‘নিরীহ বাঙালি’ প্রবন্ধের মূলপাঠ, শব্দার্থ, মূলভাব, বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও সৃজনশীল প্রশ্ন-উত্তর
![]() |
নিরীহ বাঙালি |
নিরীহ বাঙালি
রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন
আমরা দুর্বল নিরীহ বাঙালি। এই বাঙালি শব্দে কেমন সুমধুর তরল কোমল ভাব প্রকাশ হয়। আহা! এই অমিয়সিক্ত বাঙালি কোন্ বিধাতা গড়িয়াছিলেন? কুসুমের সৌকুমার্য, চন্দ্রের চন্দ্রিকা, মধুর মাধুরী, যুথিকার সৌরভ, সুপ্তির নীরবতা, ভূধরের অচলতা, নবনীর কোমলতা, সলিলের তরলতা- এক কথায় বিশ্বজগতের সমুদয় সৌন্দর্য এবং স্নিগ্ধতা লইয়া বাঙালি গঠিত হইয়াছে! আমাদের নামটি যেমন শ্রুতিমধুর তদ্রূপ আমাদের সমুদয় ক্রিয়াকলাপও সহজ ও সরল।
আমরা মূর্তিমতী কবিতা-যদি ভারতবর্ষকে ইংরেজি ধরনের একটি অট্টালিকা মনে করেন, তবে বঙ্গদেশ তাহার বৈঠকখানা (drawing room) এবং বাঙালি তাহাতে সাজসজ্জা (drawing room suit)! যদি ভারতবর্ষকে একটা সরোবর মনে করেন, তবে বাঙালি তাহাতে পদ্মিনী। যদি ভারতবর্ষকে একখানা উপন্যাস মনে করেন, তবে বাঙালি তাহার নায়িকা। ভারতের পুরুষ সমাজে বাঙালি পুরুষিকা! অতএব আমরা মূর্তিমান কাব্য।
আমাদের খাদ্যদ্রব্যগুলি-পুঁইশাকের ডাঁটা, সজিনা ও পুঁটি মৎস্যের ঝোল-অতিশয় সরস। আমাদের খাদ্যদ্রব্যগুলি-ঘৃত, দুগ্ধ, ছানা, নবনীত, ক্ষীর, সর, সন্দেশ ও রসগোল্লা-অতিশয় সুস্বাদু। আমাদের দেশের প্রধান ফল, আম ও কাঁঠাল-রসাল এবং মধুর। অতএব আমাদের খাদ্যসামগ্রী ত্রিগুণাত্মক-সরস, সুস্বাদু, মধুর।
খাদ্যের গুণ অনুসারে শরীরের পুষ্টি হয়। তাই সজিনা যেমন বীজবহুল, আমাদের দেশে তেমনই ভুঁড়িটি স্থূল। নবনীতে কোমলতা অধিক, তাই আমাদের স্বভাবের ভীরুতা অধিক। শারীরিক সৌন্দর্য সম্বন্ধে অধিক বলা নিষ্প্রয়োজন; এখন পোষাক পরিচ্ছদের কথা বলি।
আমাদের বর অঙ্গ যেমন তৈলসিক্ত নবনিগঠিত সুকোমল, পরিধেয়ও তদ্রূপ অতি সূক্ষ্ম শিমলার ধুতি ও চাদর। ইহাতে বায়ুসঞ্চালনের (ventilation এর) কোন বাধা বিঘ্ন হয় না! আমরা সময় সময় সভ্যতার অনুরোধে কোট শার্ট ব্যবহার করি বটে, কারণ পুরুষমানুষের সবই সহ্য হয়। কিন্তু আমাদের অর্ধাঙ্গী-হেমাঙ্গী, কৃষ্ণাঙ্গীগণ তদানুকরণে ইংরেজ ললনাদের নির্লজ্জ পরিচ্ছদ (শেমিজ জ্যাকেট) ব্যবহার করেন না। তাঁহারা অতিশয় সুকুমারী ললিতা লজ্জাবতী লতিকা, তাই অতি মসৃণ ও সূক্ষ্ম ‘হাওয়ার শাড়ি’ পরেন। বাঙালির সকল বস্তুই সুন্দর, স্বচ্ছ ও সহজলব্ধ।
