‘পল্লিসাহিত্য’ প্রবন্ধের মূলপাঠ, শব্দার্থ, মূলভাব, বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও সৃজনশীল প্রশ্ন-উত্তর
![]() |
পল্লিসাহিত্য |
পল্লিসাহিত্য
মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্
পল্লিগ্রামে শহরের মতো গায়ক, বাদক, নর্তক না থাকলেও তার অভাব নেই। চারদিকে কোকিল, দোয়েল, পাপিয়া প্রভৃতি পাখির কলগান, নদীর কুলকুল ধ্বনি, পাতার মর্মর শব্দ, শ্যামল শস্যের ভঙ্গিময় হিলাদুলা প্রচুর পরিমাণে শহরের অভাব এখানে পূর্ণ করে দিচ্ছে। পল্লির ঘাটেমাঠে, পল্লির আলোবাতাসে, পল্লির প্রত্যেক পরতে পরতে সাহিত্য ছড়িয়ে আছে। কিন্তু বাতাসের মধ্যে বাস করে যেমন আমরা ভুলে যাই বায়ু- সাগরে আমরা ডুবে আছি, তেমনি পাড়াগাঁয়ে থেকে আমাদের মনেই হয় না যে কত বড়ো সাহিত্য ও সাহিত্যের উপকরণ ছড়িয়ে আছে।
শ্রদ্ধেয় ডক্টর দীনেশচন্দ্র সেন মৈমনসিংহ গীতিকা সংগ্রহ করে দেখিয়েছেন, সাহিত্যের কী এক অমূল্য খনি পল্লিজননীর বুকের কোণে লুকিয়ে আছে। সুদূর পশ্চিমের সাহিত্যরসিক রোমাঁ রোলাঁ পর্যন্ত ময়মনসিংহের মদিনা বিবির সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়েছেন। মনসুর বয়াতির মতো আরও কত পল্লিকবি শহুরে চক্ষুর অগোচরে পল্লিতে আত্মগোপন করে আছেন, কে তাঁদের সাহিত্যের মজলিসে এসে জগতের সঙ্গে চেনাশোনা করিয়ে দেবে? আজ যদি বাংলাদেশের প্রত্যেক পল্লি থেকে এইসব অজানা অচেনা কবিদের গাথা সংগ্রহ করে প্রকাশ করা হতো, তাহলে দেখা যেত বাংলার মুসলমানও সাহিত্য সম্পদে কত ধনী। কিন্তু হায়! এ কাজের জন্য স্বেচ্ছাসেবক দল কই?
আমরা পল্লিগ্রামে বুড়োবুড়ির মুখে কোনো ঝিল্লিমুখর সন্ধ্যাকালে যেসব কথা শুনতে শুনতে ছেলেবেলায় ঘুমিয়ে পড়েছি, সেগুলি না কত মনোহর! কত চমকপ্রদ! আরব্য উপন্যাসের আলাউদ্দিনের আশ্চর্য প্রদীপ, আলিবাবা ও চল্লিশ দস্যু প্রভৃতির চেয়ে পল্লির উপকথাগুলোর মূল্য কম নয়। আধুনিক শিক্ষার কর্মনাশা স্রোতে সেগুলো বিস্মৃতির অতল গর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে। এখনকার শিক্ষিত জননী সন্তানকে আর রাখালের পিঠা গাছের কথা, রাক্ষসপুরীর ঘুমন্ত রাজকন্যার কথা বা পঙ্খিরাজ ঘোড়ার কথা শুনান না, তাদের কাছে বলেন আরব্য উপন্যাসের গল্প কিংবা Lamb's Tales from Shakespeare-এর গল্পের অনুবাদ। ফলে কোনো সুদূর অতীতের সাক্ষীস্বরূপ এই রূপকথা নষ্ট হয়ে অতীতের সঙ্গে আমাদের সম্বন্ধ লোপ করে দিচ্ছে। যদি আজ বাংলার সমস্ত রূপকথা সংগৃহীত হতো, তবে কোনো প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণা করে দেখিয়ে দিতে পারতেন যে, বাংলার নিভৃত কোণের কোনো কোনো পিতামহী মাতামহীর গল্প ভারতীয় উপমহাদেশের অন্য প্রান্তে কিংবা ভারত উপমহাদেশের বাইরে সিংহল, সুমাত্রা, যাভা, কম্বোডিয়া প্রভৃতি স্থানে এমনিভাবে প্রচলিত আছে। হয়তো এশিয়ার বাইরে ইউরোপখণ্ডে লিথোনিয়া কিংবা ওয়েলসের কোনো পল্লিরমণী এখনও হুবহু বা কিছু রূপান্তরিতভাবে সেই উপকথাগুলো তার ছেলেপুলে বা নাতি-পোতাকে শোনাচ্ছে। কে আছে এই উপকথাগুলো সংগ্রহ করে তাদের অবশ্যম্ভাবী ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করবে? ইউরোপ, আমেরিকা দেশে বড়ো বড়ো বিদ্বানদের সভা আছে, যাকে বলা হয় Folklore Society। তাদের কাজ হচ্ছে এইসব সংগ্রহ করা এবং অন্য সভ্য দেশের উপকথার সঙ্গে সাদৃশ্য নিয়ে বিচার করা। এগুলো নৃতত্ত্বের মূল্যবান উপকরণ বলে পণ্ডিত সমাজে গৃহীত হয়। শ্রীযুক্ত দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদারের 'ঠাকুরমার ঝুলি' বা 'ঠাকুরদার থলে' যথেষ্ট নয়। বাংলাদেশের সমস্ত উপকথা এক জায়গায় জড় করলে বিশ্বকোষের মতো কয়েক বালামে তার সংকুলান হতো না।
