পরিচ্ছেদ- ২৮: বিভক্তি

বিভক্তি
বিভক্তি

বিভক্তি

বাক্যের মধ্যে অন্য শব্দের সাথে সম্পর্ক বোঝাতে বিশেষ্য ও সর্বনামের সঙ্গে অর্থহীন কিছু লগ্নক যুক্ত হয়, সেগুলোকে বিভক্তি বলে। যেমন:
এ, তে, য়, য়ে, কে, রে, র, এর, -য়ের ইত্যাদি।

লোকে কি না বলে!
এই বাক্যে ‘লোক’ শব্দের সঙ্গে জুড়ে আছে ‘-এ’ বিভক্তি।

সে ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে গরু চরাতে গেছে।
এই বাক্যে ‘ছেলে’ শব্দের সঙ্গে জুড়ে আছে ‘-কে’ বিভক্তি।

বাড়ির পুকুরের পাড়ে বড়ো ভাইয়ের কলাবাগান।
এই বাক্যে ‘বাড়ি’, ‘পুকুর’ এবং ‘ভাই’ শব্দের সঙ্গে জুড়ে আছে ‘-র’, ‘-এর’ এবং ‘-য়ের’ বিভক্তি।

বিভক্তিগুলোকে তিন ভাগে বিভক্ত করে দেখানো যায়।

ক. -এ, -তে, -য়,-য়ে বিভক্তি

সাধারণত ক্রিয়ার স্থান, কাল, ভাব বোঝাতে -এ, তে, -য়, য়ে ইত্যাদি বিভক্তির ব্যবহার হয়। কখনো কখনো বাক্যের কর্তার সঙ্গেও এসব বিভক্তি বসে।

যেসব শব্দের শেষে কারচিহ্ন নেই, সেসব শব্দের সঙ্গে-এ বিভক্তি যুক্ত হয়। যেমন:
সকালে, দিনাজপুরে, ই-মেইলে, কম্পিউটারে, ছাগলে, তিলে ইত্যাদি।

শব্দের শেষে ই-কার ও উ-কার থাকলে -তে বিভক্তি হয়। যেমন:
হাতিতে, রাত্রিতে, মধুতে, রামুতে ইত্যাদি।

আ-কারান্ত শব্দের শেষেয় বিভক্তি হয়। যেমন:
ঘোড়ায়, সন্ধ্যায়, ঢাকায় ইত্যাদি।

শব্দের শেষে দ্বিস্বর থাকলে-য়ে বিভক্তি হয়। যেমন:
ছইয়ে, ভাইয়ে, বউয়ে।

ই-কারান্ত শব্দের শেষেওয়ে বিভক্তি দেখা যায়। যেমন:
ঝিয়ে, ঘিয়ে।

খ. -কে, -রে বিভক্তি

বাক্যে গৌণকর্মের সঙ্গে সাধারণত কে এবং-রে বিভক্তি বসে। ক্রিয়াকে ‘কাকে’ প্রশ্ন করলে যে শব্দ পাওয়া যায় তার সঙ্গে এই বিভক্তি যুক্ত হয়। যেমন:
শিশুকে, দরিদ্রকে, আমাকে, আমারে ইত্যাদি।

গ. -র, -এর, -য়ের বিভক্তি

বাক্যের মধ্যে পরবর্তী শব্দের সঙ্গে সম্বন্ধ বোঝাতে পূর্ববর্তী শব্দের সঙ্গের, -এর এবং-য়ের বিভক্তি যুক্ত হয়।

সাধারণত আ-কারান্ত, ই/ঈ-কারান্ত ও উ/ঊ-কারান্ত শব্দের শেষের বিভক্তি বসে। যেমন:
রাজার, প্রজার, হাতির, বুদ্ধিজীবীর, তনুর, বধূর।

যেসব শব্দের শেষে কারচিহ্ন নেই, সেসব শব্দের শেষে -এর বিভক্তি হয়। যেমন:
বলের, শব্দের, নজরুলের, সাতাশের ইত্যাদি।

শব্দের শেষে দ্বিস্বর থাকলে-য়ের বিভক্তি হয়। যেমন:
ভাইয়ের, বইয়ের, লাউয়ের, মৌয়ের ইত্যাদি।

বহুনির্বাচনি প্রশ্ন :

প্রশ্ন থেকে

অভিনন্দন!
আপনি পেয়েছেন -এর মধ্যে!
যা


তথ্যসূত্র :
১. বাংলা ব্যাকরণ ও নির্মিতি: নবম-দশম শ্রেণি, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, ঢাকা, ২০২৫।
২. প্রমিত বাংলা ভাষার ব্যাকরণ: বাংলা একাডেমি, প্রথম খণ্ড, ঢাকা, ২০১২।
৩. প্রমিত বাংলা ব্যবহারিক ব্যাকরণ: বাংলা একাডেমি, ঢাকা, ২০১৬।
৪. ভাষা শিক্ষা: দি অ্যাটলাস পাবলিশিং হাউস, ঢাকা, অক্টোবর ২০২১-২২।
৫. আধুনিক বাংলা অভিধান: বাংলা একাডেমি, ঢাকা, এপ্রিল, ২০১৮।
৬. ব্যবহারিক বাংলা অভিধান: বাংলা একাডেমি, ঢাকা, ১৮তম, ২০১৫।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url