বাঙালির গুণের কথা লিখিতে হইলে অনন্ত মসী, কাগজ ও অক্লান্ত লেখকের আবশ্যক। তবে সংক্ষেপে দুটি চারিটা গুণের বর্ণনা করি।
ধনবৃদ্ধির দুই উপায়, বাণিজ্য ও কৃষি। বাণিজ্য আমাদের প্রধান ব্যবসায়। কিন্তু তাই বলিয়া আমরা (আরব্যোপন্যাসের) সিন্দাবাদের ন্যায় বাণিজ্যপোত অনিশ্চিত ফললাভের আশায় অনন্ত অপার সাগরে ভাসাইয়া দিয়া নৈরাশ্যের ঝঞ্চাবাতে ওতপ্রোত হই না। আমরা ইহাকে (বাণিজ্য) সহজ ও স্বল্পায়াসসাধ্য করিয়া লইয়াছি। অর্থাৎ বাণিজ্য ব্যবসায়ে যে কঠিন পরিশ্রম আবশ্যক, তাহা বর্জন করিয়াছি। এই জন্য আমাদের দোকানে প্রয়োজনীয় জিনিস নাই, শুধু বিলাসদ্রব্য-নানাবিধ কেশতৈল ও নানাপ্রকার রোগবর্ধক ঔষধ এবং রাঙা পিত্তলের অলঙ্কার, নকল হীরার আংটি, বোতাম ইত্যাদি বিক্রয়ার্থ মজুদ আছে। ঈদৃশ ব্যবসায়ে কায়িক পরিশ্রম নাই। আমরা খাঁটি সোনা রূপা বা হিরা জওয়াহেরাৎ রাখি না, কারণ টাকার অভাব। বিশেষত আজি কালি কোন জিনিসটার নকল না হয়?
যখনই কেহ একটু যত্ন পরিশ্রম স্বীকার পূর্বক “দীর্ঘকেশী” তৈল প্রস্তুত করেন, অমনই আমরা তদনুকরণে “হ্রস্বকেশী” বাহির করি। "কুন্তলীনের" সঙ্গে "কেশলীন" বিক্রয় হয়। বাজারে “মস্তিষ্ক স্নিগ্ধকারী” ঔষধ আছে, ‘মস্তিষ্ক উষ্ণকারী’ দ্রব্যও আছে। এক কথায় বলি, যত প্রকারের নকল ও নিষ্প্রয়োজনীয় জিনিস হইতে পারে, সবই আছে। আমরা ধান্য তণ্ডুলের ব্যবসায় করি না, কারণ তাহাতে পরিশ্রম আবশ্যক।
আমাদের অন্যতম ব্যবসায়-পাস বিক্রয়। এই পাস বিক্রেতার নাম ‘বর’ এবং ক্রেতাকে ‘শ্বশুর’ বলে। এক একটি পাসের মূল্য কত জান? ‘অর্ধেক রাজত্ব ও এক রাজকুমারী’। এম.এ. পাশ অমূল্যরত্ন, ইহা যে সে ক্রেতার ক্রেয় নহে। নিতান্ত সস্তা দরে বিক্রয় হইলে, মূল্য-এক রাজকুমারী এবং সমুদয় রাজত্ব। আমরা অলস, তরলমতি, শ্রমকাতর, কোমলাঙ্গ বাঙালি কিনা তাই ভাবিয়া দেখিয়াছি, সশরীরে পরিশ্রম করিয়া মুদ্রালাভ করা অপেক্ষা (Old fool) শ্বশুরের যথাসর্বস্ব লুণ্ঠন করা সহজ।
এখন কৃষিকার্যের কথা বলি। কৃষি দ্বারা অন্নবৃদ্ধি হইতে পারে। কিন্তু আমরা ভাবিয়া দেখিয়াছি কৃষিবিভাগের কার্য (agriculture) করা অপেক্ষা মস্তিষ্ক উর্বর (brain culture) করা সহজ। অর্থাৎ কর্কশ উর্বর ভূমি কর্ষণ করিয়া ধান্য উৎপাদন করা অপেক্ষা মুখস্থ বিদ্যার জোরে অর্থ উৎপাদন করা সহজ। এবং কৃষিকার্যে পারদর্শিতা