আমরা Shakespeare-এ পড়েছি রাক্ষসদের বাঁধাবুলি হচ্ছে Fi, Fie, foh, fun! smell
the blood of a British man- এর সঙ্গে তুলনা করে পল্লির ‘হাঁউ, মাঁউ, খাঁউ,
মানুষের গন্ধ পাঁউ’, এ সাদৃশ্য হলো কোথা থেকে? তবে কি একদিন ঐ সাদা ইংরেজ ও এই
কালো বাঙালির পূর্বপুরুষগণ ভাই ভাই রূপে একই তাঁবুর নিচে বাস করত? সে আজ কত দিনের
কথা কে জানে? আমরা কথায় কথায় প্রবাদ বাক্য জুড়ে দিই- যেমন ‘দাঁত থাকতে দাঁতের
মর্যাদা নেই’, ‘ধরি মাছ না ছুঁই পানি’, ‘আপনি বাঁচলে বাপের নাম’, এই রকম আরও কত
কী! তারপর ডাকের কথা আছে, খনার বচন আছে।
যেমন: ধরুন-
কলা রুয়ে না কেটো পাত,
তাতেই কাপড় তাতেই ভাত।
প্রবাদ বাক্যে এবং ডাক ও খনার বচনে কত যুগের ভূয়োদর্শনের পরিপক্ব ফল সঞ্চিত হয়ে আছে, কে তা অস্বীকার করতে পারে? শুধু তাই নয়, জাতির পুরনো ইতিহাসের অনেক গোপন কথাও এর মধ্যে খুঁজে পাওয়া যায়।
আমরা আজও বলি- ‘পিঁড়েয় বসে পেঁড়োর খবর।’ এই প্রবাদ বাক্যটি সেই সময়ের কথা মনে করিয়ে দেয়, যখন পাণ্ডুয়া বঙ্গের রাজধানী ছিল। কে এই প্রবাদ বাক্য, ডাক, খনার বচনগুলি সংগ্রহ করে তাদের চিরকাল জীবন্ত করে রাখবে?
তারপর ধরুন, ছড়ার কথা। কথায় কথায় ছেলেমেয়েগুলো ছড়া কাটতে থাকে। রোদের সময় বৃষ্টি
হচ্ছে, অমনি তারা সমস্বরে ঝংকার দিয়ে ওঠে-
রোদ হচ্ছে, পানি হচ্ছে,
খেঁকশিয়ালীর বিয়ে হচ্ছে।
এর সঙ্গে সঙ্গে মনে করুন মায়ের সেই ঘুমপাড়ানী গান, সেই খোকা-খুকির ছড়া। এগুলি সরস প্রাণের জীবন্ত উৎস, কিন্তু আজ দুঃখে দৈন্যে প্রাণে সুখ নেই। ছড়াও ক্রমে লোকে ভুলে যাচ্ছে। কে এগুলিকে বইয়ের পাতায় অমর করে রাখবে?
শুধু ছড়া কেন? খেলাধুলার না কত বাঁধা গৎ আছে বা ছিল আমাদের এ দেশে। যখন ফুটবল,
ব্যাটবলের নাম কারও জানা ছিল না, তখন কপাটি খেলার খুব ধুম ছিল। সে খেলার সঙ্গে কত
না বাঁধা বুলি ছেলেরা ব্যবহার করত-
এক হাত বোল্লা বার হাত শিং
উড়ে যায় বোল্লা ধা তিং তিং।
বিদেশি খেলার প্রচলনের সঙ্গে সঙ্গে এসব লোপ পাবার উপক্রম হয়েছে। কে এদের বাঁচিয়ে রাখবে?
তারপর ধরুন, পল্লিগানের কথা। পল্লিসাহিত্য সম্পদের মধ্যে এই গানগুলি অমূল্য
রত্নবিশেষ। সেই জারি গান, সেই ভাটিয়ালি গান, সেই রাখালি গান, মারফতি গান- গানের
এক অফুরন্ত ভাণ্ডার পল্লির ঘাটে, মাঠে ছড়ানো রয়েছে। তাতে কত প্রেম, কত আনন্দ, কত
সৌন্দর্য, কত তত্ত্বজ্ঞান ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। শহুরে গানের প্রভাবে সেগুলো এখন
বর্বর চাষার গান বলে ভদ্রসমাজে আর বিকায় না। কিন্তু-
মনমাঝি তোর বৈঠা নে রে
আমি আর বাইতে পারলাম না।
এই গানটির সঙ্গে আপনার শহুরে গানের কোনো তুলনা হতে পারে? কিন্তু ধারাবাহিকরূপে সেগুলো সংগ্রহের জন্য কোনো চেষ্টা হচ্ছে কি?
