‘জন্মভূমি’ কবিতার মূলপাঠ, শব্দার্থ, মূলভাব, বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও সৃজনশীল প্রশ্ন-উত্তর
![]() |
জন্মভূমি : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর |
জন্মভূমি
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
সার্থক জনম আমার জন্মেছি এই দেশে।
সার্থক জনম, মা গো, তোমায় ভালোবেসে।
জানি নে তোর ধন রতন আছে কি না রানির মতন,
শুধু জানি আমার অঙ্গ জুড়ায় তোমার ছায়ায় এসে;
কোন্ বনেতে জানি নে ফুল গন্ধে এমন করে আকুল,
কোন গগনে ওঠে রে চাঁদ এমন হাসি হেসে।;
আঁখি মেলে তোমার আলো প্রথম আমার চোখ জুড়ালো,
ওই আলোতে নয়ন রেখে মুদব নয়ন শেষে।;
উৎস নির্দেশ : |
---|
-- |
শব্দার্থ ও টীকা : |
---|
➠ সার্থক- সফল। ➠ জনম- জন্ম শব্দটির ‘ন্ম’ যুক্তাক্ষর ভেঙে ‘ন’ ও ‘ম’ আলাদা করা হয়েছে। এর আরও দৃষ্টান্ত আছে। যেমন: ‘রত্ন’ থেকে রতন, ‘যত্ন’ থেকে যতন। ➠ আকুল- উৎসুক; ব্যগ্র; অধীর। ➠ মুদব- বুজব; বন্ধ করব। |
পাঠের উদ্দেশ্য : |
---|
মাতৃভূমির প্রতি গভীর মমত্ববোধ জাগিয়ে তোলা ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করা। |
পাঠ-পরিচিতি : |
---|
এই গীতবাণীতে জন্মভূমির প্রতি কবির মমত্ববোধ ও গভীর দেশপ্রেম ফুটে উঠেছে।
জনন্মভূমিকে ভালোবাসতে পেরেই কবি তাঁর জীবনের সার্থকতা অনুভব করেন। কবির
জন্মভূমি অজস্র ধনরত্নের আকর কি না, তাতে তাঁর কিছু আসে যায় না। কারণ, তিনি
এই মাতৃভূমির স্নেহছায়ায় যে সুখ ও শাস্তি লাভকরেছেন তা অতুলনীয়। জনন্মভূমির
অপরূপ সৌন্দর্যের ঐশ্বর্যে কবি মুগ্ধ। জনাভূমির বিচিত্র সৌন্দর্যের অফুরন্ত
উৎস হচ্ছে বাগানের ফুল, চাঁদের জ্যোৎগ্রা, সূর্যের আলো। এসব কবির মনকে আকুল
করে। মাতৃভূমির সূর্যালোকে কবির চোখ পরিপূর্ণভাবে জুড়িয়েছে। তাই কবির একান্ত ইচ্ছা জন্মভূমির মাটিতেই যেন তিনি চিরনিদ্রায় শায়িত হওয়ার সুযোগ পান। |
কবি পরিচিতি : |
---|
এশীয়দের মধ্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রথম নোবেল-বিজয়ী কবি। ‘গীতাঞ্জলি’ নামের
ইংরেজি কবিতার সংকলনের জন্য ১৯১৩ সালে তিনি এই পুরস্কার লাভ করেন। কেবল
কবিতা নয়, উপন্যাস, ছোটগল্প, নাটক, প্রবন্ধ, গান- বাংলা সাহিত্যের সকল
শাখাই তাঁর একক অবদানে ঐশ্বর্যমণ্ডিত। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৬১ খ্রিষ্টাব্দের ৭ই মে (১২৬৮ বঙ্গাব্দের পঁচিশে বৈশাখ) কলকাতার জোড়াসাঁকোর বিখ্যাত ঠাকুর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। স্কুলে নিয়মিত প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা তাঁর হয় নি। সতের বছর বয়সে বিলেতে ব্যারিস্টারি পড়তে গিয়েছিলেন। সে পড়াও শেষ না হতেই দেশে ফিরে আসেন তিনি। কিন্তু স্বশিক্ষা ও সাধনায় বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে এনে দেন অতুলনীয় সমৃদ্ধি। তিনি একাধারে সাহিত্যিক, চিন্তাবিদ, শিক্ষাবিদ, সুরকার, গীতিকার, নাট্যকার, নাট্য-নির্দেশক, অভিনেতা এবং চিত্রশিল্পী। বিশ্বভারতী ও শান্তিনিকেতনের মতো প্রতিষ্ঠান গড়ে তিনি শিক্ষায় নতুন ধারা সৃষ্টি করেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলির মধ্যে রয়েছে- সোনার তরী, গীতাঞ্জলি, বলাকা ইত্যাদি কাব্য। ঘরে বাইরে, গোরা, যোগাযোগ, শেষের কবিতা ইত্যাদি উপন্যাস; গল্পসংকলন গল্পগুচ্ছে; বিসর্জন, রাজা, ডাকঘর, রক্তকরবী ইত্যাদি নাটক। তিনি ছোটদের জন্য লিখেছেন শিশু ভোলানাথ, খাপছাড়া ইত্যাদি। তাঁর রচিত 'আমার সোনার বাংলা' গানটি বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হিসেবে গৃহীত হয়েছে। ১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দের ৭ই আগস্ট (১৩৪৮ বঙ্গাব্দের বাইশে শ্রাবণ) কলকাতায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। |
কর্ম-অনুশীলন : |
---|
১. দেশপ্রেমমূলক ছড়া, কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ রচনা করে একটি দেয়াল পত্রিকা
তৈরি করো (শ্রেণির সকল শিক্ষার্থীর কাজ)। ২. বিভিন্ন কবি-সাহিত্যিকের দেশপ্রেমমূলক ছড়া, কবিতা, গল্প ও গান নির্বাচন করে একটি দেয়াল পত্রিকা তৈরি করো (শ্রেণির সকল শিক্ষার্থীর কাজ)। |
বহুনির্বাচনি প্রশ্ন : |
---|
১. কবির মন আকুল হয় কীসে? ক. চাঁদের আলোয় খ. গাছের ছায়ায় গ. ফুলের গন্ধে ঘ. জন্মভূমির আলোয় ২. ‘জন্মভূমি’ কবিতার গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে- i. দেশের মানুষ ii. জন্মভূমির প্রকৃতি iii. গভীর দেশপ্রেম নিচের কোনটি সঠিক? ক. i খ. ii গ. iii ঘ. ii ও iii উদ্দীপকটি পড় এবং ৩ ও ৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও: বনের পরে বন চলেছে বনের নাহি শেষ ফুলের ফলের সুবাস ভরা এ কোন পরীর দেশ? নিবিড় ছায়ায় আঁধার করা পাতার পারাবার, রবির আলো খণ্ড হয়ে নাচছে পায়ে তার। ৩. চরণ দুটির সঙ্গে ‘জন্মভূমি’ কবিতার মিল রয়েছে- i. বাংলাদেশের প্রকৃতির ii. চিরায়ত সৌন্দর্যের iii. প্রাকৃতিক ঐশ্বর্যের নিচের কোনটি সঠিক? ক. i খ. ii গ. i ও ii ঘ. ii ও iii ৪. জন্মভূমি কবিতার আলোকে উদ্দীপকের চরণ দুটিতে কবি মনের কোন দিকটি বিশেষভাবে প্রকাশিত হয়েছে? ক. সৌন্দর্যবোধ খ. আত্মতৃপ্তি গ. গভীর আবেগ ঘ. দেশপ্রেম |
