যৌবনের গান- কাজী নজরুল ইসলাম
|
| যৌবনের গান |
যৌবনের গান
কাজী নজরুল ইসলাম
আমার বলিতে দ্বিধা নাই যে, আমি আজ তাঁহাদেরই দলে, যাঁহারা কর্মী নন-ধ্যানী। যাঁহারা মানব জাতির কল্যাণ সাধন করেন সেবা দিয়া, কর্ম দিয়া, তাঁহারা মহৎ যদি না-ই হন, অন্তত ক্ষুদ্র নন। ইহারা থাকেন শক্তির পেছনে রুধির ধারার মতো গোপন, ফুলের মাঝে মাটির মমতা-রসের মতো অলক্ষ্যে।
আমি কবি- বনের পাখির মতো স্বভাব আমার গান করার। কাহারও ভালো লাগিলেও গাই, ভালো না লাগিলেও গাহিয়া যাই। বায়স-ফিঙে যখন বেচারা গানের পাখিকে তাড়া করে, তীক্ষ্ণ চঞ্চু দ্বারা আঘাত করে, তখনও সে এক গাছ হইতে উড়িয়া আন গাছে গিয়া গান ধরে। তাহার হাসিতে গান, তাহার কান্নায় গান। সে গান করে আপন মনের আনন্দে- যদি তাহাতে কাহারও অলসতন্দ্রা, মোহনিন্দ্রা টুটিয়া যায়, তাহা একান্ত দৈব। যৌবনের সীমা পরিক্রমণ আজও আমার শেষ হয় নাই। কাজেই আমি যে গান গাই, তাহা যৌবনের গান। তারুণ্যের ভরা-ভাদরে যদি আমার গান জোয়ার আনিয়া থাকে, তাহা আমার অগোচরে; যে চাঁদ সাগরে জোয়ার জাগায়, সে হয়ত তাহার শক্তি সম্বন্ধে আজও না-ওয়াকিফ।
আমি বক্তাও নহি। আমি কমবক্তার দলে। বক্তৃতায় যাঁহারা দিগ্বিজয়, বক্তিয়ার খিলজি, তাঁহাদের বাক্যের সৈন্য-সামন্ত অত দ্রুতবেগে কোথা হইতে কেমন করিয়া আসে বলিতে পারি না। তাহা দেখিয়া লক্ষ্মণ সেন অপেক্ষাও আমরা বেশি অভিভূত হইয়া পড়ি। তাঁহাদের বাণী আসে বৃষ্টিধারার মতো অবিরল ধারায়। আমাদের কবিদের বাণী বহে ক্ষীণ ভীরু ঝরনাধারার মতো। ছন্দের দুকুল প্রাণপণে আঁকড়িয়া ধরিয়া সে-সংগীত গুঞ্জন করিতে করিতে বহিয়া যায়। পদ্মা ভাগীরথীর মতো খরস্রোতা যাঁহাদের বাণী, আমি তাঁহাদের বহু পশ্চাতে।
আমার একমাত্র সম্বল- আপনাদের তরুণদের প্রতি আমার অপরিসীম ভালোবাসা, প্রাণের টান। তারুণ্যকে, যৌবনকে, আমি যেদিন হইতে গান গাহিতে শিখিয়াছি সেদিন হইতে বারে বারে সালাম করিয়াছি, সশ্রদ্ধ নমস্কার নিবেদন করিয়াছি, জবাকুসুমসঙ্কাশ তরুণ অরুণকে দেখিয়া প্রথম মানব যেমন করিয়া সশদ্ধ নমস্কার করিয়াছিলেন, আমার প্রথম জাগরণ-প্রভাতে তেমন সশ্রদ্ধ বিস্ময় লইয়া যৌবনকে অন্তরের শ্রদ্ধা নিবেদন করিয়াছি, তাহার স্তবগান গাহিয়াছি। তরুণ অরুণের মতোই যে তারুণ্য তিমির-বিদারী, সে যে আলোর দেবতা। রঙের খেলা খেলিতে তাহার উদয়, রং ছড়াইতে ছড়াইতে তাহার অন্ত। যৌবন-সূর্য যথায় অস্তমিত, দুঃখের তিমির-কুন্তলা নিশীথিনীর সেই তো লীলাভূমি।
আমি যৌবনের পূজারী কবি বলিয়াই যদি আমায় আপনারা আপনাদের মালার মধ্যমণি করিয়া থাকেন, তাহা হইলে আমার অভিযোগ করিবার কিছুই নাই। আপনাদের মহাদান আমি সানন্দে শির নত করিয়া গ্রহণ করিলাম। আপনাদের দলপতি হইয়া নয়, আপনাদের দলভুক্ত হইয়া, সহযাত্রী হইয়া। আমাদের দলে কেহ দলপতি নাই, আজ আমরা শত দিক হইতে শত শত তরুণ মিলিয়া তারুণ্যের শতদল ফুটাইয়া তুলিয়াছি। আমরা সকলে মিলিয়া এক সিদ্ধি, এক ধ্যানের মৃণাল ধরিয়া বিকশিত হইতে চাই।
বার্ধক্য তাহাই- যাহা পুরাতনকে, মিথ্যাকে, মৃত্যুকে আঁকড়িয়া পড়িয়া থাকে; বৃদ্ধ তাহারাই যাহারা মায়াচ্ছন্ন নব মানবের অভিনব জয় যাত্রার শুধু বোঝা নয়, বিঘ্ন; শতাব্দীর নব যাত্রীর চলার ছন্দ ছন্দ মিলাইয়া যাহারা কুচকাওয়াজ করিতে জানে না, পারে না; যাহারা জীব হইয়াও জড়; যাহারা অটল সংস্কারের পাষাণস্তূপ আঁকড়িয়া পড়িয়া আছে। বৃদ্ধ তাহারাই যাহারা নব অরুণোদয় দেখিয়া নিদ্রাভঙ্গের ভয়ে দ্বার রুদ্ধ করিয়া পড়িয়া থাকে। আলোক-পিয়াসী প্রাণচঞ্চল শিশুদের কল-কোলাহলে যাহারা বিরক্ত হইয়া অভিসম্পাত করিতে থকে, জীর্ণ পুঁথি চাপা পড়িয়া যাহাদের নাভিশ্বাস বহিতেছে, অতি জ্ঞানের অগ্নিমান্দ্য যাহারা আজ কঙ্কালসার- বৃদ্ধ তাহারাই। ইহাদের ধর্মই বার্ধক্য। বার্ধক্যকে সব সময় বয়সের ফ্রেমে বাঁধা যায় না। বহু যুবককে দেখিয়াছি যাহাদের যৌবনের উর্দির নিচে বার্ধক্যের কঙ্কাল মূর্তি। আবার বহু বৃদ্ধকে দেখিয়াছি- যাঁহাদের বার্ধক্যের জীর্ণাবরণের তলে মেঘলুপ্ত সূর্যের মতো প্রদীপ্ত যৌবন। তরুণ নামের জয়-মুকুট শুধু তাহারই- যাহার শক্তি অপরিমাণ, গতিবেগ ঝঞ্ঝার ন্যায়, তেজ নির্মেঘ আষাঢ় মধ্যাহ্নের মার্তণ্ডপ্রায়, বিপুল যাহার আশা, ক্লান্তিহীন যাহার