এ পর্যন্ত যা বললাম সেগুলো হচ্ছে পল্লির প্রাচীন সম্পদ। সাহিত্যের ভাণ্ডারে দান করবার মতো পল্লির নতুন সম্পদেরও অভাব নেই। আজকাল বাংলাসাহিত্য বলে যে সাহিত্য চলছে, তার পনেরো আনা হচ্ছে শহুরে সাহিত্য, সাধু ভাষায় বলতে গেলে নাগরিক সাহিত্য। সে সাহিত্যে আছে রাজ-রাজড়ার কথা, বাবু-বিবির কথা, মোটরগাড়ির কথা, বিজলি বাতির কথা, সিনেমা থিয়েটারের কথা, চায়ের বাটিতে ফুঁ দেবার কথা। এইসব কথা নিয়ে গল্প, উপন্যাস, কবিতা, নাটক রাশি রাশি লেখা হচ্ছে। পল্লির গৃহস্থ কৃষকদের, জেলে-মাঝি, মুটে-মজুরের কোনো কথা তাতে ঠাঁই নাই। তাদের সুখ-দুঃখ, তাদের পাপ-পুণ্য, তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষার কথায় কজন মাথা ঘামাচ্ছে? আমাদের বিশ্ববরেণ্য কবিসম্রাটও একবার ‘এবার ফিরাও মোরে’ বলে আবার পুরানো পথে নাগরিক সাহিত্য নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন। ধানগাছে তক্তা হয় কিনা, এখন শহুরে লোকেরা এটা জানলেও পাড়াগাঁয়ের জীবন তাদের কাছে এক অজানা রাজ্য। সেটা কারো কাছে একেবারে পচা জঘন্য, আর কারো কাছে একেবারে চাঁদের জ্যোৎস্না দিয়ে ঘেরা। তাঁরা পল্লির মর্মকথা কী করে জানবেন? কী করেই বা তার মুখচ্ছবিখানি আঁকবেন? আমাদের আজ দরকার হয়েছে শহুরে সাহিত্যের বালাখানার পাশে গেঁয়ো সাহিত্যের জোড়াবাংলা ঘর তুলতে। আজ অনেকের আত্মা ইট-পাথর ও লোহার কৃত্রিম বাঁধন থেকে মুক্ত হয়ে মাটির ঘরে মাটির মানুষ হয়ে থাকতে চাচ্ছে। তাদের জন্য আমাদের কিছু গড়াগাঁথার দরকার আছে। ইউরোপ, আমেরিকায় আজ এই Proletariat সাহিত্য ক্রমে আদরের আসন পাচ্ছে, আমাদের দেশেও পাবে। কিন্তু কোথায় সে পল্লির কবি, ঔপন্যাসিক ও সাহিত্যিক, যাঁরা নিখুঁতভাবে এই পল্লির ছবি শহরের চশমা-আঁটা চোখের সামনে ধরতে পারবেন?
এই সমস্ত রূপকথা, পল্লিগাথা, ছড়া প্রভৃতি দেশের আলোবাতাসের মতো সকলেরই সাধারণ সম্পত্তি। তাতে হিন্দু মুসলমান কোনো ভেদ নেই। যেরূপ মাতৃস্তন্যে সন্তান মাত্রেরই অধিকার, সেরূপ এই পল্লিসাহিত্যে পল্লিজননীর হিন্দু মুসলমান সকল সন্তানেরই সমান অধিকার।
এক বিরাট পল্লিসাহিত্য বাংলায় ছিল। তার কঙ্কালবিশেষ এখনও কিছু আছে, সময়ের ও রুচির পরিবর্তনে সে অনাদৃত হয়ে ধ্বংসের পথে দাঁড়িয়েছে। নেহাত সেকেলে পাড়াগাঁয়ের লোক ছাড়া সেগুলোর আর কেউ আদর করে না। কিন্তু একদিন ছিল যখন নায়ের দাঁড়ি-মাঝি থেকে গৃহস্থের বউ-ঝি পর্যন্ত, বালক থেকে বুড়ো পর্যন্ত, আমির থেকে গরিব পর্যন্ত সকলকেই এগুলো আনন্দ উপদেশ বিলাতো। যদি পল্লিসাহিত্যের দিকে পল্লিজননীর সন্তানেরা মনোযোগ দেয়, তবেই আমার মনে হয় এরূপ পল্লিসাহিত্য সভার আয়োজন সার্থক হবে, নচেৎ এ সকল কেবলি ভুয়া, কেবলি ফক্কিকার।
উৎস নির্দেশ : |
---|
১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দে কিশোরগঞ্জ জেলায় ‘পূর্ব ময়মনসিংহ সাহিত্য সম্মিলনী’র একাদশ অধিবেশনে ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ সভাপতিত্ব করেন। এ সম্মেলনে সভাপতি হিসেবে তিনি যে অভিভাষণ দেন, তারই পুনর্লিখিত রূপ এই ‘পল্লিসাহিত্য’ প্রবন্ধটি। |
শব্দার্থ ও টীকা : |
---|