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন : |
---|
প্রশ্ন- ১: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কত খ্রিষ্টাব্দে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন? উত্তর : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯১৩ খ্রিষ্টাব্দে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। প্রশ্ন- ২: বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠা করেন কে? উত্তর : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠা করেন। প্রশ্ন- ৩: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কত খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন? উত্তর : ১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মৃত্যুবরণ করেন। প্রশ্ন- ৪: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কোথায় মৃত্যুবরণ করেন? উত্তর : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন। প্রশ্ন- ৫: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতার নাম কী? উত্তর : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতার নাম মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর। প্রশ্ন- ৬: ‘জন্মভূমি’ কবিতাটির কবি কে? উত্তর : ‘জন্মভূমি’ কবিতাটির কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। প্রশ্ন- ৭: কোনটি কবিকে আকুল করে? উত্তর : ফুলের গন্ধ কবিকে আকুল করে। প্রশ্ন- ৮: কবির কাছে মাতৃভূমি কীসের মতো? উত্তর : কবির কাছে মাতৃভূমি মায়ের মতো। প্রশ্ন- ৯: কার জনম সার্থক? উত্তর : কবির জনম সার্থক। প্রশ্ন- ১০: কবি দেশকে কী বলে সম্বোধন করেছেন? উত্তর : কবি দেশকে মা বলে সম্বোধন করেছেন। প্রশ্ন- ১১: দেশের ছায়ায় কার অঙ্গ জুড়ায়? উত্তর : দেশের ছায়ায় কবির অঙ্গ জুড়ায়। প্রশ্ন- ১২: বনের ফুলের ঘ্রাণ কী রকমের? উত্তর : বনের ফুলের ঘ্রাণ আকুল করা। প্রশ্ন- ১৩: চাঁদ কোথায় ওঠে? উত্তর : চাঁদ গগনে (আকাশে) ওঠে। প্রশ্ন- ১৪: আঁখি মেলে কবি প্রথম কী দেখেছেন? উত্তর : আঁখি মেলে কবি প্রথম দেশের আলো দেখেছেন। প্রশ্ন- ১৫: কবির চোখ কী দেখে জুড়াল? উত্তর : কবির চোখ দেশের আলো দেখে জুড়াল। প্রশ্ন- ১৬: ‘জন্মভূমি’ কবিতা কোন দেশকে উদ্দেশ্য করে লেখা? উত্তর : ‘জন্মভূমি’ কবিতা বাংলাদেশকে উদ্দেশ্য করে লেখা। প্রশ্ন- ১৭: দেশের আলোতে নয়ন রেখে কবি কী করবেন? উত্তর : দেশের আলোতে নয়ন রেখে কবি নয়ন মুদবেন। প্রশ্ন- ১৮: ‘মুদব নয়ন’ দ্বারা কবি কী ইঙ্গিত করেছেন? উত্তর : ‘মুদব নয়ন’ দ্বারা কবি মৃত্যুকে ইঙ্গিত করেছেন। |
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন : |
---|
প্রশ্ন- ১: ‘জন্মভূমি’ কবিতায় কোন দিকটি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা কর। উত্তর : ‘জন্মভূমি’ কবিতায় জন্মভূমির প্রতি কবির মমত্ব ও দেশপ্রেমের গভীর আবেগ ফুটে উঠেছে। ➠ কবি তার জন্মভূমিকে মায়ের মতো ভালোবাসেন। এদেশের প্রাকৃতিক শোভা কবিকে মুগ্ধ করে। এদেশের প্রকৃতির উজ্জ্বল আলো আর মিষ্টি বাতাসে কবির দেহ ও মন জুড়িয়ে যায়। এদেশের সুন্দর প্রকৃতি কবির মনে যে শিহরণ জাগায় তাতে কবি আনন্দিত। কবির জন্মভূমি অজস্র ধনরত্নের আকর কি না তাতে তার কিছু আসে যায় না। কারণ তিনি তার মাতৃভূমির স্নেহছায়ায় যে সুখ পেয়েছেন তা তার অঙ্গ জুড়িয়েছে। কবিতাটির প্রতিটি ছত্রে কবির দেশপ্রেমের গভীর আবেগ ফুটে উঠেছে। প্রশ্ন- ২: ‘সার্থক জনম আমার জন্মেছি এই দেশে’ পঙক্তিটি বুঝিয়ে দাও। উত্তর : ‘সার্থক জনম আমার জন্মেছি এই দেশে’ পঙক্তিটি দ্বারা কবি নিজের জন্মকে সার্থক হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন। ➠ কবি তার জন্মভূমিকে অনেক বেশি ভালোবাসেন। হৃদয়ের মাঝে তিনি জন্মভূমির প্রতি গভীর টান অনুভব করেন। এজন্যই জন্মভূমিতে কবি পেয়েছেন জীবনের স্বাদ। এজন্যই কবি নিজের জন্মকে সার্থক হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন। প্রশ্ন- ৩: “কোন বনেতে জানি নে ফুল/গন্ধে এমন করে আকুল।” পঙ্ক্তিদ্বয় ব্যাখ্যা কর। উত্তর : “কোন বনেতে জানি নে ফুল/গন্ধে এমন করে আকুল” পঙক্তিদ্বয় দ্বারা কবি তার দেশের ফুলের প্রাচুর্যকে প্রকাশ করেছেন। ➠ কবির দেশে অনেক প্রকারের ফুল আছে। সব বনেই নানা রঙের নানা গন্ধের ফুল ফোটে। কোন বনে কোন ফুল