উৎসাহ, বিরাট যাহার ঔদার্য, অফুরন্ত যাহার প্রাণ, অটল যাহার সাধনা, মৃত্যু যাহার মুঠিতলে। তারুণ্য দেখিয়াছি আরবের বেদুইনদের মাঝে, তারুণ্য দেখিয়াছি মহাসমরের সৈনিকের মুখে, কালাপাহাড়র অসিতে, কামাল-করিম-মুসোলিনি- সানইয়াৎ-লেনিনের শক্তিতে। যৌবন দেখিয়াছি তাহাদের মাঝে- যাহারা বৈমানিকরূপে অনন্ত আকাশের সীমা খুঁজিতে গিয়া প্রাণ হারায়, আবিষ্কারকরূপে নব-পৃথিবীর সন্ধানে গিয়া আর ফিরে না, গৌরীশৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘার শীর্ষদেশ অধিকার করিতে গিয়া যাহারা তুষার-ঢাকা পড়ে, অতল সমুদ্রের নীল মঞ্জুষার মণি আহরণ করিতে গিয়া সলিলসমাধি লাভ করে, মঙ্গলগ্রহে, চন্দ্রলোকে যাইবার পথ আবিষ্কার করিতে গিয়া নিরুদ্দেশ হইয়া যায়। পবন-গতিকে পশ্চাতে ফেলিয়া যাহারা উড়িয়া যাইতে চায়, নব নব গ্রহ-নক্ষত্রের সন্ধান করিতে করিতে যাহাদের নয়ন-মণি নিভিয়া যায়- যৌবন দেখিয়াছি সেই দুরন্তদের মাঝে। যৌবনের মাতৃরূপ দেখিয়াছি- শব বহন করিয়া যখন সে যায় শ্মশানঘাটে, গোরস্থানে, অনাহারে থাকিয়া যখন সে অন্ন পরিবেশন করে দুর্ভিক্ষ-বন্যা-পীড়িতদের মুখে, বন্ধুহীন রোগীর শয্যাপার্শ্বে যখন সে রাত্রির পর রাত্রি জাগিয়া পরিচর্যা করে, যখন সে পথে পথে গান গাহিয়া ভিখারি সাজিয়া দুর্দশাগ্রস্তদের জন্য ভিক্ষা করে, যখন দুর্বলের পাশে বল হইয়া দাঁড়ায়, হতাশের বুকে আশা জাগায়।
ইহাই যৌবন, এই ধর্ম যাহাদের তাহারাই তরুণ। তাহাদের দেশ নাই, জাতি নাই, অন্য ধর্ম নাই। দেশ-কাল- জাতি-ধর্মের সীমার ঊর্ধ্বে ইহাদের সেনানিবাস। আজ আমরা মুসলিম তরুণেরা যেন অকুণ্ঠিত চিত্তে মুক্তকণ্ঠে বলিতে পারি- ধর্ম আমাদের ইসলাম, কিন্তু প্রাণের ধর্ম আমাদের তারুণ্য, যৌবন। আমরা সকল দেশের, সকল জাতির, সকল ধর্মের, সকল কালের। আমরা মুরিদ যৌবনের। এই জাতি-ধর্ম-কালকে অতিক্রম করিতে পারিয়াছে যাঁহাদের যৌবন, তাঁহারাই আজ মহামানব, মহাত্মা, মহাবীর। তাহাদিগকে সকল দেশের সকল ধর্মের সকল লোক সমান শ্রদ্ধা করে।
পথ-পার্শ্বের ধর্ম-অট্টালিকা আজ পড় পড় হইয়াছে, তাহাকে ভাঙিয়া ফেলিয়া দেওয়াই আমাদের ধর্ম, ঐ জীর্ণ অট্টালিকা চাপা পড়িয়া বহু মানবের মৃত্যুর কারণ হইতে পারে। যে-ঘর আমাদের আশ্রয় দান করিয়াছে, তাহা যদি সংস্কারাতীত হইয়া আমাদেরই মাথায় পড়িবার উপক্রম করে, তাহাকে ভাঙিয়া নূতন করিয়া গড়িবার দুঃসাহস আছে একা তরুণেরই। খোদার দেওয়া এই পৃথিবীর নিয়ামত হইতে যে নিজেকে বঞ্চিত রাখিল, সে যত মোনাজাতই করুক, খোদা তাহা কবুল করিবেন না। খোদা হাত দিয়াছেন বেহেশত ও বেহেশতি চিজ অর্জন করিয়া লইবার জন্য, ভিখারির মতো হাত তুলিয়া ভিক্ষা করিবার জন্য নয়। আমাদের পৃথিবী আমরা আমাদের মনের মতো করিয়া গড়িয়া লইব। ইহাই হউক তরুণের সাধনা।
![]() |
| যৌবনের গান |
| ‘যৌবনের গান’ প্রবন্ধের উৎস নির্দেশ : |
|---|
| ১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দে সিরাজগঞ্জে মুসলিম যুব সমাজের অভিনন্দনের উত্তরে তাদের উদ্দেশ্যে কাজী নজরুল ইসলাম যে প্রাণোচ্ছল ভাষণ দিয়েছিলেন ‘যৌবনের গান’ রচনাটি তারই পরিমার্জিত লিখিত রূপ। |
| ‘যৌবনের গান’ প্রবন্ধের শব্দার্থ ও টীকা : |
|---|
|
➠ দ্বিধা- সংকোচ, সংশয়, কুণ্ঠা। ➠ ধ্যানী- ধ্যানকারী। গভীর চিন্তা করে এমন। কোনো বিষয়ে প্রগাঢ় ভাবনারত ব্যক্তি। ➠ রুধির ধারা- রক্তপ্রবাহ। ➠ অলক্ষ্যে- দৃষ্টির অগোচরে। ➠ বায়স- কাক। ➠ ফিঙে- একপ্রকার কালো পাখি। ➠ বেচারা গানের পাখিকে- কোকিলকে। ➠ চঞ্চু- ঠোঁট। ➠ অলসতন্দ্রা- আলস্য থেকে সৃষ্ট ঘুমের ভাব। ➠ মোহনিন্দ্রা- আসক্তি বা মোহরূপ নিদ্রা, অচেতনতা, জড়তা। ➠ দৈব- আকস্মিক। ➠ পরিক্রমণ- পরিভ্রমণ, প্রদক্ষিণ। ➠ ভরা-ভাদরে- পরিপূর্ণ ভাদ্রে। পরিপূর্ণ অবস্থায়। ভাদ্র মাসে নদীনালা বর্ষার জলে যেমন কানায় কানায় ভরে ওঠে তেমনি। ➠ অগোচরে- অলক্ষে; দৃষ্টির বাইরে। ➠ না-ওয়াকিফ- অনভিজ্ঞ, অজ্ঞাত। ➠ কমবক্তা- অল্পভাষী, যিনি কম কথা বলেন। ➠ বখতিয়ার খিলজি- মুহম্মদ বখতিয়ার খিলজি ছিলেন ইতিহাসখ্যাত আফগান সেনানায়ক। তিনি মাত্র সতেরো জন সৈন্য নিয়ে অতর্কিত আক্রমণে নদীয়া দখল করেন। রাজা লক্ষ্মণ সেন ভয়ে পলায়ন করলে বখতিয়ার খিলজি বাংলাদেশে প্রথম মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠা করেন (১২০৩/০৪)। এখানে কৌতুকভরে বক্তৃতা প্রদানকারীদেরকে ‘বখতিয়ার খিলজি’ বলা হয়েছে। ➠ লক্ষ্মণ সেন- বাংলার সেন বংশের শেষ রাজা। বখতিয়ার খিলজি মাত্র সতেরো জন অশ্বারোহীসহ রাজপ্রাসাদ আক্রমণ করলে তিনি পেছন দরজা দিয়ে পালিয়ে আত্মরক্ষা করেন। এভাবে বাংলায় সেন বংশের পতন এবং মুসলিম শাসনের সূচনা হয়। ➠ অভিভূত- ভাবাবেগে বিহ্বল, ভাবাবিষ্ট। ➠ অবিরল ধারায়- অজস্র ধারা। ➠ ছন্দের দুকুল- ভাব ও ভাষা বোঝাতে ব্যবহৃত। ➠ খরস্রোতা- অত্যন্ত বেগবান প্রবাহ। ➠ সম্বল- অবলম্বন; উপায়। ➠ অপরিসীম- অসীম; অশেষ। ➠ তারুণ্য- তরুণ অবস্থা/বয়স। ➠ জবা- প্রধানত গ্রীষ্মমণ্ডলীয় জাত গুল্মজাতীয় মাঝারি আকৃতির উদ্ভিদ বা তার পাঁচটি পাপড়িযুক্ত উজ্জ্বল লাল গোলাপি হলুদ প্রভৃতি রঙের গন্ধহীন ফুল (আদিনিবাস: চীন); ওড়পুষ্প। ➠ কুসুম- ফুল; পুষ্প। ➠ সঙ্কাশ- সদৃশ; তুল্য। ➠ জবাকুসুমসঙ্কাশ- জবাফুলের মতো। ➠ সশদ্ধ- ভক্তি ও শ্রদ্ধাপূরণ; শ্রদ্ধা সহকারে। ➠ নিবেদন- উৎসর্গ; বিনীত নিবেদন। ➠ প্রথম জাগরণ-প্রভাতে- সচেতনতার সূচনালগ্নে। ➠ বিস্ময়- আশ্চর্য; চমৎকৃত ভাব বা অবস্থা। ➠ স্তবগান- প্রশংসা কীর্তন গান। ➠ অরুণ- সূর্য। ➠ অস্তমিত- অদৃশ্য হওয়া। ➠ তিমিরবিদারী- অন্ধকার বিদীর্ণ করে যা, সূর্য। ➠ আলোর দেবতা- সূর্য। ➠ উদয়- উন্নতি; প্রকাশ; আবির্ভাব। ➠ অন্ত- মৃত্যু; অবসান। ➠ অস্তমিত-অদৃশ্য হয়েছে এমন। ➠ তিমির- অন্ধকার। ➠ কুন্তলা- কেশবিশিষ্টা। ➠ তিমিরকুন্তলা- অন্ধকার যার চুল, রাত্রি। ➠ নিশীথিনী- গভীর রাত। ➠ লীলাভূমি- বিচরণস্থান, ক্রীড়াক্ষেত্র। ➠ পূজারী- উপাসক; পূজক। ➠ মধ্যমণি- প্রধান ব্যক্তি। ➠ শির- মাথা; উপরিভাগ। ➠ দলপতি- দলনেতা। ➠ শতদল- পদ্মফুল। ➠ সিদ্ধি- ঐশ্বর্য; দক্ষতা; সাফল্য। ➠ মৃণাল- সূক্ষ্ম আলযুক্ত পদ্মের নাল বা ডাঁটা। পদ্মের কন্দ। ➠ বিকশিত- প্রকাশি; প্রস্ফুটিত। ➠ আঁকড়িয়া- জড়িয়ে ধরে। ➠ মায়াচ্ছন্ন- ভুল-ভ্রান্তি নিয়ে পড়ে থাকা।(মায়া+আচছন্ন) ➠ অভিনব- নব উদ্ভাসিত; নতুন; অপূর্ব। ➠ কুচকাওয়াজ- সৈনিকদের দলবদ্ধ ব্যায়াম ও রণকৌশলাদি অনুশীলন। ➠ জীর্ণ পুঁথি চাপা পড়িয়া- সংস্কার ও প্রথাবদ্ধতার চাপে পিষ্ট হয়ে। ➠ নাভিশ্বাস- মৃত্যুকালীন শ্বাসকষ্ট। মরণাপন্ন অবস্থা। ➠ অগ্নিমান্দ্য- খাদ্যদ্রব্য পাকস্থলীতে হজম না হওয়ার রোগ, অজীর্ণতা, ক্ষুধামন্দা। ➠ উর্দি- কর্মচারীদের জন্য নির্দিষ্ট বিশেষ পোশাক। ➠ জীর্ণাবরণ- জরাজীর্ণ আচ্ছাদন। ➠ মার্তণ্ডপ্রায়- সূর্যের মতো। ➠ কালাপাহাড়- ব্রাহ্মণ থেকে মুসলমানে ধর্মান্তরিত বিখ্যাত মুসলিম যোদ্ধা। সুলেমান ও দায়দ কররানির সেনাপতি, ওরফে রাজু। ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর প্রচণ্ড হিন্দু বিদ্বেষী হন। ১৫৬৮ খ্রিষ্টাব্দে পুরী আক্রমণ করে বহু মন্দির ও দেবদেবীর মূর্তি ধ্বংস করেন। ইতিহাসে তিনি বিকট, ভয়ংকর ও প্রলয়ংকর ধ্বংসের প্রতীক হয়ে আছেন। ➠ কামাল- মুস্তাফা কামাল আতাতুর্ক পাশা (১৮৮১-১৯৩৮)। আধুনিক তুরস্কের জনক ও তুরস্ক প্রজাতন্ত্রের প্রথম রাষ্ট্রপতি। তাঁর পরিচালনা ও নেতৃত্বে তুরস্ক আসন্ন পতনের হাত থেকে রক্ষা পায় এবং সত্যিকার উন্নতির পথে অগ্রসর হয়। ধর্ম, সমাজ, শিক্ষা সবক্ষেত্রেই তিনি আমূল ও বৈপ্লবিক সংস্কার সাধন করেন। আইন-কানুন সংস্কার, আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থার প্রবর্তন, নারীর সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা, পর্দা প্রথার উচ্ছেদ, স্বাধীন অর্থনৈতিক বিকাশ, নিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতি ইত্যাদির মাধ্যমে তিনি আধুনিক তুরস্কের ভিত্তি স্থাপন করেন। দেশবাসী কৃতজ্ঞতার নিদর্শন হিসেবে তাঁকে ‘আতাতুর্ক’ বা ‘তুরস্কের জনক’ উপাধিতে ভূষিত করেন। ➠ মুসোলিনী- সিনর বেনিতো মুসোলিনি (১৮৮৩-১৯৪৫) ইতালির একনায়ক এবং সেখানকার ফ্যাসিবাদী দলের নেতা ছিলেন। উগ্র জাত্যভিমান থেকে তিনি ইতালিকে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ শক্তিশালী জাতিতে পরিণত করার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করেন। সমগ্র জাতীয় জীবনে কঠোর নিয়ন্ত্রণ এবং আগ্রাসী বৈদেশিক নীতির অনুসারী মুসোলিনী ১৯৩৫ সালে আবিসিনিয়া আক্রমণ করেন। এই ঘটনার সূত্রে ফ্যাসিবাদী হিটলারের সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব হয়। ১৯৪০ সালে জার্মানির মিত্র হিসেবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে তাঁর নেতৃত্বে ইতালি বৃটেন ও ফ্রান্সের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। যুদ্ধে ইতালির পরাজয় হলে তিনি পদচ্যুত ও বন্দি হন। পরে মুক্তি পেলেও আততায়ীর হাতে নিহত হন। ➠ সানইয়াত- সান-ইয়াত-সেন (১৮৬৭-১৯২৫) চীনের জননন্দিত বিপ্লবী রাজনীতিবিদ ও নব্য চীনের জন্মদাতা। উনিশ শতকের শেষ দিকে এবং বিশ শতকের গোড়ায় চীনের মাঞ্চু সম্রাটদের শাসন-শোষণ নির্যাতনের বিরুদ্ধে বেশ কিছু বিপ্লবী আন্দোলন হয়। সান-ইয়াত-সেন এগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন। ১৯১২ সালের বিপ্লবে মাঞ্চু সাম্রাজ্যের পতন হলে তিনি নানকিং প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। দ্বিতীয় বিপ্লব ব্যর্থ হওয়ায় তাঁকে নির্বাসনে যেতে হয়। পরে দেশে প্রত্যাবর্তন করে তিনি বিভক্ত চীনের দক্ষিণ চীন প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি হন। সাম্যবাদ ও বিপ্লবে সুগভীর আস্থা, চীনের জাতীয় কমূসূচি প্রণয়ন, মাঞ্চু রাজতন্ত্রের বিরোধিতা এবং সংস্কার নীতির জন্য চীনের ইতিহাসে তাঁর নাম অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে। ➠ লেনিন- তাঁর নেতৃত্বে ১৯১৭ সালে রুশ বিপ্লবের সাফল্যে জারের রাজতন্ত্রের পতন ঘটে এবং পৃথিবীর প্রথম সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্ম হয়। আমৃত্যু তিনি ছিলেন সোভিয়েত রাষ্ট্রের ভ্লাদিমির ইলিচ উইলিয়ানোফ (১৮৭০-১৯২৪) বিপ্লবী কাজে জড়িত থাকাকালে ‘লেনিন’ ছদ্মনাম নেন তিনি রুশ বিপ্লবের সংগঠক, পরিকল্পক ও নেতা। তাঁর রাষ্ট্রপ্রধান। ব্যাংক ও সম্পত্তি জাতীয়করণ, দরিদ্র জনগণের মধ্যে ভূমি বণ্টন, গণশিক্ষার প্রসার, সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির মূল ভিত্তি রচনার মাধ্যমে তিনি সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের রূপকার হিসেবে বিশ্ববিখ্যাত হয়ে আছেন। তিনি ছিলেন প্রথম সফল মার্কসবাদী বিপ্লবী, মার্কসবাদী দর্শনের প্রথম কাতারের তাত্ত্বিক। তাঁর রচিত গ্রন্থাবলি ইতিহাস, দর্শন, অর্থনীতি ও সমাজতত্ত্ব সম্পর্কে তাঁর প্রগাঢ় জ্ঞান ও বিশ্লেষণ-শক্তির পরিচয়বহ হয়ে আছে। ➠ নীল মঞ্জুষার মণি- সমুদ্রের এক রকম মূল্যবান রত্নপাথর। ➠ যৌবনের মাতৃরূপ- যৌবনের কোমল সেবাপরায়ণ দিক। ➠ মুরিদ- শিষ্য। ➠ সংস্কারাতীত- সংস্কার বা মেরামত করা সম্ভব নয় এমন। ➠ নিয়ামত- ধন-সম্পদ; অনুগ্রহ। ➠ সাধনা- চেষ্টা; প্রয়াস। |
![]() |
| যৌবনের গান |
| ‘যৌবনের গান’ প্রবন্ধের পাঠ-পরিচিতি : |
|---|
১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দে সিরাজগঞ্জে মুসলিম যুব সমাজের অভিনন্দনের উত্তরে তাদের উদ্দেশ্যে কাজী নজরুল ইসলাম যে প্রাণোচ্ছল ভাষণ দিয়েছিলেন ‘যৌবনের গান’ রচনাটি তারই পরিমার্জিত লিখিত রূপ। এই অভিভাষণে কবি দুরন্ত-দুর্বার যৌবনের প্রশন্তি উচ্চারণ করেছেন। কারণ যৌবন হচ্ছে অফুরন্ত প্রাণশক্তির আধার। যৌবন মানুষের জীবনকে করে গতিশীল ও প্রত্যাশাময়। দুর্বার উদ্দীপনা, ক্লান্তিহীন উদ্যম, অপরিসীম ঔদার্য, অফুরন্ত প্রাণচঞ্চলতা ও অটল সাধনার প্রতীক যৌবন মৃত্যুকে তুচ্ছ করে সংস্কারের বেড়াজাল ছিন্নভিন্ন করে সকল বাধা পেরিয়ে এগিয়ে যায় সমাজ-প্রগতি ও নতুন স্বপ্নময় মুক্তজীবনের পথে। আর বিপন্ন মানবতার পাশে সে দাঁড়ায় সেবাব্রতী ভূমিকা নিয়ে। পক্ষান্তরে রক্ষণশীলতা, জড়তা, সংস্কারাচ্ছন্নতা ও পশ্চাৎপদতাময় বার্ধক্য বাধা হয়ে দাঁড়ায় জীবনের প্রাণবন্ত অগ্রগতির পথে। তাই স্বভাব-বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে যে যৌবন দেশ-জাতি-কাল ও ধর্মের বাঁধন মানে না সেই যৌবন-শক্তিকে কবি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন সমন্ত জীর্ণ পুরানো সংস্কারকে ধ্বংস করে মনের মতো নতুন জগৎ রচনার সাধনায় অগ্রসর হতে। |
| ‘যৌবনের গান’ প্রবন্ধের লেখক পরিচিতি : |
|---|
|
কাজী নজরুল ইসলাম ১৮৯৯ খ্রিষ্টাব্দের ২৫শে মে, ১৩০৬ সনের ১১ই জ্যৈষ্ঠ,