➠ কলগান- শ্রুতিমধুর ধ্বনি। ➠ পরতে পরতে- স্তরে স্তরে। ➠ ডক্টর দীনেশচন্দ্র সেন- বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের গবেষক ও সাধক দীনেশচন্দ্র সেন মানিকগঞ্জ জেলার বগজুরী গ্রামে ১৮৬৬ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। ১৩৩৪ বঙ্গাব্দে তিনিই সর্বপ্রথম ‘বঙ্গভাষা ও সাহিত্য’ গ্রন্থে বাংলাদেশের লোকসাহিত্যের গৌরব ও মর্যাদা সাহিত্যের দরবারে তুলে ধরেন। তাঁরই সুযোগ্য সম্পাদনায় চন্দ্রকুমার দে কর্তৃক সংগৃহীত ‘মৈমনসিংহ গীতিকা’ এবং ‘পূর্ববঙ্গ গীতিকা’ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত হয়। দীনেশচন্দ্র সেনের মৌলিক গ্রন্থগুলোর মধ্যে রামায়ণী কথা, বৃহৎবঙ্গ, বেহুলা, ফুল্লরা, জড়ভরত ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। ১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি পরলোকগমন করেন। ➠ রোমাঁ রোলাঁ- (Roman Rolland) ফরাসি দেশের কালজয়ী সাহিত্যিক ও দার্শনিক। রোমাঁ রোলাঁর জন্ম ২৯শে জানুয়ারি ১৮৬৬ খ্রিষ্টাব্দে। ‘জাঁ ক্রিস্তফ’ উপন্যাস তাঁর অমূল্য কীর্তি। এ গ্রন্থের জন্য তিনি ১৯১৫ খ্রিষ্টাব্দে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। ৩০শে ডিসেম্বর ১৯৩৯ সালে তাঁর মৃত্যু হয়। ➠ মদিনা বিবি- মৈমনসিংহ গীতিকায় অন্তর্ভুক্ত লোকগাথা ‘দেওয়ানা-মদিনা’র নায়িকা। ➠ মনসুর বয়াতি- দেওয়ানা-মদিনা লোকগাথার প্রখ্যাত কবি। আলাউদ্দিনের আশ্চর্য প্রদীপ-আরব্য উপন্যাসের অন্যতম চিত্তাকর্ষক গল্প ‘আলাউদ্দিনের আশ্চর্য প্রদীপ’। আলাউদ্দিন নামের এক সাহসী তরুণ এক চতুর জাদুকরের বিস্ময়কর প্রদীপ লাভ করে। আলাউদ্দিন ছিল গরিব এক দুঃখিনী মায়ের একমাত্র ছেলে। এ প্রদীপে ঘষা দিলেই এক মহাশক্তিধর দৈত্য এসে হাজির হতো এবং আলাউদ্দিনের আদেশ অনুযায়ী অলৌকিক কাজ করত। এভাবেই এ প্রদীপের বদৌলতে আলাউদ্দিন প্রচুর ধনসম্পদের অধিকারী হয়। মায়ের দুঃখও দূর হয়। ➠ আলিবাবা ও চল্লিশ দস্যু- আরব্য উপন্যাসের অন্যতম বিখ্যাত গল্প। গরিব কাঠুরে আলিবাবা ভাগ্যক্রমে পাহাড়ের গুহায় দস্যুদলের গুপ্ত ধনভাণ্ডারের সন্ধান পায়। সেখান থেকে প্রচুর ধনরত্ন এনে সে বাড়িতে রাখে। দস্যুদল আলিবাবার ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য তার বাড়িতে আতিথ্য গ্রহণ করে। আলিবাবা তার বুদ্ধিমতী বাঁদি মর্জিনার সহায়তায় এই দস্যুদলকে কাবু করে। ➠ Lamb's Tales from Shakespeare- বিশ্ববিখ্যাত ইংরেজি নাট্যকার ও কবি উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের নাটকগুলো চার্লস ল্যাম্ব সহজ ভাষায় কিশোরদের উপযোগী করে রূপান্তর করেন। সেই গ্রন্থেরই উল্লেখ এখানে করা হয়েছে। ➠ প্রত্নতাত্ত্বিক- পুরাতত্ত্ববিদ। যিনি প্রাচীন লিপি, মুদ্রা বা ভগ্নাবশেষ থেকে পুরাকালের তথ্য নির্ণয় করেন। ➠ Folklore Society- যে সমিতি লোকশিল্প ও গান, উৎসব-অনুষ্ঠান ও খেলাধুলার উপাদান সংগ্রহ করে এবং প্রচারের জন্য নানা কাজ করে থাকে। এ সমিতি লোকসাহিত্য সংরক্ষণ ও গবেষণার কাজে নিয়োজিত। উইলিয়াম থমস ‘ফোকলোর’ কথাটির উদ্ভাবক। ১৮৪৮ সালে সর্বপ্রথম লন্ডনে এই সমিতি গঠিত হয়। ➠ নৃতত্ত্ব (Anthropology)- মানুষের উৎপত্তি ও বিকাশ সংক্রান্ত বিজ্ঞান। ➠ দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার- প্রখ্যাত শিশু সাহিত্যিক ও বাংলা লোকগাথা ও রূপকথার রূপকার দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদারের জন্ম ১২৮৪ বঙ্গাব্দে, মৃত্যু ১৩৬৩ সনে। তিনি বাংলার নানা অঞ্চল ঘুরে বহু পরিশ্রম করে রূপকথা সংগ্রহ করেন। তাঁর রচিত ঠাকুরমার ঝুলি শিশুদের প্রিয় বই। ➠ প্রবাদবাক্য- দীর্ঘদিন