ফোটে, কবি সেটা ঠিক মনে করতে পারেন না, কিন্তু ফুলের ঘ্রাণে কবি আকুল হয়ে যান। প্রশ্ন- ৪: ‘কোন গগনে ওঠে রে চাঁদ এমন হাসি হেসে’ পঙক্তিটি দ্বারা কবি কী বুঝাতে চেয়েছেন? উত্তর : ‘কোন গগনে ওঠে রে চাঁদ এমন হাসি হেসে’ এ পঙক্তিটিতে কবি জন্মভূমির প্রতি সৌন্দর্যের অভিভূত হয়ে একথা ব্যক্ত করেছেন। এভাবে আর কোথাও উদয় হয় না। ➠ দেশের প্রতি কবির মনে অনেক বেশি আবেগ, ভালোবাসা আর শ্রদ্ধা রয়েছে। যার কারণে দেশের প্রকৃতির প্রতিটি বস্তুই কবিকে বিমোহিত করে। কবি দেশের আকাশে চাঁদ দেখে ভেবেছেন, এত সুন্দরভাবে চাঁদ পৃথিবীর আর কোনো দেশেই উদয় হয় না। প্রশ্ন- ৫: কবি দেশের আলোতে নয়ন রেখে মৃত্যুবরণের ইচ্ছা ব্যক্ত করেছেন কেন? উত্তর : দেশের প্রতি অগাধ ভালোবাসা থাকার কারণে কবি দেশের আলোতে চোখ রেখে মৃত্যুবরণ করার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছেন। ➠ জন্মের পর চোখ মেলে প্রথমে কবি দেশের আলো দেখেছেন, যা কবির চোখ জুড়িয়ে দিয়েছে। দেশকে কবি ভালোবেসেছেন সমস্ত সত্তা দিয়ে এবং দেশের প্রতি অসীম ভালোবাসা থাকার কারণে দেশের আলোতে চোখ রেখে মৃত্যুবরণ করার ইচ্ছা করেছেন। |
সৃজনশীল প্রশ্ন- ১ |
---|
ধনধান্য পুষ্পভরা আমাদের এই বসুন্ধরা; তাহার মাঝে আছে দেশ এক-সকল দেশের সেরা; ও সে স্বপ্ন দিয়ে তৈরি সে দেশ স্মৃতি দিয়ে ঘেরা; এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি, সকল দেশের রানি সে যে-আমার জন্মভূমি। ক. কবির অঙ্গ জুড়ায় কীসে? খ. কবির শেষ ইচ্ছা কী? ব্যাখ্যা করো। গ. উদ্দীপকে ‘জন্মভূমি’ কবিতার কোন দিকটির মিল লক্ষ করা যায়? ব্যাখ্যা করো। ঘ. উদ্দীপক ও কবিতায় জন্মভূমিকে রানি সম্বোধন করার যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করো। |
ক জন্মভূমির শীতল ছায়ায় কবির অঙ্গ জুড়ায়। খ কবির শেষ ইচ্ছা তার প্রিয় জন্মভূমিতেই মৃত্যুবরণ করা। ➠ মাতৃরূপিনী জন্মভূমির অপরূপ সৌন্দর্যে কবি মুগ্ধ। এদেশে জন্মগ্রহণ করে এবং জন্মভূমিকে ভালোবাসতে পেরেই কবি তার জীবনের সার্থকতা অনুভব করেন। এদেশের মাটিতে জন্মগ্রহণ করে, এর সূর্যালোকে চোখ জুড়িয়ে এবং মাতৃভূমির স্নেহছায়ায় কবি যে সুখ ও শান্তি লাভ করেছেন তা অতুলনীয়। তাই কবির শেষ ইচ্ছা এদেশকে ভালোবেসে মৃত্যু পর্যন্ত যেন দেশের মাটিতে থেকেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করতে পারেন। গ উদ্দীপকের সঙ্গে ‘জন্মভূমি’ কবিতার স্বদেশপ্রেম ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দিকটির মিল লক্ষ করা যায়। ➠ ‘জন্মভূমি’ কবিতায় জন্মভূমির সৌন্দর্যে মুগ্ধ কবির মাতৃভূমির প্রতি অপরিসীম ভালোবাসার প্রকাশ পেয়েছে। এদেশের ফুল, ফল, মাঠ, নদী প্রভৃতি কবির হৃদয়কে আকৃষ্ট করেছে। কবি এদেশে জন্মগ্রহণ করে তাই নিজেকে ধন্য মনে করেন। ➠ উদ্দীপকে জন্মভূমির রূপ সৌন্দর্যের বিবরণ আছে যা ‘জন্মভূমি’ কবিতার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। ধন সম্পদে আর ফুল-ফসলে পরিপূর্ণ আমাদের এই পৃথিবী। এ সুন্দর পৃথিবীতে অনেক দেশ রয়েছে। কিন্তু সব দেশ থেকে আমাদের এই দেশটি সেরা। এদেশের স্বপ্ন ও স্মৃতিমুগ্ধ কবি এদেশটিকে সকল দেশের রানি বলেছেন। তাই বলা যায় উদ্দীপকের কবি এবং ‘জন্মভূমি’ কবিতার কবি উভয়েই জন্মভূমির অপরূপ সৌন্দর্যে মুগ্ধ। ঘ উদ্দীপক ও ‘জন্মভূমি’ কবিতায় প্রিয় জন্মভূমিকে রানি সম্বোধন করা হয়েছে জন্মভূমির অপরূপ রূপের কারণে এবং জন্মভূমিকে শ্রেষ্ঠ ভেবে। ➠ ‘জন্মভূমি’ কবিতায় বলা হয়েছে সবুজ শ্যামলে সজ্জিত এ বাংলাদেশের যেদিকেই তাকানো যায় সেদিকেই প্রকৃতির ঐশ্বর্যের খেলা দেখা যায়। এই দেশের মতো এত মমতাময়ী দেশ কবি আর কোথাও খুঁজে পাননি। কবি তার প্রিয় স্বদেশের বুকে ধনরত্ন খোঁজেননি। রানির মতো সম্পদের আধিক্য না থাকলেও তিনি তার মাতৃভূমিকে রানির আসনে বসিয়েছেন। ➠ উদ্দীপকেও ধনধান্য পুষ্পেভরা প্রিয় জন্মভূমির কথা কবি বলেছেন। কবি তার মাতৃভূমিকে সব দেশের চেয়ে শ্রেষ্ঠ মনে করেছেন। কেননা এদেশটি তার কাছে স্বপ্নের বুনন দিয়ে তৈরি ও স্মৃতি দিয়ে ঘেরা। এ দেশের প্রকৃতি কবির কাছে অপ্রতিরোধ্য আকর্ষণের বস্তু। যার সৌন্দর্যে কবি মোহিত। এমন স্বপ্নের দেশ পৃথিবীর আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। সৌন্দর্য গুণেও এদেশ রানির আসনে অধিষ্ঠিত। ➠ মূলত এ দেশটি রূপে গুণে সেরা হওয়ায় উদ্দীপকে ও ‘জন্মভূমি’ কবিতায় এদেশকে রানি বলা হয়েছে। তাই এ সম্বোধনটি অত্যন্ত যৌক্তিক। |
সৃজনশীল প্রশ্ন- ২ |
---|