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে
জন্মগ্রহণ করেন। ছেলেবেলায় তিনি লেটো গানের দলে যোগ দেন। পরে বর্ধমান ও
ময়মনসিংহের ত্রিশাল থানার দরিরামপুর হাই স্কুলে লেখাপড়া করেন। ১৯১৭ সালে
তিনি সেনাবাহিনীর বাঙালি পল্টনে যোগ দিয়ে করাচি যান। সেখানেই তাঁর সাহিত্য
জীবনের সূচনা ঘটে। তাঁর লেখায় তিনি সামাজিক অবিচার ও পরাধীনতার বিরুদ্ধে
সোচ্চার হয়েছেন। এজন্য তাঁকে 'বিদ্রোহী কবি' বলা হয়। বাংলা সাহিত্য জগতে
তাঁর আবির্ভাব এক নতুন দিগন্তের উন্মোচন করে। মাত্র তেতাল্লিশ বছর বয়সে কবি
দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হয়ে বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেন। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার
পর অসুস্থ কবিকে ঢাকায় আনা হয় এবং পরে তাঁকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান
করা হয়। তাঁকে স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় কবির মর্যাদায় ভূষিত করা
হয়। তাঁর রচিত কাব্যগুলোর মধ্যে
অগ্নি-বীণা, বিষের বাঁশি, ছায়ানট, প্রলয়-শিখা, চক্রবাক,
সিন্ধু-হিন্দোল
বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
ব্যথার দান, রিক্তের বেদন, শিউলিমালা, মৃত্যুক্ষুধা ইত্যাদি তাঁর
রচিত গল্প ও উপন্যাস।
যুগবাণী, দুর্দিনের যাত্রী, রুদ্র-মঙ্গল ও রাজবন্দীর জবানবন্দী
তাঁর উল্লেখযোগ্য প্রবন্ধগ্রন্থ। ১৯৭৬ সালের ২৯শে আগস্ট কবি ঢাকায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদ প্রাঙ্গণে তাঁকে পরিপূর্ণ সামরিক মর্যাদায় সমাহিত করা হয়। |
| ‘যৌবনের গান’ প্রবন্ধের বহুনির্বাচনি প্রশ্ন : |
|---|
প্রশ্ন থেকে
অভিনন্দন!
|
| ‘যৌবনের গান’ প্রবন্ধের জ্ঞানমূলক প্রশ্ন : |
|---|
| প্রশ্ন- ১: কবি কাজী নজরুল ইসলামকে বিদ্রোহী কবি বলার কারণ কী? উত্তর: কবি কাজী নজরুল ইসলামকে বিদ্রোহী কবি বলার কারণ তিনি সামাজিক অবিচার ও পরাধীনতার বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন বলে। প্রশ্ন- ২: কত খ্রিষ্টাব্দে কবি কাজী নজরুল ইসলামকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান করা হয়? উত্তর: ১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দে কবি কাজী নজরুল ইসলামকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান করা হয়। প্রশ্ন- ৩: কাকে স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় কবির মর্যাদায় ভূষিত করা হয়? উত্তর : কাজী নজরুল ইসলামকে স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় কবির মর্যাদায় ভূষিত করা হয়। প্রশ্ন- ৪: প্রবন্ধকার কাদের মাঝে যৌবনের মাতৃরূপ দেখেছেন? উত্তর: প্রবন্ধকার তরুণদের মাঝে যৌবনের মাতরূপ দেখেছেন। প্রশ্ন- ৫: ‘যৌবনের গান’ প্রবন্ধে উল্লিখিত শক্তির পেছনে রুধির ধারার মতো গোপনে থাকেন কারা? উত্তর : ‘যৌবনের গান’ প্রবন্ধে উল্লিখিত শক্তির পেছনে রুধির ধারার মতো তাঁরা গোপনে থাকেন যাঁরা কর্মী নন ধ্যানী। প্রশ্ন- ৬: ‘যৌবনের গান’ প্রবন্ধের লেখকের মতে দেশ, জাতি ও ধর্ম নেই কাদের? উত্তর: ‘যৌবনের গান’ প্রবন্ধের লেখকের মতে দেশ, জাতি ও ধর্ম নেই তরুণদের। প্রশ্ন- ৭: কার নতুন করে গড়ার দুঃসাহস আছে? উত্তর: তরুণের নতুন করে গড়ার দুঃসাহস আছে। প্রশ্ন- ৮: ‘অন্ধকার যার চুল’ তাকে এক কথায় কী বলে? উত্তর: ‘অন্ধকার যার চুল’ তাকে এক কথায় তিমিরকুন্তলা বলে। প্রশ্ন- ৯: ‘তিমিরকুন্তলা’ শব্দের অর্থ কী? উত্তর: ‘তিমিরকুন্তলা’ শব্দের অর্থ রাত্রি। প্রশ্ন- ১০: কত খ্রিষ্টাব্দে কাজী নজরুল ইসলাম সিরাজগঞ্জে মুসলিম যুবসমাজের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়েছিলেন? উত্তর: ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে কাজী নজরুল ইসলাম সিরাজগঞ্জে মুসলিম যুবসমাজের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়েছিলেন। প্রশ্ন- ১১:‘অলক্ষ্যে’ শব্দটির অর্থ কী? উত্তর: ‘অলক্ষ্যে’ শব্দটির দৃষ্টির অগোচরে। প্রশ্ন- ১২: ‘না-ওয়াকিফ’ অর্থ কী? উত্তর: ‘না-ওয়াকিফ’ অর্থ অনভিজ্ঞ। প্রশ্ন- ১৩: ‘অগ্নিমান্দ্য’ কী? উত্তর: ‘অগ্নিমান্দ্য’ হলো পাকস্থলীতে খাদ্যদ্রব্য