ধরে লোকমুখে প্রচলিত বিশ্বাসযোগ্য কথা বা জনশ্রুতি, যেমন, ‘নাচতে না জানলে উঠান বাঁকা’। ➠ খনা- প্রাচীন ভারতের প্রখ্যাত নারীজ্যোতিষী। বাংলাদেশের জলবায়ু-নির্ভর কৃষিতত্ত্ব বিষয়ে উপদেশমূলক খনার ছড়াগুলো অষ্টম থেকে দ্বাদশ শতাব্দী পর্যন্ত সময়ে রচিত বলে ধারণা করা হয়। পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার অন্তর্গত বারাসত মহকুমার দেউলি গ্রামে তাঁর নিবাস ছিল বলে জনশ্রুতি আছে। ➠ বালাম- বইয়ের খণ্ড, ইংরেজি Volume। ➠ ভূয়োদর্শন- প্রচুর দেখা ও শোনার মাধ্যমে অর্জিত অভিজ্ঞতা। ➠ বালাখানা- প্রাসাদ। ➠ Proletariat সাহিত্য- অত্যাচারিত শ্রমজীবী দুঃখী মানুষের সাহিত্য। ➠ ফক্কিকার- ফাঁকিবাজি। |
কর্ম-অনুশীলন : |
---|
১. পল্লিসাহিত্যের বিভিন্ন উপাদানের তালিকা তৈরি করো। ২. পাঁচটি খনার বচন লেখো। ৩. বর্ষায় পল্লির প্রাকৃতিক দৃশ্যের বর্ণনা দাও। |
পাঠ-পরিচিতি : |
---|
‘পল্লিসাহিত্য’ প্রবন্ধে ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ বাংলার পল্লিসাহিত্যের বিশেষ কয়েকটি দিক সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। লেখক এই প্রসঙ্গে বলেছেন যে, একদিন এক বিরাট পল্লিসাহিত্য বাংলাদেশে ছিল, আজ উপযুক্ত গবেষক এবং আগ্রহী সাহিত্যিকদের উদ্যোগ ও চেষ্টায় সেই সম্পদগুলো সংগ্রহ করা নিতান্ত প্রয়োজন। বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতির সংরক্ষণ এবং প্রসারের জন্য এ কাজ একান্ত আবশ্যক। প্রবন্ধটি আবহমান কালের বাঙালি, বাংলাদেশ, লোকসাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রতি সকলকে সচেতন হতে উৎসাহিত করে। |
লেখক পরিচিতি : |
---|
মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ ১০ই জুলাই ১৮৮৫ সালে পশ্চিম বঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার বসিরহাট মহকুমার পেয়ারা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি কলকাতা সিটি কলেজ থেকে সংস্কৃতে বি.এ. অনার্স পাস করেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি তুলনামূলক ভাষাতত্ত্বে এম.এ. ডিগ্রি লাভ করেন। মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ প্যারিসের সোরবন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভাষাতত্ত্বে ডিপ্লোমা এবং ডি. লিট, লাভের গৌরব অর্জন করেন। তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অধ্যাপক এবং অধ্যক্ষরূপে নিয়োজিত ছিলেন। অসামান্য প্রতিভাধর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ ছিলেন সুপণ্ডিত ও ভাষাবিদ। প্রাচীন ভাষা ও সাহিত্য সম্পর্কে দুরূহ ও জটিল সমস্যার যুক্তিপূর্ণ ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণে তিনি অসামান্য পাণ্ডিত্যের পরিচয় দিয়েছেন। বাংলা ভাষার ইতিবৃত্ত, বাংলা সাহিত্যের কথা (দুই খণ্ড) এবং বাংলা ভাষার ব্যাকরণ তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ। তাঁর অন্যতম কালজয়ী সম্পাদনা গ্রন্থ ‘বাংলাদেশের আঞ্চলিক ভাষার অভিধান’। শিশু পত্রিকা আঙুর তাঁরই সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়। এ ছাড়া পাঠ্যপুস্তক অনুবাদ এবং নানা মৌলিক রচনায় তিনি তাঁর দক্ষতার পরিচয় রেখেছেন। ১৩ই জুলাই ১৯৬৯ সালে ঢাকায় মুহম্মদ শহীদুল্লাহর জীবনাবসান ঘটে। |
বহুনির্বাচনি প্রশ্ন : |
---|
প্রশ্ন থেকে
অভিনন্দন!