আমার দেশের মাঠের মাটিতে কৃষাণ দুপুর বেলা, ক্লান্তি নাশিতে কণ্ঠে যে তার সুর লয়ে করে খেলা, মুক্ত আকাশ মুক্তমনে সেই গান চলে ভেসে জন্মেছি মাগো তোমার কোলেতে মরি যেন এই দেশে। ক. ‘জন্মভূমি’ কবিতায় কবি জন্মভূমিকে কী বলে সম্বোধন করেছেন? খ. কবির জনম সার্থক মনে করেন কেন? গ. উদ্দীপকের প্রথম দুই চরণ ‘জন্মভূমি’ কবিতার কোন দিকটিকে প্রকাশ করেছে- ব্যাখ্যা করো। ঘ. ‘উদ্দীপকের শেষ চরণ যেন সত্যিকারের দেশপ্রেমিকের মনোভাবকেই ধারণ করেছে।’ উক্তিটি ‘জন্মভূমি’ কবিতার আলোকে মূল্যায়ন করো। |
ক ‘জন্মভূমি’ কবিতায় কবি জন্মভূমিকে ‘মা গো’ বলে সম্বোধন করেছেন। খ এদেশে জন্মগ্রহণ করেছেন বলে কবি নিজেকে সার্থক মনে করেন। ➠ এদেশের শীতল হাওয়া কবির শরীর শীতল করে। জন্মভূমির বনের ফুল, সূর্যের আলো, চাঁদের হাসি সব কিছুই কবিকে আবেগাপ্লুত করে। যা মূলত দেশের প্রতি তার ভালোবাসারই প্রকাশ। তাই এমন একটি সুন্দর দেশে জন্মগ্রহণ করে কবি নিজেকে সার্থক মনে করেন। গ উদ্দীপকের প্রথম দুই চরণ ‘জন্মভূমি’ কবিতায় প্রকাশিত জন্মভূমির অকৃত্রিম সৌন্দর্য প্রকাশ করেছে। ➠ ‘জন্মভূমি’ কবিতায় কবি জন্মভূমির প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বর্ণনা দিয়েছেন। উদ্দীপকের প্রথম দুই চরণেও কবি জন্মভূমির অপরূপ সৌন্দর্যের কথাই বলেছেন। কবি এমন একটি সুন্দর দেশে জন্মগ্রহণ করে নিজেকে সার্থক মনে করেন। এদেশের শীতল ছায়া কবির অঙ্গকে শীতল করে। এদেশের বিচিত্র সৌন্দর্যের অফুরন্ত উৎস হচ্ছে বাগানের ফুল, চাঁদের জ্যোৎস্না, সূর্যের আলো- এসব কবিকে মুগ্ধ করে। কবি বাংলার আকাশে উজ্জ্বল চাঁদের আলো দেখে মুগ্ধ। বাংলার রূপ কবিকে বিমোহিত করেছে। ➠ উদ্দীপকে বলা হয়েছে, এদেশে দিগন্তজোড়া ফসলের মাঠে কৃষকরা সারাদিন কাজ করে। তারা পরিশ্রম করে মাঠের মাটিতে সোনার ফসল ফলায়। সঙ্গে সঙ্গে পরিশ্রম লাঘব করার জন্য তারা গান গায়। এটা ফসলের মাঠের সৌন্দর্যের একটা অংশ। উদ্দীপকের এ অংশের সঙ্গে ‘জন্মভূমি’ কবিতায় বর্ণিত সৌন্দর্যের মিল রয়েছে। ঘ ‘উদ্দীপকের শেষ চরণ যেন সত্যিকারের দেশপ্রেমিকের মনোভাবকেই ধারণ করেছে’ উক্তিটি যথার্থ। ➠ ‘জন্মভূমি’ কবিতায় কবি তার দেশকে মায়ের মতো ভালোবেসেছেন। কবি এদেশের রূপ সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়েছেন। এ বাংলার স্নিগ্ধ বাতাস কবির অঙ্গ শীতল করেছে। বাংলার প্রকৃতির উজ্জ্বল আলোতে কবির চক্ষু শীতল হয়। জন্মের পরে প্রথম চোখ মেলেই কবি তার দেশের সৌন্দর্য দেখেছেন। দেশকে কবি এতই ভালোবাসেন যে, মৃত্যুর মুহূর্তেও তিনি দেশের রূপসুধা পান করতে করতে মরতে চান। ➠ উদ্দীপকের শেষ দুই চরণে কবি এভাবে দেশকে ভালোবাসার কথাই বলেছেন। একজন সত্যিকারের দেশপ্রেমিকের ঐকান্তিক মনের আকুতি ফুটে উঠেছে এ দুই চরণে। কবি স্বদেশের রূপে মুগ্ধ ও বিমোহিত। এদেশের মাঠে সোনালি ফসল কাটার সময় কৃষকের কণ্ঠ বেয়ে যে সুর বেরিয়ে আসে তা কবিকে আকুল করে। এদেশের মুক্ত আকাশ কবিকে উতলা করে। তাই কবির শেষ ইচ্ছা- এমন একটা সুন্দর দেশে যেন শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে পারেন। ➠ একজন সত্যিকারের দেশপ্রেমিক তার দেশের মাটিতেই মরতে চান। ‘জন্মভূমি’ কবিতার কবি এবং উদ্দীপকের শেষ চরণেও কবি সত্যিকারের দেশপ্রেমিকের মতো দেশের মাটিতে মরার আশা ব্যক্ত করেছেন। তাই বলা যায়, প্রশ্নোল্লিখিত মন্তব্যটি যথার্থ। |
সৃজনশীল প্রশ্ন- ৩ |
---|
সবুজের ঢেউ খেলানো বাংলার এই প্রকৃতি। যেদিকেই তাকাই, শুধু সবুজের মেলা।
বৈচিত্র্যময় এ সবুজ প্রকৃতি সৌন্দর্যপিপাসুর চোখে নেশা ধরিয়ে দেয়। মধুমাখা
গ্রামগুলো সবুজে ঢাকা। বড়ো বড়ো সবুজ গাছেরা বুক উজাড় করে ছায়া দেয় গ্রামের
মানুষগুলোকে। গ্রামের পাশ দিয়ে এঁকেবেঁকে যে নদীটি দিগন্তে হারিয়ে গেছে,
তার কোল ঘেঁষেও রয়েছে আদরমাখা সবুজ গুল্ম। খালবিলের বুকজুড়ে সবুজ পদ্মপাতা।
এক কথায়, বাংলার প্রকৃতি মানেই বৈচিত্র্যময় সবুজের সমারোহ। ক. জন্মভূমির ছায়ায় এসে কার অঙ্গ জুড়ায়? খ. ‘জানি নে তোর ধন রতন/আছে কি না রানির মতন।’ ব্যাখ্যা করো। গ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘জন্মভূমি’ কবিতার ভাবগত সাদৃশ্য তুলে ধরো। ঘ. “উদ্দীপকটি ‘জন্মভূমি’ কবিতার সমগ্র ভাব ধারণ করে না।” মতের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করো। |
ক জন্মভূমির ছায়ায় এসে কবির অঙ্গ জুড়ায়। খ ‘জানি নে তোর ধনরতন/আছে কি না রানির মতন।’ পঙক্তি দুটি দ্বারা কবি মাতৃভূমির সম্পদের প্রতি তার অবহেলা এবং প্রকৃতি ও জন্মভূমির প্রতি তার অপরিসীম ভালোবাসা প্রকাশ করেছেন। ➠ মাতৃভূমিতে অনেক ধনসম্পদ লুকানো আছে কি না, এটা নিয়ে কবির মনে আগ্রহ নেই। মাতৃভূমিতে সম্পদ থাক বা না থাক, এর প্রতি কবির কোনো প্রশ্ন নেই। মাতৃভূমিই কবির কাছে সবচেয়ে বড় সম্পদ। আলোচ্য পঙক্তি দুটি দ্বারা মাতৃভূমির প্রতি কবির প্রবল বিশ্বস্ততা আর ভালোবাসা প্রকাশ পেয়েছে। গ উদ্দীপকে বাংলার সবুজ প্রকৃতির মনোরম বর্ণনা দেয়া হয়েছে, যা ‘জন্মভূমি’ কবিতার সঙ্গে সাদৃশ্য প্রকাশ করে। ➠ ‘জন্মভূমি’ কবিতায় কবি স্বদেশের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়েছেন। মাতৃভূমির প্রাকৃতিক সৌন্দর্যই কবির কাছে মাতৃভূমিকে মহিমান্বিত করেছে। কবির মতে, সারা পৃথিবীতেই ফুল ফোটে। কিন্তু কবির দেশে যেমন আকুল করা গন্ধের বুনোফুল ফোটে, তেমন ফুল পৃথিবীর আর কোথাও ফোটে কি না-এ ব্যাপারে তিনি সংশয় প্রকাশ করেছেন। এদেশের ছায়ায় কবির অঙ্গ শীতল হয়ে যায়। ➠ সবুজের ঢেউ খেলানো প্রকৃতির অনাবিল সৌন্দর্যের প্রকাশ ঘটেছে উদ্দীপকে। বড় বড় গাছের ছায়া গ্রামগুলোকে পরম মমতায় ঢেকে রেখেছে। নদীর দু’কূল ভরে রয়েছে সবুজের সৌন্দর্য। নদীর বুকেও সবুজ দেখা যায়। বাংলার সবুজময় এই প্রকৃতি সৌন্দর্যপিপাসুদের মনে নেশা ধরিয়ে দেয়। এভাবে ‘জন্মভূমি’ কবিতার মতো উদ্দীপকেও দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের প্রকাশ ঘটেছে। তাই বলা যায় উদ্দীপকের সঙ্গে ‘জন্মভূমি’ কবিতার ভাবগত সাদৃশ্য রয়েছে। ঘ “উদ্দীপকটি ‘জন্মভূমি’ কবিতার সমগ্র ভাব ধারণ করে না।” -এ উক্তিটি যথার্থ। ➠ বাংলার সবুজময় প্রকৃতির নৈসর্গিক সৌন্দর্যের কথা উদ্দীপকে প্রকাশ পেয়েছে। বাংলার প্রকৃতি সবুজ দিয়ে ঢাকা। যেদিকেই দৃষ্টি যায়, সেদিকেই শুধু সবুজের সমারোহ। ছোট ছোট গ্রামগুলো যেন জমাটবাঁধা সবুজের প্রতিকৃতি। এঁকেবেঁকে বয়ে চলা নদীর দু’কূলে রয়েছে সবুজের ছড়াছড়ি। মূলত স্বদেশের প্রকৃতির এই অনাবিল সৌন্দর্য উদ্দীপকেও চিত্রিত হয়েছে। অপরদিকে, ‘জন্মভূমি’ কবিতায় স্বদেশের এ সৌন্দর্যের দিক ছাড়াও আরো নানা বিষয় বর্ণিত হয়েছে। ‘জন্মভূমি’ কবিতায় কবি অত্যন্ত আবেগী ভাষায় স্বদেশের প্রতি বিশ্বস্ততা ও ভালোবাসা প্রকাশ করেছেন। কবি স্বদেশকে ভালোবেসে নিজের জন্মকে সার্থক মনে করেন। ➠ স্বদেশের বুকে রানির মতো কোনো সম্পদ লুকিয়ে আছে কি না, সে প্রশ্ন কবির মনে জাগে না। স্বদেশই কবির কাছে সবচেয়ে বড় সম্পদ। স্বদেশের ছায়ায় কবির দেহ স্নিগ্ধতায় শীতল হয়ে যায়। প্রকৃতির সৌন্দর্য কবির মনে প্রশান্তি জাগায়। এদেশেই কবি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করবেন, এটা কবির কাছে বিরাট প্রশান্তির ব্যাপার। অর্থাৎ ‘জন্মভূমি’ কবিতায় আলোচিত এসব বিষয় উদ্দীপকে অনুপস্থিত। ➠ তাই বলা যায়, উদ্দীপকটি ‘জন্মভূমি’ কবিতার সমগ্র ভাব ধারণ করে না। |
সৃজনশীল প্রশ্ন- ৪ |
---|
‘এই বাংলার আকাশ বাতাস এই বাংলার ভাষা এই বাংলার নদী, গিরি, বনে বাঁচিয়া মরিতে আশা।’ ক. কবির মন আকুল হয় কীসে? খ. ‘শুধু জানি আমার অঙ্গ জুড়ায় তোমার ছায়ায় এসে’ ব্যাখ্যা করো। গ. উদ্দীপকে যে আশার কথা বলা হয়েছে তার সঙ্গে ‘জন্মভূমি’ কবিতার কোন দিকটির মিল পাওয়া যায়? ঘ. উদ্দীপকে মাতৃভূমির প্রতি যে ভালোবাসা প্রকাশ পেয়েছে তা ‘জন্মভূমি’ কবিতার আলোকে বিশ্লেষণ করো। |
ক. ফুলের গন্ধে কবির মন আকুল হয়। খ. জন্মভূমির শীতল ছায়ায় কবির অঙ্গ জুড়িয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে আলোচ্য উক্তিটি করা হয়েছে। ➠ এদেশের অপরূপ রূপে কবি মুগ্ধ ও অভিভূত। এমন একটি সুন্দর দেশে জন্মগ্রহণ করে কবি নিজেকে সার্থক মনে করেন। বাংলার আকাশ, বাতাস, মাঠ, পাহাড়, পর্বত, ফুলের গন্ধ, চাঁদের আলো সবই কবিকে আকৃষ্ট করে। কবির দৃষ্টিতে জন্মভূমি মাতৃসম, তাই মা এবং দেশ উভয়ের প্রতি তিনি একই ভালোবাসা পোষণ করেন। জন্মভূমিতে কবির অঙ্গ জুড়ায় কারণ দেশ তথা দেশের সব কিছুই কবির কাছে আদরণীয়, জন্মভূমির শীতল ছায়ায় কবির অঙ্গ জুড়িয়ে যায়। গ. উদ্দীপকে কবির মাতৃভূমিতে মৃত্যুবরণ করার আশার সঙ্গে ‘জন্মভূমি’ কবিতার কবির জন্মভূমিতে মৃত্যুবরণ করার আশার দিকটির মিল পাওয়া যায়। ➠ ‘জন্মভূমি’ কবিতায় কবি তার মাতৃরূপ জন্মভূমির কোলে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন, যা উদ্দীপকের কবিরও আশা। তারা উভয়েই শেষ বারের মতো দেশের অপরূপ রূপ দেখে তবেই মৃত্যুকে কামনা করেন। এ বৈশিষ্ট্যটি উভয়ের মধ্যে সাদৃশ্য বলে বিবেচিত। ➠ ‘জন্মভূমি’ কবিতায় বারংবার এদেশের মমতাময়ী স্পর্শে কবি পরম আনন্দ অনুভব করেন। কবির জীবন সার্থক এদেশে জন্মেছেন বলে। কবির শেষ ইচ্ছা তিনি যেন এ দেশের মাটিতে মাথা রেখে, এদেশের প্রকৃতির উজ্জ্বল আলোতে নয়ন রেখে শেষবারের মতো নয়ন মুদতে পারেন। উদ্দীপকের কবিও এদেশের নদী-গিরি-বনে বেঁচে থেকে এদেশেই মরার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছেন। তিনি বাংলা মায়ের আকাশ, বাতাস, ভাষা সকল কিছু মিলে বেঁচে থাকতে চান। অর্থাৎ কবির জন্ম এদেশে এবং তিনি এদেশের মাটিতেই মরতে চান। ‘জন্মভূমি’ কবিতায়ও কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এদেশের বুকে মৃত্যুবরণ করার আশা ব্যক্ত করেছেন। এদিক থেকে উদ্দীপকের সঙ্গে ‘জন্মভূমি’ কবিতার মিল খুঁজে পাওয়া যায়। ঘ. উদ্দীপকে মাতৃভূমির প্রতি যে ভালোবাসা ও প্রাণের টান প্রকাশ পেয়েছে তা ‘জন্মভূমি’ কবিতায়ও প্রতিফলিত হয়েছে। ➠ উদ্দীপকের কবি বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ ও বিমোহিত। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দিক থেকে কবি তার প্রিয় দেশকে সব দেশের সেরা বলে মনে করেন। বাংলাদেশের আকাশ, বাতাস, ভাষা, সবকিছুই কবির মনকে আকৃষ্ট করেছে। তাই কবির ইচ্ছা, তিনি যেন এদেশের প্রকৃতিতে বেঁচে থেকে এদেশের মাটিতে চিরনিদ্রায় শায়িত হতে পারেন। ➠ ‘জন্মভূমি’ কবিতায়ও কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মাতৃভূমির প্রতি উদ্দীপকের অনুরূপ ভালোবাসা প্রকাশ করেছেন। তিনি এদেশকে মায়ের মতো ভালোবেসেছেন। প্রকৃতির রূপ ঐশ্বর্যে ভরপুর এদেশে জন্মগ্রহণ করে কবি নিজেকে সার্থক বলে মনে করেন। মাতৃভূমির সব কিছুই কবির প্রিয়। বনের ফুল, সূর্যের আলো, চাঁদের হাসি সবকিছুর মাঝেই আমরা কবির মুগ্ধ দৃষ্টির উপস্থিতি দেখতে পাই। এদেশের প্রকৃতির উজ্জ্বল আলোতে নয়ন রেখে তিনি শেষবারের মতো চোখ মুদতে চান অর্থাৎ মৃত্যুবরণ করতে চান। এখানে কবির মাতৃভূমির প্রতি গভীর মমত্ববোধ ও ভালোবাসার আবেগ প্রকাশ পেয়েছে। উদ্দীপকের কবির মধ্যেও তা প্রকাশ পেয়েছে। ➠ পরিশেষে বলা যায়, উদ্দীপকে মাতৃভূমির প্রতি যে ভালোবাসা ও টান প্রকাশ পেয়েছে ‘জন্মভূমি’ কবিতায়ও একই ভাবের সামগ্রিক প্রতিফলন দেখা যায়। |
সৃজনশীল প্রশ্ন- ৫ |
---|
ভোরে সূর্যের সোনালি আলোয় জেগে ওঠে দেশ। পাখি ডাকে, দোয়েল শিস দেয়। কৃষাণি
দুয়ার খোলে, কৃষক মাঠে যায়, মাঝি নোঙর তোলে। বাতাসে দোলে ফসলের মাঠ। যেদিকে
তাকাই সেদিকে দেখি সবুজের সমারোহ, চিরসবুজের এই দেশের নাম বাংলাদেশ। এ দেশ
আমার প্রিয় জন্মভূমি। ক. ‘শিশু ভোলানাথ’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কী ধরনের রচনা? খ. ‘ওই আলোতে নয়ন রেখে মুদব নয়ন শেষে’ বলতে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন? গ. উদ্দীপকটি ‘জন্মভূমি’ কবিতার সাথে কীভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা করো। ঘ. ‘উদ্দীপক এবং ‘জন্মভূমি’ কবিতার মূলভাব পুরোপুরি এক নয়।’ মন্তব্যটির যথার্থতা বিচার করো। |
ক. ‘শিশু ভোলানাথ’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শিশুতোষ রচনা। খ. ‘ওই আলোতে নয়ন রেখে মুদব নয়ন শেষে’ বলতে কবির মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত স্বদেশের আলো-বাতাসে নিজের শরীর জড়িয়ে রাখার ইচ্ছাকে বোঝানো হয়েছে। ➠ জন্মভূমির বিচিত্র সৌন্দর্যের অফুরন্ত উৎস হচ্ছে বাগানের ফুল, চাঁদের জ্যোৎস্না, সূর্যের আলো। এসব কবির মনকে আকুল করে। এদেশের মাটিতে কবির জন্ম। এর সূর্যালোকে কবির চোখ জুড়িয়েছে। তাই তিনি এই আলোতেই, এই দেশের মাটিতেই চিরনিদ্রায় শায়িত হতে চান। কবির মৃত্যুপূর্ব ইচ্ছা ব্যক্ত হয়েছে আলোচ্য উক্তিটিতে। গ উদ্দীপকটি ‘জন্মভূমি’ কবিতায় বর্ণিত বাংলার রূপবৈচিত্র্যের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। ➠ একটি দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ওই দেশের মানুষের মনের আনন্দকে বাড়িয়ে দেয়। তাঁরা জন্মভূমির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়, দেশকে আত্মার সাথে বেঁধে ফেলে। দেশের ফুল-পাখি, নদী-পাহাড়, সবুজ ফসলের মাঠ তাদের একান্ত নিজের হয়ে ওঠে। প্রিয় স্বদেশ ছেড়ে তারা কোথাও যেতে চায় না। উদ্দীপকেও বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সংক্ষিপ্ত পরিচয় তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিদিন সূর্য ওঠার সাথে সাথে জনজীবনে যে সাড়া জাগে সে সম্পর্কে ইঙ্গিত করা হয়েছে। বাংলার কৃষকের দৈনন্দিন কাজ, মাঝির নোঙর ফেলা, মুক্ত মাঠে বাতাসের দোলা সবই চিরসস্মরণীয়। ➠ উদ্দীপকের এই বর্ণনার সাথে ‘জন্মভূমি’ কবিতায় বর্ণিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বর্ণনাটি সাদৃশ্যপূর্ণ। কবিতাটিতে জন্মভূমির বিচিত্র সৌন্দর্যের অফুরন্ত উৎস হচ্ছে বাগানের ফুল, চাঁদের স্নিগ্ধ আলো, সূর্যের উত্তাপ প্রভৃতি। কবিতায় এসবের বর্ণনা দেওয়ার পাশাপাশি আমৃত্যু দেশেই কাটাবার প্রত্যাশা ব্যক্ত হয়েছে। সুতরাং উক্তিটি সাদৃশ্যপূর্ণ। ঘ. “উদ্দীপক এবং ‘জন্মভূমি’ কবিতার মূলভাব পুরোপুরি এক নয়।” মন্তব্যটি যথার্থ। ➠ স্বদেশপ্রেম মানবচরিত্রের এক স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য। স্বদেশের মানুষ স্বদেশের রূপ-প্রকৃতি, পশুপাখি, প্রতিটি ধূলিকণা তার সন্তানের কাছে পরম প্রিয় বস্তু। ফুলে ও ফসলে, কাঁদা মাটি-জলে এ দেশ তার সন্তানদের কাছে গর্বের অহংকারের। যা ‘জন্মভূমি’ কবিতায় প্রকাশিত হলেও উদ্দীপকে অনুপস্থিত। ➠ উদ্দীপকে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বর্ণনা