প্রদর্শন করা অপেক্ষা কেবল M.R.A.C পাশ করা সহজ। আইনচর্চা করা অপেক্ষা কৃষি বিষয়ে জ্ঞানচর্চা করা কঠিন। অথবা রৌদ্রের সময় ছত্র হস্তে কৃষিক্ষেত্র পরিদর্শনের জন্য কৃষি বিষয়ে জ্ঞানচর্চা অপেক্ষা টানাপাখার তলে আরাম কেদারায় বসিয়া দুর্ভিক্ষ সমাচার (Famine Report) পাঠ করা সহজ। তাই আমরা অন্নোৎপাদনের চেষ্টা না করিয়া অর্থ উৎপাদনে সচেষ্ট আছি। আমাদের অর্থের অভাব নাই, সুতরাং অন্নকষ্টও হইবে না। দরিদ্র হতভাগা সব অন্নাভাবে মরে মরুক, তাতে আমাদের কি?
আমরা আরও অনেক প্রকার সহজ কার্য নির্বাহ করিয়া থাকি। যথা:
(১) রাজ্য স্থাপন করা অপেক্ষা “রাজা” উপাধি লাভ সহজ।
(২) শিল্পকার্যে পারদর্শী হওয়া অপেক্ষা B.Sc ও D.Sc পাশ করা সহজ।
(৩) অল্পবিস্তর অর্থব্যয়ে দেশে কোন মহৎ কার্য দ্বারা খ্যাতি লাভ করা অপেক্ষা ‘খাঁ বাহাদুর’ বা ‘রায় বাহাদুর’ উপাধি লাভের জন্য অর্থ ব্যয় করা সহজ।
(৪) প্রতিবেশী দরিদ্রদের শোক দুঃখে ব্যথিত হওয়া অপেক্ষা বিদেশীয় বড়ো লোকদের মৃত্যুদুঃখে ‘শোক সভার’ সভ্য হওয়া সহজ।
(৫) দেশের দুর্ভিক্ষ নিবারণের জন্য পরিশ্রম করা অপেক্ষা আমেরিকার নিকট ভিক্ষা গ্রহণ করা সহজ।
(৬) স্বাস্থ্যরক্ষায় যত্নবান হওয়া অপেক্ষা স্বাস্থ্য নষ্ট করিয়া ঔষধ ও ডাক্তারের হস্তে জীবন সমর্পণ করা সহজ।
(৭) স্বাস্থ্যের উন্নতি দ্বারা মুখশ্রীর প্রফুল্লতা ও সৌন্দর্য বর্ধন করা (অর্থাৎ healthy and cheerful হওয়া) অপেক্ষা (শুদ্ধগণ্ডে!) কালিডর, মিল্ক অভ রোজ ও ভিনোলিয়া পাউডার (Kalydore, milk of rose and Vinolia powder) মাখিয়া সুন্দর হইতে চেষ্টা করা সহজ।
(৮) কাহারও নিকট প্রহারলাভ করিয়া তৎক্ষণাৎ বাহুবলে প্রতিশোধ লওয়া অপেক্ষা মানহানির মোকদ্দমা করা সহজ ইত্যাদি।
তারপর আমরা মূর্তিমান আলস্য-আমাদের গৃহিণীগণ এ বিষয়ে অগ্রণী। কেহ কেহ শ্রীমতীদিগকে স্বহস্তে রন্ধন করিতে অনুরোধ করিয়া থাকেন। কিন্তু বলি, আমরা যদি রৌদ্রতাপ সহ্য করিতে না পারি, তবে আমাদের অর্ধাঙ্গীগণ কিরূপে অগ্নির উত্তাপ সহিবেন? আমরা কোমলাঙ্গ-তাঁহারা কোমলাঙ্গী: আমরা পাঠক, তাঁহারা পাঠিকা; আমরা লেখক, তাঁহারা লেখিকা। অতএব আমরা পাচক না হইলে তাঁহারা পাচিকা হইবেন কেন? সুতরাং যে লক্ষ্মীছাড়া দিব্যাঙ্গনাদিগকে রন্ধন করিতে বলে, তাহার ত্রিবিধ দণ্ড হওয়া উচিত। যথা তাহাকে (১) তুষানলে দগ্ধ কর, অতঃপর (২) জবেহ কর, তারপর (৩) ফাঁসি দাও!