|
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন : |
---|
প্রশ্ন-১. পল্লির কোথায় কোথায় সাহিত্য লুকিয়ে আছে? উত্তর: পল্লির ঘাটে-মাঠে পল্লির আলো-বাতাসে পল্লির প্রত্যেক পরতে পরতে সাহিত্য ছড়িয়ে আছে। প্রশ্ন-২.‘মৈমনসিংহ গীতিকা’ কে সংগ্রহ করেছেন? উত্তর: মৈমনসিংহ গীতিকা সংগ্রহ করেছেন চন্দ্র কুমার দে। প্রশ্ন-৩. ‘পিড়েয় বসে পেঁড়োর খবর’ প্রবাদ বাক্যটি কোন সময়ের কথা মনে করিয়ে দেয়? উত্তর: ‘পিড়েয় বসে পেঁড়োর খবর’ প্রবাদ বাক্যটি সেই সময়ের কথা মনে করিয়ে দেয় যখন পান্ডুয়া বঙ্গের রাজধানী ছিল। প্রশ্ন-৪.ফুটবল, ব্যাটবলের আগে কোন খেলার খুব ধুম ছিল? উত্তর: ফুটবল, ব্যাটবলের আগে কপাটি খেলার খুব ধুম ছিল। প্রশ্ন-৫. কোন গানগুলো এখন বর্বর চাষার গান বলে ভদ্র সমাজে আর বিকায় না? উত্তর: পল্লিগানগুলো এখন বর্বর গান বলে ভদ্র সমাজে আর বিকায় না। |
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন : |
---|
প্রশ্ন-১.পল্লির উপকথাগুলো হারিয়ে যাচ্ছে কেন? প্রশ্ন-২. Folklore Society- এর কাজ হচ্ছে উপকথাগুলো সংগ্রহ করে অন্য সভ্য দেশের উপকথার সঙ্গে সাদৃশ্য বিচার করা। |
সৃজনশীল প্রশ্ন- ১ |
---|
এ লেভেল পরীক্ষা শেষে মিতু বাবা-মা’র সঙ্গে গ্রামের বাড়ি বেড়াতে আসে। গ্রামে তখন পৌষ মেলা বসেছে। মেলায় মিতু বয়াতীর কণ্ঠে ‘একটা ছিল সোনার কইন্যা, মেঘ বরণ কেশ, ভাটি অঞ্চলে ছিল সেই কইন্যার দেশ’ গানটি শুনে বিমোহিত হয়। সে তার বাবা-মা’কে জিজ্ঞাসা করে মা এতদিন কেন আমি এ গানগুলো শুনি নি। এ গানগুলোই তো বড় আপু খুঁজছে তার থিসিসের জন্য। আমি এবার আপুর জন্য গানগুলো সংগ্রহ করে নিয়ে যাব।
ক. সরস প্রাণের জীবন্ত উৎস কোনটি? |
ক. সরস প্রাণের জীবন্ত উৎস হলো- ঘুমপাড়ানি গান ও খোকা-খুকির ছড়া।
গ. মিতুর এ গানগুলো না শোনার কারণ হলো শহুরে গানের প্রভাব। এ বিষয়টি
‘পল্লিসাহিত্য’ প্রবন্ধেও উত্থাপিত হয়েছে।
ঘ. “উদ্দীপকের মিতুই যেন ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্র চাওয়া পল্লিজননীর
মনোযোগী সন্তান।”- মন্তব্যটি যুক্তিযুক্ত এবং যথার্থ। |
সৃজনশীল প্রশ্ন- ২ |
---|
বাংলা প্রবাদ প্রবচনগুলো লোকসংস্কৃতির সেই সাধারণজনের সৃজনী প্রতিভার স্বাক্ষর বহন করছে, যারা অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে অর্জন করছে এই সব প্রাবাদিক জ্ঞান। এই জ্ঞান তাই শত শত বছরকাল পেরিয়ে বিংশ শতাব্দীর যান্ত্রিক বর্তমানেও নিজস্বতায় ভাস্বর হয়ে রয়েছে। কেননা, ওই কথামালায় লেগে আছে জন-মননের রূপাদল আর শাশ্বত চিন্তার ফসল।
ক. পাণ্ডয়া কিসের রাজধানী ছিল? |
ক. পাণ্ডয়া বঙ্গের রাজধানী ছিল।
গ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘পল্লিসাহিত্য’ প্রবন্ধের সাদৃশ্য রয়েছে প্রবাদ
প্রবচনে সাধারণ মানুষের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার কথা বলায়।
ঘ. “উদ্দীপকটি ‘পল্লিসাহিত’ প্রবন্ধের সম্পূর্ণ ভাবকে প্রতিফলিত করে না।”
-মন্তব্যটি যথার্থ। |
সৃজনশীল প্রশ্ন- ৩ |
---|