স্থান পেয়েছে। সেখানে গ্রামবাংলার প্রাত্যহিক জীবনপ্রবাহের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। ভোরে সূর্যালোকিত হওয়ার সাথে সাথে চারপাশে যে প্রাণের সাড়া পড়ে যায় তার নিখুঁত চিত্র উপস্থাপিত হয়েছে। এই সৌন্দর্য বর্ণনাটি ‘জন্মভূমি’ কবিতার একটি অংশকে নির্দেশ করে। সে অংশটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অংশ। কিন্তু ‘জন্মভূমি’ কবিতায় কবির যে শেষ ইচ্ছাটি রয়েছে সে বিষয়ে উদ্দীপকে কোনো ইঙ্গিত নেই। এখানেই উদ্দীপকের অপূর্ণতা। ➠ উদ্দীপকে কেবল বাংলাদেশের রূপসৌন্দর্যের বর্ণনা স্থান পেয়েছে। আর ‘জন্মভূমি’ কবিতায় জন্মভূমির বৈচিত্র্যময়তার সাথে কবির জীবনবোধ, ভালোবাসা এবং তা থেকে জন্মভূমির প্রতি অকৃত্রিম দরদ ফুটে উঠেছে। কবি জন্মভূমির মায়া কিছুতেই কাটিয়ে উঠতে পারেন না। তাই তিনি এই দেশেতেই মরতে চেয়েছেন। উদ্দীপকে এ ধরনের কোনো প্রত্যাশা নেই। তাই বলা যায় যে, উদ্দীপকে ‘জন্মভূমি’ কবিতার আংশিক বিষয়ই উঠে এসেছে, পুরোপুরি নয়। |
সৃজনশীল প্রশ্ন- ৬ |
---|
i) ‘গোধূলি লগনে জগদীশ স্মরে
ii) ‘ও আমার বাংলা মা তোর খ. ‘সার্থক জনম, মা গো, তোমায় ভালোবেসে।’- এখানে ‘মা গো’ দ্বারা কবি কী বুঝিয়েছেন? গ. উদ্দীপক (i) এ ‘জন্মভূমি’ কবিতার কবির মানসিকতার কোন বিশেষ দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে- ব্যাখ্যা করো। ঘ. উদ্দীপক (i) ও (ii) ‘জন্মভূমি’ কবিতার মূলভাবের সমগ্রতাকে ধারণ করেছে’- উক্তিটি মূল্যায়ন করো। |
ক ‘শেষের কবিতা’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপন্যাস। খ ‘সার্থক জনম, মা গো, তোমায় ভালোবেসে’ এখানে ‘মা গো’ দ্বারা কবি মাতৃভূমিকে বুঝিয়েছেন। কবি তার জন্মভূমিকে ভালোবাসার পাশাপাশি শ্রদ্ধাও করেন। মায়ের প্রতি কবির যেরূপ শ্রদ্ধা রয়েছে, জন্মভূমির প্রতিও সেরূপ শ্রদ্ধা রয়েছে কবির মনে। তাই তিনি দেশকে মায়ের সাদৃশ্য কল্পনা করে ‘মা গো’ বলে সম্বোধন করেছেন। গ ‘জন্মভূমি’ কবিতার কবির জন্মভূমিতে মৃত্যুবরণের দিকটি ব্যাখ্যা কর। ঘ ‘জন্মভূমি’ কবিতার মূলভাব বিশ্লেষণ কর। |
সৃজনশীল প্রশ্ন- ৭ |
---|
i) ‘কোন বনেতে জানি নে ফুল
ii) ‘সারাদিন কেটে যাবে কলমির খ. জন্মভূমির ছায়ায় এসে কবির অঙ্গ জুড়ায় কেন? গ. উদ্দীপকের সাথে জন্মভূমি কবিতার বৈসাদৃশ্য চিহ্নিত করো। ঘ. কিছু বৈসাদৃশ্য থাকলেও উদ্দীপক ও জন্মভূমি কবিতার ভাব একই ধারায় উৎসারিত বিশ্লেষণ করো। |
ক ‘মুদব’ শব্দের অর্থ বন্ধ করব। খ জন্মভূমির ছায়ায় এসে কবি অপরূপ শান্তি অনুভব করেন বলে এর ছায়ায় এসে কবির অঙ্গ জুড়ায়। ➠ মাতৃভূমির স্নেহ ছায়ায় কবির অতুলনীয় সুখ ও শান্তি লাভ করেন, মাতৃভূমির ধন রত্নে কবির কোনো আগ্রহ নেই। তাই এর স্নেহ ছায়ায় কবির অঙ্গ জুড়ায়। গ মৃত্যু পর্যন্ত দেশের আলো বাতাসে বেঁচে থাকার আকাঙ্ক্ষা এবং বাংলাদেশের মাটিতেই শেষ শয্যা গ্রহণ। এই বিষয়টি আলোচনা করতে হবে। ঘ উদ্দীপক (i)-এ ‘জন্মভূমি’ কবিতার মতো দেশের সৌন্দর্য প্রকাশ পেয়েছে। উদ্দীপক (ii) ‘জন্মভূমি’ কবিতার মতোই বাংলার মাটিতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগের বিষয়টি প্রকাশিত -এ বিষয়ে গঠনমূলক আলোচনা করতে হবে। |
সৃজনশীল প্রশ্ন- ৮ |
---|
এই দেশে জন্ম-যেন এই দেশেতে মরি এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি, সকল দেশের রানি সে যে, আমার জন্মভূমি। ক. রবীন্দনাথের ছদ্মনাম কী? খ. জন্মভূমির ধনসম্পদ কবিকে আকর্ষণ করে না কেন? গ. উদ্দীপকে ‘জন্মভূমি’ কবিতার যে ভাবের প্রতিফলন লক্ষণীয় তা তুলে ধরো। ঘ. উদ্দীপকের মূলভাব ‘জন্মভূমি’ কবিতার মূলভাবকে পুরোপুরি ধারণ করেছে কি? মতের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করো। |
ক রবীন্দনাথের ছদ্মনাম ভানুসিংহ। খ জন্মভূমিকে ভালোবেসে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পরিপূর্ণ হয়েছেন। তাই এর ধনসম্পদ কবিকে আর আকর্ষণ করে না। ➠ এদেশের মাটিতে জন্মগ্রহণ করেছেন কবি। এ দেশকে ভালোবেসেছেন। তাঁর এ ভালোবাসার কোনো স্বার্থ নেই। এদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে কবির আত্মা তৃপ্ত হয়েছে। এ কারণেই এদেশের ধন সম্পদের প্রতি কবির আকর্ষণ নেই। গ এদেশের মাটিতে জন্মে এবং শেষ পর্যন্ত এদেশের মাটিতে মৃত্যুবরণ করার বিষয়টি বর্ণনা করতে হবে। ঘ দেশের সৌন্দর্যের প্রতি মুগ্ধতা ও দেশের মাটিতে মৃত্যুবরণ করার ভাবটি উদ্দীপকে সম্পূর্ণরূপে প্রকাশিত হয়েছে।-এ বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে হবে। |
সৃজনশীল প্রশ্ন- ৯ |
---|