আমরা সকলেই কবি-আমাদের কাব্যে বীররস অপেক্ষা করুণরস বেশি। আমাদের এখানে লেখক অপেক্ষা লেখিকার সংখ্যা বেশি। তাই কবিতার স্রোতে বিনা কারণে অশ্রুপ্রবাহ বেশি বহিয়া থাকে। আমরা পদ্য লিখিতে বসিলে কোন্ বিষয়টা বাদ দিই? ‘ভগ্ন শূর্প’, ‘জীর্ণ কাঁথা’, ‘পুরাতন চটিজুতা’ -কিছুই পরিতাজ্য নহে। আমরা আবার কত নতুন শব্দের সৃষ্টি করিয়াছি; যথা-‘অতি শুভ্রনীলাম্বর’, “সাশ্রুসজলনয়ন” ইত্যাদি। শ্রীমতীদের করুণ বিলাপ-প্রলাপপূর্ণ পদ্যের ‘অশ্রুজলের’ বন্যায় বঙ্গদেশ ধীরে ধীরে ডুবিয়া যাইতেছে। সুতরাং দেখিতেছেন, আমরা সকলেই কবি।
আর আত্মপ্রশংসা কত করিব? এখন উপসংহার করি।
উৎস নির্দেশ : |
---|
-- |
শব্দার্থ ও টীকা : |
---|
➠ সৌকুমার্য- সৌন্দর্য। ➠ ঝঞ্ঝাবাতে- ঝঞ্ঝার বাতাসে। ➠ কুন্তলীন, কেশলীন- লেখকের আমলে জনপ্রিয় চুলে দেয়ার তেলের নাম। ➠ হাওয়ার শাড়ি- সূক্ষ্ম সুতোর শাড়ি। পাতলা শাড়ি। ➠ তণ্ডুল-চাল। ➠ কালিডর, মিল্ক অভ রোজ, ভিনোলিয়া পাউডার- সৌন্দর্যবর্ধক সামগ্রী। ➠ দিব্যাঙ্গনা- স্বর্গের রূপসী। হুরপরি। ➠ শুভ্রনীলাম্বর- পরিষ্কার নীল আকাশ। ➠ সাশ্রুসজলনয়ন- জলভরা চোখ। ➠ আত্মপ্রশংসা- নিজের প্রশংসা। |
কর্ম-অনুশীলন : |
---|
১. ‘নিরীহ বাঙালি’ পাঠটিতে (যে সময়ের) বাঙালির যেসব বৈশিষ্ট্যের কথা বলা হয়েছে তার একটি তালিকা তৈরি করো। |
পাঠ-পরিচিতি : |
---|
‘নিরীহ বাঙালি’ প্রবন্ধটিতে রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন বাঙালি নারী পুরুষের প্রাত্যহিক জীবনাচরণের বিভিন্ন দিক হাস্য-রসাত্মকভাবে বর্ণনা করেছেন। বাঙালি পুরুষগণের অলসপ্রিয়তা, শারীরিক পরিশ্রমে অনীহা, বাগাড়ম্বর আচরণ সম্পর্কে আলোচনা যেমন রয়েছে, তেমনি নারীদের অহেতুক রূপচর্চা, পরচর্চা এবং নিজেদের অবলা প্রমাণ করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টার প্রতি আলোচনাও রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে ব্যঙ্গাত্মক এ প্রবন্ধের মাধ্যমে রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন বাঙালি পুরুষ ও নারীকে সত্যিকার সামাজিক, পারিবারিক ও জাতীয় কাজে প্রণোদিত করতে চেয়েছেন। প্রবন্ধটি আমাদের ইতিবাচক ও গুরুত্বপূর্ণ কাজের প্রতি মনোযোগী হবার শিক্ষা দেয়। |
লেখক পরিচিতি : |
---|
রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন ৯ই ডিসেম্বর ১৮৮০ সালে রংপুর জেলার পায়রাবন্দ
গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা জহীরুদ্দিন মোহাম্মদ আবু আলী হায়দার সাবের সম্ভ্রান্ত ভূস্বামী ছিলেন। ছোটবেলায় বড় বোন করিমুন্নেসা বেগম রোকেয়াকে বাংলা শিক্ষায় সাহায্য করেন। পরে তিনি বড় ভাই ইব্রাহিম সাবেরের তত্ত্বাবধানে ইংরেজি শেখেন। বিহারের অন্তর্গত ভাগলপুরের সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে বিবাহের পর তিনি বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন নামে পরিচিত হন। স্বামীর প্রেরণায় তিনি সাহিত্যচর্চা শুরু করেন। সমকালীন মুসলমান সমাজে প্রচলিত কুসংস্কারের বিরুদ্ধে তিনি লেখনী ধারণ করেন। মুসলিম নারী জাগরণে তিনি অগ্রণী ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল ও আনজুমান-ই-খাওয়াতীন-ই-ইসলাম প্রতিষ্ঠা করে তিনি মুসলমান নারীদের শিক্ষা ও সংস্কৃতির পথে অগ্রসর হতে সাহায্য করেন। পদ্মরাগ, অবরোধবাসিনী, মতিচুর, সুলতানার স্বপ্ন ইত্যাদি তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ। ৯ই ডিসেম্বর ১৯৩২ সালে রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন মৃত্যুবরণ করেন।। |
বহুনির্বাচনি প্রশ্ন : |
---|
প্রশ্ন থেকে
অভিনন্দন!
|
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন : |
---|
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন : |
---|
সৃজনশীল প্রশ্ন- ১ |
---|
নন্দ বাড়ির হত না বাহির, কোথা কী ঘটে কি জানি, চড়িত না গাড়ি, কি জানি কখন উল্টায় গাড়িখানি। নৌকা ফি-সন ডুবিছে ভীষণ, রেলে কলিশন হয়, হাঁটিলে সর্প, কুকুর আর গাড়ি-চাপা পড়া ভয়। তাই শুয়ে শুয়ে কষ্টে বাঁচিয়া রহিল নন্দলাল। সকলে বলিল, ‘ভ্যালা রে নন্দ, বেঁচে থাক চিরকাল’।
ক. কোন জাতীয় পোশাককে ইংরেজ ললনাদের নির্লজ্জ পরিচ্ছদ বলা হয়েছে? |
----------- |
সৃজনশীল প্রশ্ন- ২ |
---|
দেখা হলেই মিস্ট অতি
ক. মুসলিম নারীদের শিক্ষা ও সংস্কৃতির উন্নয়নে রোকেয়া কী প্রতিষ্ঠা
করেছিলেন? |
ক. মুসলিম নারীদের শিক্ষা ও সংস্কৃতির উন্নয়নে বেগম রোকেয়া 'আঞ্জুমানে
খাওয়াতিনে ইসলাম' প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
গ. আলোচ্য অনুচ্ছেদে ‘নিরীহ বাঙালি’ প্রবন্ধে ফুটে ওঠে বাঙালির