হজম না হওয়ার রোগ। প্রশ্ন- ১৪: দৈব অর্থ কী? উত্তর: দৈব অর্থ আকস্মিক। প্রশ্ন-১৫: ১৯১৭ সালে রুশ বিপ্লবের সংগঠক কে? উত্তর: ১৯১৭ সালে রুশ বিপ্লবের সংগঠক লেনিন। প্রশ্ন-১৬: যৌবনের পূজারি কে? উত্তর: যৌবনের পূজারি কবি কাজী নজরুল ইসলাম। প্রশ্ন-১৭: কত খ্রিস্টাব্দে রুশ বিপ্লব সংঘটিত হয়? উত্তর: ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে রুশ বিপ্লব সংঘটিত হয়। প্রশ্ন-১৮: কবির স্বভাব কী? উত্তর: কবির স্বভাব বনের পাখির মতো গান করা। প্রশ্ন-১৯: কবিদের বাণী কীভাবে বহে? উত্তর: কবিদের বাণী বহে ক্ষীণ ভীরু ঝরনাধারার মতো। প্রশ্ন-২০: কাদের প্রতি লেখক অপরিসীম টান অনুভব করেন? উত্তর: তরুণদের প্রতি লেখক অপরিসীম টান অনুভব করেন। প্রশ্ন-২১: অতিজ্ঞানের অগ্নিমান্দ্যে কারা কঙ্কালসার? উত্তর: অতিজ্ঞানের অগ্নিমান্দ্যে বৃদ্ধরা কঙ্কালসার। প্রশ্ন- ২২: কালাপাহাড় কে? উত্তর: কালাপাহাড় ব্রাহ্মণ থেকে মুসলমানে ধর্মান্তরিত বিখ্যাত মুসলিম যোদ্ধা। প্রশ্ন- ২৩: কবির মতে খোদা আমাদের হাত দিয়েছেন কেন? উত্তর: কবির মতে খোদা আমাদের হাত দিয়েছেন বেহেশত ও বেহেশতি চিজ অর্জন করার জন্য। প্রশ্ন- ২৪: ‘যৌবনের গান’ রচনাটি কোনটির পরিমার্জিত রূপ? উত্তর: সিরাজগঞ্জে যুবসমাজের উদ্দেশ্যে দেওয়া কাজী নজরুল ইসলামের অভিভাষণের পরিমার্জিত রূপ। প্রশ্ন- ২৫: কারা ধ্যানের মৃণাল ধরে বিকশিত হতে চায়? উত্তর: তরুণরা ধ্যানের মৃণাল ধরে বিকশিত হতে চায়। প্রশ্ন- ২৬: ‘ভরা-ভাদরে’-এর মানে কী? উত্তর: ‘ভরা-ভাদরে’-এর মানে হচ্ছে পরিপূর্ণ ভাদ্রে (ভাদ্র মাসে)। প্রশ্ন- ২৭: যৌবনের গান' প্রবন্ধে কে কমবক্তার দলে? উত্তর: ‘যৌবনের গান' প্রবন্ধে লেখক কমবক্তার দলে। প্রশ্ন- ২৮: ‘কমবক্তা’ কথাটির মানে কী? উত্তর: ‘কমবক্তা’ কথাটির মানে হচ্ছে- যিনি কম কথা বলেন। প্রশ্ন- ২৯: বাংলাদেশে প্রথম মুসলমান রাজত্ব বিস্তারকারীর নাম কী? উত্তর: বাংলাদেশে প্রথম মুসলমান রাজত বিস্তারকারীর নাম মুহম্মদ বখতিয়ার খিলজি। প্রশ্ন- ৩০: ‘বখতিয়ার খিলজি’-এর পুরো নাম কী? উত্তর: ‘বখতিয়ার খিলজি’-এর পুরো নাম মুহম্মদ বখতিয়ার খিলজি। প্রশ্ন- ৩১: বখতিয়ার খিলজি কে ছিলেন? উত্তর: বখতিয়ার খিলজি ছিলেন ইতিহাসখ্যাত আফগান সেনানায়ক। প্রশ্ন- ৩২: বখতিয়ার খিলজি কতজন সৈন্য নিয়ে নদীয়া আক্রমণ করে দখল করেন? উত্তর: বখতিয়ার খিলজি মাত্র সতেরো জন সৈন্য নিয়ে নদীয়া আক্রমণ করে দখল করেন। প্রশ্ন- ৩৩: বাংলার সেন বংশের শেষ রাজা কে? উত্তর: বাংলার সেন বংশের শেষ রাজা লক্ষ্মণ সেন। প্রশ্ন- ৩৪: সিনর বেনিতো মুসোলিনি কত সালে আবিসিনিয়া আক্রমণ করেন? উত্তর: সিনর বেনিতো মুসোলিনি ১৯৩৫ সালে আবিসিনিয়া আক্রমণ করেন। প্রশ্ন- ৩৫: ১৯১২ সালে কে নানকিং প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন? উত্তর: ১৯১২ সালে সান-ইয়াত-সেন নানকিং প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। প্রশ্ন- ৩৬: কে আমৃত্যু সোভিয়েত রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান ছিলেন? উত্তর: লেনিন আমৃত্যু সোভিয়েত রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান ছিলেন। প্রশ্ন- ৩৭: ‘ভ্লাদিমির ইলিচ’ কখন ‘লেনিন’ ছদ্মনাম নেন? উত্তর : বিপ্লবী কাজে জড়িত থাকাকালে ভ্লাদিমির ইলিচ ‘লেনিন’ ছদ্মনাম নেন। প্রশ্ন- ৩৮: ১৯১৭ সালে কার নেতৃত্বে জারের রাজতন্ত্রের পতন ঘটে? উত্তর : ১৯১৭ সালে লেনিনের নেতৃত্বে রুশ বিপ্লবের সাফল্যে জারের রাজতন্ত্রের পতন ঘটে। প্রশ্ন- ৩৯: ‘লেনিন’ আমৃত্যু কোন রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান ছিলেন? উত্তর : ‘লেনিন’ আমৃত্যু সোভিয়েত রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান ছিলেন। প্রশ্ন- ৪০: ‘তিমিরবিদারী’ শব্দের অর্থ কী? উত্তর: ‘তিমিরবিদারী’ শব্দের অর্থ সূর্য। রশ্ন- ৪১: বাংলাদেশে প্রথম মুসলমান রাজত্ব বিস্তার হয় কত সালে? উত্তর: বাংলাদেশে প্রথম মুসলমান রাজত্ব বিস্তার হয় ১২০৩/০৪ সালে। |
| ‘যৌবনের গান’ প্রবন্ধের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন : |
|---|
|
১. ‘ফুলের মাঝে মাটির মমতা-রসের মতো অলক্ষ্যে।’-উক্তিটির মাধ্যমে
প্রাবন্ধিক কী বোঝাতে চেয়েছেন?