১৯৬৩ সালের ২১শে ডিসেম্বর ‘ঋড়ষশ খরঃবৎধৎু অফারংড়ৎু ঈড়সসরঃঃবব’-র সপ্তদশ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী একাডেমির সংগ্রাহকদেরকে লোকসাহিত্যের উপাদান সংগ্রহের সাথে সাথে বস্তুগত লোকসংস্কৃতির উপকরণ যেমন প্রাচীন মুদ্রা, হস্তলিখিত প্রাচীন পা-ুলিপ, লোক অলঙ্কার, লোক-বাদ্যযন্ত্র, নকশি কাঁথা, নকশি শিকা, নকশি পাখা প্রভৃতিসহ লোকশিল্পের অন্যান্য উপাদান সংগ্রহের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। মূলত তখন থেকেই মৌখিক সাহিত্যের উপাদানের পাশাপাশি লোকশিল্পের নিদর্শনাদি সংগ্রহের কাজ শুরু হয়। বিভিন্ন জেলা থেকে ক্রয়ের মাধম্যে সংগৃহীত লোকশিল্প নিদর্শন ১৯৬৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে বর্ধমান ভবনের নিচতলার বারান্দায় সাজিয়ে রাখা হয়। ক. কোথায় এক বিরাট পল্লিসাহিত্য ছিল? |
ক. বাংলায় এক বিরাট পল্লিসাহিত্য ছিল। .গ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘পল্লিসাহিত্য প্রবন্ধের বিভিন্ন উপকরণ সংগ্রহের বৈসাদৃশ্য রয়েছে। ঘ. “উদ্দীপকটিতে ‘পল্লিসাহিত্য’ প্রবন্ধের লেখকের মনের অভিব্যক্তিই প্রতিফলিত হয়েছে।”- উক্তিটি যথার্থ। |
সৃজনশীল প্রশ্ন- ৪ |
---|
ও জীর্ণ কাষ্ঠের একখান তরী, (ক) রোমাঁ রোলাঁ কার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়েছেন? |
ক. রোঁমা রোলাঁ ‘দেওয়ানা-মদিনা’ পালার মদিনা বিবির সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়েছেন। গ. উদ্দীপকে ‘পল্লিসাহিত্য’ প্রবন্ধের ভাটিয়ালি গানের দিকটি উঠে এসেছে। ঘ. “উদ্দীপকটি ‘পল্লিসাহিত্য’ প্রবন্ধের খণ্ডাংশ মাত্র।”- মন্তব্যটি যথার্থ। |
সৃজনশীল প্রশ্ন- ৫ |
---|
i. বিশ হাত করি ফাঁক, (ক) প্রত্নতাত্ত্বিক অর্থ কী? |
ক. প্রত্নতাত্ত্বিক অর্থ পুরাতত্ত্ববিদ। গ. উদ্দীপকটিতে ‘পল্লিসাহিত্য’ প্রবন্ধের খনার বচনের দিকটির ইঙ্গিত রয়েছে পল্লির প্রাচীন অমূল্য সম্পদের মধ্যে অন্যতম একটি সম্পদ হলো খনার বচন। ঘ. “উদ্দীপকটি পল্লিসাহিত্য সম্পদের একটি খণ্ডাংশ মাত্র।”- মন্তব্যটি যথার্থ। |
সৃজনশীল প্রশ্ন- ৬ |
---|
এ লেভেল পরীক্ষা শেষে মিতু মা-বাবার সঙ্গে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে আসে। গ্রামে তখন পৌষ মেলা বসেছে। মেলায় মিতু বয়াতির কন্ঠে ‘একটা ছিল সোনার কইন্যা, মেঘবরণ কেশ, ভাটি অঞ্চলে ছিল সেই কইন্যার দেশ’ গানটি শুনে বিমোহিত হয়। সে তার মাকে জিজ্ঞাসা করে- মা এতদিন আমি কেন এই গানগুলো শুনিনি। এ গানগুলো তো বড় আপু খুঁজছে তার থিসিসের জন্য। আমি এবার আপুর জন্য গানগুলো সংগ্রহ করে নিয়ে যাব।
ক. সরস প্রাণের জীবন্ত উৎস কোনটি? |
----------- |
সৃজনশীল প্রশ্ন- ৭ |
---|
প্রবাসে বসবাস করা মুরসালাত ছুটিতে বাবার সাথে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে আসে। তখন বৈশাখ মাস। পাশের গ্রামে বৈশাখী মেলা। মেলায় গান-বাজনাসহ নানান কর্মকা- চলছে। হঠাৎ মেলার এক প্রান্ত থেকে ভেসে আসা ‘আমায় এত রাতে কেনে ডাক দিলি প্রাণ কোকিলা রে’ গানটি শুনে সে বিমোহিত হয়। বাড়িতে এসে বাবাকে মেলায় শোনা গানের কথা বলে। তারা দু’জনে মিলে পরদিন আবারও মেলায় ছুটে যায় এবং এ ধরনের গানগুলো সংগ্রহ করে নিয়ে আসে। বাংলাদেশের এই লোক-সংস্কৃতিকে সে বিদেশের মাটিতে পরিচয় করিয়ে দিতে চায়। ক. বাংলা সাহিত্যের কত আনা শহুরে সাহিত্য? |
----------- |
সৃজনশীল প্রশ্ন- ৮ |
---|
বাংলা সাহিত্যে রয়েছে এক বিশাল ভাণ্ডার। এক শ্রেণির সাহিত্যে ছন্দোবদ্ধ ভাষায় অতীত দিনের কাহিনী কিংবা পৌরাণিক কাহিনীর রস মধুর বর্ণনা পাওয়া যায়। আরেক শ্রেণির সাহিত্য জীবনের খণ্ডাশ নিয়ে গদ্যে রচিত হয়ে এক ভিন্নধর্মী রস ব্যঞ্জনার সৃষ্টি করে। উদ্ভবের দিক থেকেও উভয় শ্রেণির সাহিত্যে রয়েছে বিশাল ব্যবধান। ক. সাহিত্যের প্রধান ধারা কয়টি? |