আলস্যে-বুদ্ধিহীনতা অথচ সাজসজ্জায় আড়ম্বর এবং অতি বিনয়ের দিকটি উদ্দীপকে
ধরা পড়েছে।
ঘ. প্রবন্ধ এবং উদ্দীপক উভয়ক্ষেত্রেই বাঙালির প্রতি কটাক্ষের বাণ নিক্ষেপ
করা হয়েছে- উক্তিটি যৌক্তিক। |
সৃজনশীল প্রশ্ন- ৩ |
---|
ঐ মহিলার গয়নাগুলো যেমন ভারী, তেমনিতর দামি,
ক. কার সমুদয় সৌন্দর্য ও স্নিগ্ধতা নিয়ে বাঙালি গঠিত হয়েছে? |
ক. বিশ্বজগতের সমুদয় সৌন্দর্য ও স্নিগ্ধতা নিয়ে বাঙালি গঠিত হয়েছে।
‘নিরীহ বাঙালি’ প্রবন্ধ অবলম্বণে বাঙালি নারীদের ভূষণ বিলাসের দিকটি
ব্যাখ্যা করো। |
সৃজনশীল প্রশ্ন- ৪ |
---|
বিশ্বের যা- কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর। বিশ্বে যা কিছু এল পাপ তাপ বেদনা অশ্রুবারি অর্ধেক তার আনিয়াছে নর, অর্ধেক তার নারী জগতের যত বড় বড় জয় বড় বড় অভিযান মাতা, ভগ্নী ও বধূদের ত্যাগে হইয়াছে মহীয়ান।
ক. আমাদের কাব্যে কোন রস বেশি? |
----------- |
সৃজনশীল প্রশ্ন- ৫ |
---|
কাহারো বাড়িতে গেলে দেখিবে চালের উপর খড় নাই, ঘরখানার চারদিকে আবর্জনাময়, বসিবার একটু স্থান নাই, মাথার উপর মাকড়শার জাল ঝুলিতেছে- এইরূপ হীন অবস্থা। কিন্তু জল খাবারের সময় দেখিবে, অতি উৎকৃষ্ট পরোটা, কোরমা, কাবাব উপস্থিত। আমরা কেবলই রসনা-পূজায় সময় কাটাই। আধ্যাত্মিক জীবন আমাদের নাই বলিলেও অত্যুক্তি হয় না। রমণী রাঁধুনীরূপে জন্মগ্রহণ করে এবং মরণে বাবুর্চি জীবনলীলা সাঙ্গ করে। আমাদের সুখের চরম সীমা সচরাচর উপাদেয় খাদ্য রাঁধিতে শিক্ষা করা ও বিবিধ অলঙ্কার ব্যবহার করা পর্যন্ত। ক. আমাদের কী অতিশয় সরস? |
----------- |
সৃজনশীল প্রশ্ন- ৬ |
---|
পারীর পুরুষেরা অসম্ভব রকমের বাচাল, ভোজনপটু আর অলস। কথার আসর বসলে শেষই হতে চায় না। খাবারের জন্য বাজার ঘুরে ঘুরে কেনাকাটা করে। শারীরিক পরিশ্রমের ভয়ে কম পরিশ্রমের বা বিনা পরিশ্রমের ব্যবসা বেছে নেয়। বিদ্যা শিক্ষার ব্যাপারে পারিবারিক ঐতিহ্য বজায় রেখে বিদ্যালয়ে গমন করে খ্যাতি লাভের আশায়। বংশের মান রাখতে স্ত্রীর ওপর কর্তৃত্ব চালাতে ভুল করে না। এসব কারণে পারীর পুরুষেরা জগতে স্বতন্ত্র হয়ে আছে। ক. যে পুরুষ স্ত্রীকে রন্ধন করতে বলে বেগম রোকেয়ার মতে, তার ‘২য় দণ্ড’ কী হওয়া উচিত? |
----------- |
সৃজনশীল প্রশ্ন- ৭ |
---|