সবুজ পাতার তরুর দেশে সকাল বেলা রবি আমি দু’চোখ ভরে দেখি শুধু আমার দেশের ছবি ক. ‘ডাকঘর’ কোন ধরনের রচনা? খ. সার্থক জনম আমার বলতে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন? গ. উদ্দীপক ও ‘জন্মভূমি’ কবিতার যে মিল রয়েছে, তা ব্যাখ্যা করো। ঘ. ‘উদ্দীপকটিতে ‘জন্মভূমি’ কবিতার সম্পূর্ণ ভাব ফুটে ওঠেনি’- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো। |
----------- |
সৃজনশীল প্রশ্ন- ১০ |
---|
সুমিত জানে মানুষের কাছে সবচেয়ে প্রিয় বস্তুটি হচ্ছে ‘মা’। ক্লাসে পাঠদানের
সময় তার স্যার বললেন, মা, মাতৃভাষা ও মাতৃভূমি সব মানুষের কাছে প্রাণাধিক
প্রিয়। সুমিত দাঁড়িয়ে তার স্যারের কাছে সবিনয়ে জানতে চায়, মায়ের মতো
মাতৃভাষা ও মাতৃভূমি এত প্রিয় কেন? স্যার তাকে বললেন, জন্মর পর মা যেমন দুধ
পান করিয়ে আমাদের বড়ো করেন তেমনি মাতৃভূমি তথা বাংলাদেশের প্রকৃতি ও বাংলা
ভাষার মমতার আশ্রয়ে আমরা বেঁচে আছি। তাই মাতৃভাষা ও মাতৃভূমি আমাদের মায়ের
মতোই। বাংলাদেশের প্রকৃতি ও বাংলা ভাষার মমতার আশ্রয়ে আমরা বেঁচে আছি। তাই
মাতৃভাষা ও মাতৃভূমি আমাদের মায়ের মতোই। ক. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কত বছর বয়সে বিলেতে ব্যারিস্টারি পড়তে গিয়েছিলেন? খ. ‘জন্মভূমির ছায়ায় এসে কবির অঙ্গ জুড়ায় কেন? গ. ‘মাতৃভূমি কীভাবে আমাদের মায়ের মতোই- ‘জন্মভূমি’ কবিতার আলোকে ব্যাখ্যা করো। ঘ. উদ্দীপকের বিষয়বস্তু এবং বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘জন্মভূমি’ কবিতার বিষয়বস্তু যেন একই সূত্রে গাঁথা। যুক্তিসহকারে বিশ্লেষণ করো। |
----------- |
সৃজনশীল প্রশ্ন- ১১ |
---|
আমজাদ আলীর ঘরবাড়ি নদীভাঙনে বিলীন হয়ে যায়। সরকার তাকে শহরের গুচ্ছ গ্রামে
থাকার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু আমজাদ আলী সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। সে
গ্রাম ছেড়ে কোথাও যাবে না। গ্রামের সৌন্দর্য তাকে মুগ্ধ করে। আমজাদ আলীর
ইচ্ছা মৃত্যুর পর তাকে যেন তার নিজের গ্রামের কবরস্থানে সমাহিত করা হয়। ক. ‘জন্মভূমি’ কবিতাটি কে রচনা করেছেন? খ. ‘ওই আলোতে নয়ন রেখে মুদব নয়ন শেষে’- ব্যাখ্যা করো। গ. ‘জন্মভূমি’ কবিতার কবি আমজাদ আলী চরিত্রের অন্যরূপ’- ব্যাখ্যা করো। ঘ. ‘গ্রামের সৌন্দর্য তাকে মুগ্ধ করে’ উক্তিটি ‘জন্মভূমি’ কবিতার আলোকে মূল্যায়ন করো। |
----------- |
সৃজনশীল প্রশ্ন- ১২ |
---|
ও আমার দেশের মাটি তোমার পরে ঠেকাই মাথা তোমাতে বিশ্বময়ীর- তোমাতে বিশ্বমায়ের আঁচল পাতা তুমি মিশেছো মোর দেহের প্রাণে তুমি মিলেছো মোর প্রাণে-মনে তোমার ঐ শ্যামল বরণ কোমল স্মৃতি মর্মে গাঁথা ক. কবি সুখ শান্তি খুঁজে পান কীসে? খ. নিজের জন্মভূমিকে পৃথিবীর সকল দেশের সেরা মনে হয় কেন? গ. উদ্দীপকটি কোন দিক দিয়ে ‘জন্মভূমি’ কবিতার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা করো। ঘ. উদ্দীপক ও ‘জন্মভূমি’ কবিতার মূলভাব এক ও অভিন্ন- তোমার মতামত দাও। |
----------- |
সৃজনশীল প্রশ্ন- ১৩ |
---|
i. ও আমার জন্মভূমি
ii. ওমা তোমার চরণ দু’টি বক্ষে আমার ধরি খ. জন্মভূমির ছায়ায় এসে কবির অঙ্গ জুড়ায় কেন? গ. উদ্দীপক দু’টির সাথে ‘জন্মভূমি’ কবিতার মধ্যকার সাদৃশ্য নিরূপণ করো। ঘ. ‘স্বীয় জন্মভূমিতে জন্ম গ্রহণ করার গৌরব প্রকাশে এবং এতে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগের আকাঙ্ক্ষার মধ্যে প্রকৃত দেশপ্রেমেরই পরিচয় নিহিত।’ উদ্দীপকদ্বয় এবং ‘জন্মভূমি’ কবিতা অবলম্বনে মন্তব্যটি বিশ্লেষণ করো। |
----------- |
সৃজনশীল প্রশ্ন- ১৪ |
---|
আজি বাংলাদেশের হৃদয় হতে কখন আপনি তুমি এই অপরূপ রূপে বাহির হলে জননী। ওগো মা, তোমায় দেখে দেখে আঁখি না ফিরে। তোমার দুয়ার আজি খুলে গেছে সোনার মন্দিরে। ক. কবির চোখ জুড়ায় কীসে? খ. ‘ওই আলোতে নয়ন রেখে মুদব নয়ন শেষে’ পঙক্তিটি বুঝিয়ে লেখো। গ. উদ্দীপকে ‘জন্মভূমি’ কবিতার যে বিষয়ের মিল লক্ষ করা যায় তা ব্যাখ্যা করো। ঘ. “স্বদেশের প্রতি অকৃত্রিম অনুরাগই উদ্দীপক ও ‘জন্মভূমি’ কবিতার মূল বিষয়।”- উক্তিটি বিশশ্লেষণ করো। |
----------- |
সৃজনশীল প্রশ্ন- ১৫ |
---|
সূর্যোদয়ে তুমি, সূর্যাস্তেও তুমি ও আমার বাংলাদেশ প্রিয় জন্মভূমি। ক. গগনে কী হেসে ওঠে? খ. ‘ওই আলোতে নয়ন রেখে মুদব নয়ন শেষে’- কথাটি বুঝিয়ে লেখো। গ. ‘জন্মভূমি’ কবিতার সঙ্গে উদ্দীপকের সাদৃশ্য বিচার করো। ঘ. ‘জন্মভূমি’ কবিতা ও উদ্দীপকের চেতনাগত অভিন্নতা থাকলেও বক্তব্যে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে।’ তোমার মতামতের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করো। |
----------- |
তথ্যসূত্র : |
---|
১. চারুপাঠ: ষষ্ঠ শ্রেণি, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, বাংলাদেশ,
২০২৫। ২. আধুনিক বাংলা অভিধান: বাংলা একাডেমি, এপ্রিল, ২০১৮। ৩. ব্যবহারিক বাংলা অভিধান: বাংলা একাডেমি, ১৮তম, ২০১৫। |