----------- |
সৃজনশীল প্রশ্ন- ৯ |
---|
এনজিও কর্মী জলি চাকরির সুবাদে দেশের বিভিনড়ব প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেতে হয়। বিভিনড়ব শ্রেণি পেশার মানুষের সাথে কথা বলতে হয়। একদিন লক্ষ্য করলেন অক্ষর জ্ঞানহীন এক নারী অবলীলায় ছন্দোবদ্ধ কথা বলছেন। অজস্র ছড়া গান তিনি মুখে মুখে কথায় কথায় বানিয়েছেন। জলি সিদ্ধান্ত নেন কাজের ফাঁকে ফাঁকে তিনি পল্লির এসব সাহিত্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করবেন এবং এগুলোর শিল্পীদের আমাদের সাহিত্য আসরে নিয়ে আসবেন। ক. ‘ঠাকুরমার ঝুলি’ কে রচনা করেন? |
----------- |
সৃজনশীল প্রশ্ন- ১০ |
---|
রসুলপুর গ্রামের জমির উদ্দিন একজন অতি সাধারণ মানুষ। দোতারা হাতে গ্রামে গ্রামে গান গেয়ে বেড়ায়। সবাই মুগ্ধ হয়ে তার গান শোনে। এসব গানে কত প্রেম, কত সৌন্দর্য আর কত তত্ত্বজ্ঞান ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। এগুলো আমাদের অমূল্য রতড়ববিশেষ হলেও তা আজ বিলুপ্তির পথে। পল্লিসাহিত্যের এসব উপাদান সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণের দায়িত্ব আমাদের সকলের। ক. আজকাল বাংলা সাহিত্যের কত আনা শহুরে সাহিত্য? |
----------- |
সৃজনশীল প্রশ্ন- ১১ |
---|
মিসেস রহিমা একজন শিক্ষিত মা। তিনি মনে করেন ছেলেকে বাংলার গল্প শোনানোর চেয়ে বিদেশি সাহিত্যের গল্প শুনলেই বেশি উপকৃত হবে। ছেলেকে দেশি সংস্কৃতি থেকে দূরে রাখতে পারাতেই রহীমা বেগম বেশী গর্ববোধ করছেন। প্রকৃত অর্থে, এটা কোন গর্ব করার বিষয় নয়। বরং নিজ ঐতিহ্যের সঙ্গে এ ব্যবধান এক সময় অস্তিত্বের সঙ্কট সৃষ্টি করতে পারে। ক. ‘মৈমনসিংহ গীতিকা’ সম্পাদনা করেন কে? |
----------- |
সৃজনশীল প্রশ্ন- ১২ |
---|
করিম সাহেব আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত। তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা উংরেজি, হিন্দি গান ও সিনেমার প্রতি আকৃষ্ট। তার ধারণা পাশ্চাত্য সাহিত্য-সংস্কৃতির সাথে তাল মিলিয়ে চলতে না পারলে বেশি দূর আগানো যাবে না। অন্যদিকে তার বন্ধু সালাম সাহেব উচ্চ শিক্ষিত হওয়া সত্তেও দেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি হৃদয়ে লালন করেন। পল্লিগীতি, ভাটিয়ালি, ভাওয়াইয়া, লালনগীতি তাঁর প্রিয় গান। ব্যক্তিগত লাইব্রেরিতে মৈয়মনসিংহ গীতিকা, পুঁথি ও রূপকথার গল্পসহ বাংলা ভাষায় বিভিন্ন বই সংগ্রহ করেছেন। ক. প্রবাদ বাক্য কাকে বলে? |
----------- |
সৃজনশীল প্রশ্ন- ১৩ |
---|
সাহিত্যের এই শাখাটি আধুনিক কালের সৃষ্টি। এর বয়স চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ বছর হবে। এটি গদ্যে লিখিত। আকারে বেশি বড় নয়। এতে কোনো না কোনো কাহিনির বর্ণনা থাকবে, তবে তা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নয়। কাহিনির ভিতর থেকেই বেছে নেওয়া কোনো অংশ থাকে মাত্র। ক. নীলদর্পণ কোন ধরনের নাটকের শ্রেষ্ঠ উদাহরণ? |
----------- |
সৃজনশীল প্রশ্ন- ১৪ |
---|
i. যেমন বুনো ওল
ক. ‘Proletariat” সাহিত্য কী? |
----------- |
তথ্যসূত্র : |
---|
১. বাংলা সাহিত্য: নবম-দশম শ্রেণি, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, ঢাকা, ২০২৫। ২. আধুনিক বাংলা অভিধান: বাংলা একাডেমি, এপ্রিল, ২০১৮। ৩. ব্যবহারিক বাংলা অভিধান: বাংলা একাডেমি, ১৮তম, ২০১৫। |