২. কালাপাহাড় চরিত্রে যৌবনের কোন রূপটি ধরা পড়েছে? ব্যাখ্যা করো।
৩. ‘আমাদের দলে কেহ দলপতি নাই।’- উক্তিটি ব্যাখ্যা করো।
৪. ‘রঙের খেলা খেলিতে তাহার উদয়, রং ছড়াইতে হড়াইতে তাহার অন্ত।’ কথাটি
ব্যাখ্যা করো।
৫. ‘আমরা সকলে মিলিয়া এক সিন্ধি, এক ধ্যানের মৃণাল ধরিয়া বিকশিত হইতে
চাই।’ কথাটির মাধ্যমে প্রাবন্ধিক কী বোঝাতে চেয়েছেন?
৬. বার্ধক্য বলতে প্রাবন্ধিক কী বুঝিয়েছেন? ব্যাখ্যা করো।
৭. যৌবনের স্বরূপ ব্যাখ্যা করো।
৮. ‘আমার প্রথম জাগরণ প্রভাতে’- বলতে প্রাবন্ধিক কী বুঝিয়েছেন?
৯. ‘যৌবন-সূর্য্য যথায় অস্তমিত, দুঃখের তিমির-কুণ্ডলা নিশীথিনীর পানিই।
সেই তো লীলাভূমি।’- ব্যাখ্যা করো।
১০. লেনিনের মাঝে প্রাবন্ধিক যৌবনের কোন বৈশিষ্ট্য দেখতে পান? ব্যাখ্যা
করো।
১১. ‘ফুলের মাঝে মাটির মমতা-রসের মতো অলক্ষ্যে।’- উক্তিটির মাধ্যমে
প্রাবন্ধিক কী বোঝাতে চেয়েছেন?
১২. কালাপাহাড় চরিত্রে যৌবনের কোন রূপটি ধরা পড়েছে? ব্যাখ্যা করো।
১৩. ‘আমাদের দলে কেহ দলপতি নাই।’- উক্তিটি ব্যাখ্যা করো
১৪. বার্ধক্য বলতে প্রাবন্ধিক কী বুঝিয়েছেন? ব্যাখ্যা করো।
১৫. যৌবনের স্বরূপ ব্যাখ্যা করো।
১৬. ‘যৌবন-সূর্য যথায় অস্তমিত, দুঃখের তিমির-কুন্তলা নিশীথিনীর সেই তো
লীলাভূমি।’-ব্যাখ্যা করো।
১৭. ‘রঙের খেলা খেলিতে তাহার উদয়, রং ছড়াইতে ছড়াইতে তাহার অন্ত।’- কথাটি
ব্যাখ্যা করো।
১৮. ‘আমরা সকলে মিলিয়া এক সিদ্ধি, এক ধ্যানের মৃণাল ধরিয়া বিকশিত হইতে
চাই।’ কথাটির মাধ্যমে প্রাবন্ধিক কী বোঝাতে চেয়েছেন?
১৯. ‘আমার প্রথম জাগরণ প্রভাতে’- বলতে প্রাবন্ধিক কী বুঝিয়েছেন?
