝায়, তাকে বিশেষণ বলে। যেমন:সুন্দর ফুল, বাজে কথা, পঞ্চাশ টাকা, হাজার সমস্যা, তাজা মাছ।
বিশেষণের শ্রেণিবিভাগ
কোন কোন শ্রেণির শব্দকে বিশেষিত করে, সেই অনুযায়ী বিশেষণকে আলাদা করা যায়। বিশেষণ শব্দটি কীভাবে গঠিত হয়েছে, সেই বিবেচনায়ও বিশেষণকে ভাগ করা সম্ভব। এছাড়া বাক্যের মধ্যে বিশেষণটির অবস্থান কোথায় তা দিয়েও বিশেষণকে চিহ্নিত করা যায়। এসব বিবেচনায় বিশেষণকে নানা নামে উপস্থাপন করা যেতে পারে।১. বর্ণবাচক:
যে বিশেষণ দিয়ে রং নির্দেশ করা হয়, তাকে বর্ণবাচক বিশেষণ বলে। যেমন:নীল আকাশ, সবুজ মাঠ, লাল ফিতা।
এখানে ‘নীল’, ‘সবুজ’ বা ‘লাল’ হলো বর্ণবাচক বিশেষণ।
২. গুণবাচক:
যে বিশেষণ দিয়ে গুণ বা বৈশিষ্ট্য বোঝায়, তাকে গুণবাচক বিশেষণ বলে। যেমন:চালাক ছেলে, ঠান্ডা পানি।
এখানে ‘চালাক’ ও ‘ঠান্ডা’ হলো গুণবাচক বিশেষণ।
৩. অবস্থাবাচক:
যে বিশেষণ দিয়ে অবস্থা বোঝায়, তাকে অবস্থাবাচক বিশেষণ বলে। যেমন:চলন্ত ট্রেন, তরল পদার্থ।
এখানে ‘চলন্ত’ ও ‘তরল’ অবস্থাবাচক বিশেষণ।
৪. ক্রমবাচক:
যে বিশেষণ দিয়ে ক্রমসংখ্যা বোঝায়, তাকে ক্রমবাচক বিশেষণ বলে। যেমন:এক টাকা, আট দিন।
এখানে ‘এক’ ও ‘আট’ ক্রমবাচক বিশেষণ।
৫. পূরণবাচক:
যে বিশেষণ দিয়ে পূরণসংখ্যা বোঝায়, তাকে পূরণবাচক বিশেষণ বলে। যেমন:তৃতীয় প্রজন্ম, ৩৪তম অনুষ্ঠান।
এখানে ‘তৃতীয়’ ও ‘৩৪তম’ পূরণবাচক বিশেষণ।
৬. পরিমাণবাচক:
যে বিশেষণ দিয়ে পরিমাণ বা আয়তন বোঝায়, তাকে পরিমাণবাচক বিশেষণ বলে। যেমন:আধা কেজি চাল, অনেক লোক।
এখানে ‘আধা কেজি’ ও ‘অনেক’ পরিমাণবাচক বিশেষণ।
৭. উপাদানবাচক:
যে বিশেষণ দিয়ে উপাদান নির্দেশ করে, তাকে উপাদানবাচক বিশেষণ বলে। যেমন:বেলে মাটি, পাথুরে মূর্তি।
এখানে ‘বেলে’ ও ‘পাথুরে’ উপাদানবাচক বিশেষণ।
৮. প্রশ্নবাচক:
যে বিশেষণ দিয়ে প্রশ্নবাচকতা নির্দেশিত হয়, তাকে প্রশ্নবাচক বিশেষণ বলে। যেমন:কেমন গান? কতক্ষণ সময়?
এখানে ‘কেমন’ ও ‘কতক্ষণ’ প্রশ্নবাচক বিশেষণ।
৯. নির্দিষ্টতাবাচক:
যে বিশেষণ দিয়ে বিশেষিত শব্দকে নির্দিষ্ট করা হয়, তাকে নির্দিষ্টতাবাচক বিশেষণ বলে। যেমন:এই দিনে, সেই সময়।
এখানে ‘এই’ ও ‘সেই’ নির্দিষ্টতাবাচক বিশেষণ।
১০. ভাববাচক বিশেষণ:
যেসব বিশেষণ বাক্যের অন্তর্গত অন্য বিশেষণকে বিশেষিত করে, সেসব বিশেষণকে ভাববাচক বিশেষণ বলে। যেমন:‘খুব ভালো খবর’ ও ‘গাড়িটা বেশ জোরে চলছে’ এসব বাক্যে ‘খুব’ এবং ‘বেশ’ ভাববাচক বিশেষণ।
১১. বিধেয় বিশেষণ:
বাক্যের বিধেয় অংশে যেসব বিশেষণ বসে, সেসব বিশেষণকে বিধেয় বিশেষণ বলে। যেমন- ‘লোকটা পাগল’ বা ‘এই পুকুরের পানি ঘোলা’ বাক্য দুটির ‘পাগল’ ও ‘ঘোলা’ বিধেয় বিশেষণ।বহুনির্বাচনি প্রশ্ন : |
---|
প্রশ্ন থেকে
অভিনন্দন!
|
তথ্যসূত্র : |
---|
১. বাংলা ব্যাকরণ ও নির্মিতি: নবম-দশম শ্রেণি, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও
পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, ঢাকা, ২০২৫। ২. প্রমিত বাংলা ভাষার ব্যাকরণ: বাংলা একাডেমি, প্রথম খণ্ড, ঢাকা, ২০১২। ৩. প্রমিত বাংলা ব্যবহারিক ব্যাকরণ: বাংলা একাডেমি, ঢাকা, ২০১৬। ৪. ভাষা শিক্ষা: দি অ্যাটলাস পাবলিশিং হাউস, ঢাকা, অক্টোবর ২০২১-২২। ৫. আধুনিক বাংলা অভিধান: বাংলা একাডেমি, ঢাকা, এপ্রিল, ২০১৮। ৬. ব্যবহারিক বাংলা অভিধান: বাংলা একাডেমি, ঢাকা, ১৮তম, ২০১৫। |