প্রদীপ একজন দোকানদার। তার দোকানে মানুষের প্রয়োজনীয় জিনিসের মধ্যে শুধু নানা প্রকারের বলবর্ধক ওষুধ এবং রাঙা পিতলের অলংকার, নকল হীরার আংটি, বোতাম ইত্যাদি বিক্রয়ের জন্য মজুদ আছে। এই ব্যবসায়ে তার খুব একটা পরিশ্রম করতে হয় না। সে দোকানে আসল থেকে নকল জিনিসই বেশি রাখে। ক. বেগম রোকেয়া কার তত্ত্বাবধানে ইংরেজি শেখেন? |
----------- |
সৃজনশীল প্রশ্ন- ৮ |
---|
অন্নপায়ী বঙ্গবাসী
ক. বিশ্ব জাতের কী দ্বারা বাঙালি গঠিত হয়েছে? |
----------- |
সৃজনশীল প্রশ্ন- ৯ |
---|
স্তবক-১: পদে পদে ছোট ছোট নিষেধের ডোরে বেঁধে বেঁধে রাখিয়ো না ভালো ছেলে করে।
ক. কুন্তলীনের সঙ্গে কী বিক্রয় হয়? |
----------- |
সৃজনশীল প্রশ্ন- ১০ |
---|
নন্দ একদা হঠাৎ একটা কাগজ করিল বাহির
ক. ‘শুভ্রনীলাম্বর’ অর্থ কী? |
----------- |
সৃজনশীল প্রশ্ন- ১১ |
---|
আত্মোন্নতির জন্য পরিশ্রম এবং উদ্যম অপরিহার্য। সততার ভেতর দিয়ে যেমন সত্তার মহিমা উদ্ভাসিত হয়, কাজের মাধ্যমেও তেমনি সমাজে স্বনির্ভর মানুষের অফুরন্ত শক্তির প্রকাশ ঘটে। দুঃখ হয় তখন, যখন দেখি, উদীয়মান যুবকের মধ্যে সম্ভাবনাময় শক্তি থাকা সত্ত্বেও তারা পরানুগ্রহের মোহে দুয়ারে দুয়ারে চাকরির জন্য মাথা কুটে মরছে।
ক. কৃষিকাজে পারদর্শিতা প্রদর্শন অপেক্ষা কী পাস করা সহজ? |
----------- |
সৃজনশীল প্রশ্ন- ১২ |
---|
কবির সাহেব প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ করে একটি ব্যবসা দাঁড় করালেন। তার দোকানে নিত্য প্রয়োজনীয় সব কিছুই পাওয়া যায়। কোনো ভেজাল সামগ্রী তিনি দোকানে রাখেন না। তাঁর ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য প্রচুর পরিশ্রম করেন। চারদিকে তাঁর সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। তার এ ধরনের কাজকে সকলেই স্বাগত জানায়। ক. একটি পাসের মূল্য কত? |
----------- |
সৃজনশীল প্রশ্ন- ১৩ |
---|
------------- |
----------- |
সৃজনশীল প্রশ্ন- ১৪ |
---|
------------- |
----------- |
তথ্যসূত্র : |
---|
১. বাংলা সাহিত্য: নবম-দশম শ্রেণি, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, ঢাকা, ২০২৫। ২. আধুনিক বাংলা অভিধান: বাংলা একাডেমি, এপ্রিল, ২০১৮। ৩. ব্যবহারিক বাংলা অভিধান: বাংলা একাডেমি, ১৮তম, ২০১৫। |