পরিচ্ছেদ- ৩৫: কারক

কারক
কারক

কারক

মূলত ক্রিয়ার সঙ্গে বাক্যের বিশেষ্য ও সর্বনামের যে সম্পর্ক, তাকে কারক বলে। কারক সম্পর্ক বোঝাতে বিশেষ্য ও সর্বনামের সঙ্গে সাধারণত বিভক্তি ও অনুসর্গ যুক্ত হয়ে থাকে।

কারকের প্রকারভেদ

কারক ছয় প্রকার:
কর্তা কারক, কর্ম কারক, করণ কারক, অপাদান কারক, অধিকরণ কারক ও সম্বন্ধ কারক।

কর্তা কারক

ক্রিয়া যার দ্বারা সম্পাদিত হয়, তাকে কর্তাকারক বলে। বাক্যের কর্তা বা উদ্দেশ্যই কর্তা কারক। কর্তা কারকে সাধারণত বিভক্তি যুক্ত হয় না। যেমন:
আমরা নদীর ঘাট থেকে রিকশা নিয়েছিলাম।
অনেকগুলো বন্য হাতি বাগান নষ্ট করে দিল।

কর্তা কারকে কখনো কখনো-এ বিভক্তি যুক্ত হয়। যেমন:
পাগলে কিনা বলে, ছাগলে কিনা খায়।

কর্ম কারক

যাকে আশ্রয় করে কর্তা ক্রিয়া সম্পাদন করে, তাকে কর্ম কারক বলে। বাক্যের মুখ্য কর্ম ও গৌণ কর্ম উভয় ধরনের কর্মই কর্ম কারক হিসেবে গণ্য হয়। সাধারণত মুখ্য কর্ম কারকে বিভক্তি হয় না, তবে গৌণ কর্ম কারকে ‘-কে’ বিভক্তি হয়। যেমন:
সে রোজ সকালে এক প্লেট ভাত খায়।
শিক্ষককে জানাও।
অসহায়কে সাহায্য করো।
রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন সমাজের নানা রকম অন্ধতা, গোঁড়ামি, ও কুসংস্কারকে তীব্র ভাষায় সমালোচনা করে গেছেন।

কাব্যভাষায় কর্মকারকে ‘রে’ বিভক্তি হয়। যেমন:
আমারে তুমি করিবে ত্রাণ এ নহে মোর প্রার্থনা।

করণ কারক

যার দ্বারা বা যে উপায়ে কর্তা ক্রিয়া সম্পাদন করে, তাকে করণ কারক বলে। এই কারকে সাধারণত ‘দ্বারা’, ‘দিয়ে’, ‘কর্তৃক’ ইত্যাদি অনুসর্গ যুক্ত হয়। যেমন:
ভেড়া দিয়ে চাষ করা সম্ভব নয়।
চাষিরা ধারালো কান্তে দিয়ে ধান কাটছে।

অপাদান কারক

যে কারকে ক্রিয়ার উৎস নির্দেশ করা হয়, তাকে অপাদান কারক বলে। এই কারকে সাধারণত ‘হতে’, ‘থেকে’ ইত্যাদি অনুসর্গ শব্দের পরে বসে। যেমন:
জমি থেকে ফসল পাই।
কাপটা উঁচু টেবিল থেকে পড়ে ভেঙে গেল।

অধিকরণ কারক

যে কারকে স্থান, কাল, বিষয় ও ভাব নির্দেশিত হয়, তাকে অধিকরণ কারক বলে। এই কারকে সাধারণত ‘-এ’, ‘-য়’, ‘-য়ে’, ‘-তে’ ইত্যাদি বিভক্তি শব্দের সঙ্গে যুক্ত হয়। যেমন:
বাবা বাড়িতে আছেন।
বিকাল পাঁচটায় অফিস ছুটি হবে।
রাজীব বাংলা ব্যাকরণে ভালো।

সম্বন্ধ কারক

যে কারকে বিশেষ্য ও সর্বনামের সঙ্গে বিশেষ্য ও সর্বনামের সম্পর্ক নির্দেশিত হয়, তাকে সম্বন্ধ কারক বলে। এই কারকে ক্রিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক পরোক্ষ। এই কারকে শব্দের সঙ্গে ‘র’, ‘এর’, ‘-য়ের’, ‘-কার’, ‘-কের’ ইত্যাদি বিভক্তি যুক্ত হয়। যেমন:
ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না।
আমার জামার বোতামগুলো একটু অন্য রকম।
তখনকার দিনে পায়ে হেঁটে চলতে হতো মাইলের পর মাইল।

বহুনির্বাচনি প্রশ্ন :

প্রশ্ন থেকে

অভিনন্দন!
আপনি পেয়েছেন -এর মধ্যে!
যা


তথ্যসূত্র :
১. বাংলা ব্যাকরণ ও নির্মিতি: নবম-দশম শ্রেণি, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, ঢাকা, ২০২৫।
২. প্রমিত বাংলা ভাষার ব্যাকরণ: বাংলা একাডেমি, প্রথম খণ্ড, ঢাকা, ২০১২।
৩. প্রমিত বাংলা ব্যবহারিক ব্যাকরণ, বাংলা একাডেমি, ঢাকা, ২০১৬।
৪. ভাষা শিক্ষা, দি অ্যাটলাস পাবলিশিং হাউস, ঢাকা, অক্টোবর ২০২১-২২।
৫. আধুনিক বাংলা অভিধান: বাংলা একাডেমি, ঢাকা, এপ্রিল, ২০১৮।
৬. ব্যবহারিক বাংলা অভিধান: বাংলা একাডেমি, ঢাকা, ১৮তম, ২০১৫।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url