২০. লেনিনের মাঝে প্রাবন্ধিক যৌবনের কোন বৈশিষ্ট্য দেখতে পান। ব্যাখ্যা
করো।
২১. ‘তাহাদের দেশ নাই, জাতি নাই, অন্য ধর্ম নাই।’- উক্তিটি |
| ‘যৌবনের গান’ প্রবন্ধের সৃজনশীল প্রশ্ন- ১ |
|---|
|
অবসরপ্রাপ্ত ফারুক সাহেবের কাঁচাপাকা চুল, মুখে বয়সের ছাপ। দেখলে মনে হয় তার যথেষ্ট বয়স হয়েছে। কিন্তু রাস্তার দুই ধারে গাছ লাগানো, রাস্তার গর্ত ভরাট করা প্রভৃতি জনকল্যাণমূলক কাজে নিরবচ্ছিন্ন পরামর্শ প্রদানে তার কোনো ক্লান্তি নেই। এছাড়া পাড়ার ছেলেমেয়েদের নিয়ে বাল্যবিবাহ রোধ, স্কুলগামী মেয়েদের স্কুলে পাঠানো, অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে পাঠানো- এ সমস্ত মানবিক কাজে তিনি সহযোগিতা করে থাকেন। মাদকবিরোধী সামাজিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন।
ক. গানের পাখিকে তাড়া করে কে? |
| --------------- |
| ‘যৌবনের গান’ প্রবন্ধের সৃজনশীল প্রশ্ন- ২ |
|---|
|
যুবকেরা পাগল, বারুদের মতো সহজেই তাদের মনে প্রতিবাদী চেতনার সৃষ্টি হয়। কারাগারে ফাঁসিতে কিছুতেই তাদের দর্পিত প্রাণ কাবু হয় না। এদের স্থিরতা, বীরত্ব, গাম্ভীর্য, ধর্মভয়, বিনয় জ্ঞান বলতে কিছু নেই। ওরা সত্যিই পাগল, বাষ্পীয় ইঞ্জিনে আবদ্ধ শক্তি বলা যায়। ক. ‘বনের পাখির মতো গান করা স্বভাব’- কার?খ. কবি তরুণদের দলভুক্ত হতে চেয়েছেন কেন? গ. অনুচ্ছেদে ‘যৌবনের গান’ প্রবন্ধে বর্ণিত যুবকের কোন রূপটি প্রকাশ পেয়েছে তা ব্যাখ্যা করো। ঘ. “অনুচ্ছেদে ‘যৌবনের গান’ প্রবন্ধে আংশিক বক্তব্য প্রতিফলিত হয়েছে”- মন্তব্যটির যৌক্তিক মূল্যায়ন করো। |
| ----------- |
| ‘যৌবনের গান’ প্রবন্ধের সৃজনশীল প্রশ্ন- ৩ |
|---|
|
নিচের উদ্দীপকটি পড়ো এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
ক. ফুলের মাঝে মাটির মমতারসের মতো অবস্থান কাদের? |
| ----------- |
| ‘যৌবনের গান’ প্রবন্ধের সৃজনশীল প্রশ্ন- ৪ |
|---|
|
নিচের উদ্দীপকটি পড়ো এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:
ক. কাজী নজরুল ইসলাম কত সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন? |
|
ক. কাজী নজরুল ইসলাম ১৯১৭ সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন।
গ. কাজী নজরুল ইসলাম যৌবনের গান' প্রবন্ধে যৌবন তথা তারুণ্যের জয়গান
গেয়েছেন। উদ্দীপকে উল্লিখিত তুহিনের সাথে প্রবন্ধের তরুণদের কার্যোদ্দীপনার
সাদৃশ্য লক্ষণীয়।
ঘ. কাজী নজরুল ইসলাম ‘যৌবনের গান’ প্রবন্ধে যৌবন তথা তারুণ্য শক্তির
জয়গান করেছেন। উদ্দীপকে উল্লিখিত তুহিনের মধ্যেও সেই তারুণ্যের উদ্দামতা
লক্ষ্য করা যায়। উদ্দীপকের তুহিন তারুণ্য শক্তির অধিকারী যুবক। তাইতো সে
দেশের স্বাধীনতা রক্ষায় ঝাপিয়ে পড়ে যুদ্ধে। |
| ‘যৌবনের গান’ প্রবন্ধের সৃজনশীল প্রশ্ন- ৫ |
|---|
|
নিচের উদ্দীপকটি পড়ো এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:
ক. বহু বৃদ্ধের বার্ধক্যের জীর্ণাবরণের তলে মেঘলুপ্ত সূর্যের মতো কী
থাকে? |
|
ক. বহু বৃদ্ধের বার্ধক্যের জীর্ণাবরণের তলে মেঘলুপ্ত সূর্যের মতো
প্রদীপ্ত যৌবন থাকে।
গ. ‘যৌবনের গান’ প্রবন্ধে কাজী নজরুল ইসলাম দুরন্ত, দুর্বার ও দুঃসাহসী
তারুণ্যের জয়গান করেছে।
ঘ. প্রাবন্ধিক কাজী নজরুল ইসলাম ‘যৌবনের গান’ প্রবন্ধে তারুণ্য ও
বার্ধক্যের সুস্পষ্ট দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন। |
| ‘যৌবনের গান’ প্রবন্ধের সৃজনশীল প্রশ্ন- ৬ |
|---|
|
নিচের উদ্দীপকটি পড়ো এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:
ক. কাঞ্চনজঙ্ঘার শীর্ষদেশ অধিকার করতে গিয়ে যারা তুষার ঢাকা পড়ে তাদের
মধ্যে নজরুল কী দেখেছেন? |
|
ক. কাঞ্চনজঙ্ঘার শীর্ষদেশ অধিকার করতে গিয়ে যারা তুষার ঢাকা পড়ে নজরুল
তাদের মধ্যে যৌবনদেখেছেন।
গ. উদ্দীপকের মুসা ইব্রাহীম অফুরন্ত প্রাণশক্তির কারণেই এভারেস্ট জয় করতে
সক্ষম হয়েছে। এভারেস্টের পথ ছিল বন্ধুর।
ঘ. কাজী নজরুল ইসলাম রচিত 'যৌবনের গান' প্রবন্ধে মানসিকতার মাপকাঠিতে
তারুণ্য ও বার্ধ্যকের পার্থক্য নির্ণয় করেছেন। |
| ‘যৌবনের গান’ প্রবন্ধের সৃজনশীল প্রশ্ন- ৭ |
|---|
|
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:
ক. যৌবনের সেবাপরায়ণ দিকটিকে নজরুল কী বলে আখ্যায়িত করেছেন? |
|
ক. যৌবনের সেবাপরায়ণ দিকটিকে নজরুল 'যৌবনের মাতৃরূপ' বলে আখ্যায়িত
করেছেন।
গ. ‘যৌবনের গান’ প্রবন্ধে লেখক যাদের জয়গান গেয়েছেন মিতুলকে নিঃসন্দেহে
তাদের একজন হিসেবে ভাবা যায়।
ঘ. যৌবন মানবজীবনের এমন একটি উত্তাল সময়, যখন মানুষ শুভ ও অশুভ যে কোনো
দিকেই ধাবিত হতে পারে। |
| ‘যৌবনের গান’ প্রবন্ধের সৃজনশীল প্রশ্ন- ৮ |
|---|
|
নিচের উদ্দীপকটি পড়ো এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:
ক. যে তারুণ্য তরুণ অরুণের মতোই তিমির বিদারী সে কে? |
|
ক. যে তারুণ্য তরুণ অরুণের মতোই তিমির বিদারী সে আলোর দেবতা।
গ. আঠারো বছর বয়স মানবজীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়-পরিসর।
ঘ. যৌবন মানুষকে প্রেরণা দেয়, দেয় সীমাহীন উদ্দীপনা। |
![]() |
| যৌবনের গান |
| তথ্যসূত্র : |
|---|
|
১. সাহিত্য পাঠ: একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক
বোর্ড, ঢাকা, ২০২৫। ২. আধুনিক বাংলা অভিধান: বাংলা একাডেমি, এপ্রিল, ২০১৮। ৩. ব্যবহারিক বাংলা অভিধান: বাংলা একাডেমি, ১৮তম, ২০১৫। |



